আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গত ২০ মার্চ বিশ্বের সুখী দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন সমাধান নেটওয়ার্ক। টানা ষষ্ঠবারের মতো এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ফিনল্যান্ড। তবে দেশটির নাগরিকরা বলছে এই র্যাঙ্কিং আরও জটিল বাস্তবতার দিকে নির্দেশ করে।
দেশটির কোকোলা শহরে বসবাসকারী নিনা হ্যানসেন নামে এক স্কুল শিক্ষিকা বলেন, আমরা যে আসলে অনেক সুখী তা বলতে চাই না। কেননা এই ‘সুখী’ শব্দটা নিয়ে আমি কিছুটা সন্দিহান রয়েছে।
ফিনল্যান্ডের মানুষরা আসলে কি কারণে এত সুখী সে বিষয়ে জানতে হ্যানসেনসহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলা হয়। এই তালিকায় রয়েছে- জিম্বাবুয়ের অভিবাসী, বেহালাবাদক, প্রাক্তন অলিম্পিয়ান এবং অবসরপ্রাপ্ত খামারি।
এ বিষয়ে ইস্টার্ন ফিনল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আর্টো ও. সালোনেন বলেন, ফিনরা টেকসই জীবন যাপনের মাধ্যমে সন্তুষ্টি অর্জন করেছে এবং মৌলিক চাহিদাগুলো সনাক্ত ও পূরণ করতে সক্ষম হওয়ায় আর্থিক সাফল্য উপলব্ধি করছে।
ফিনিশ ডিজাইন শপের সিইও টিমু কিস্কি বলেন, ‘সুখ’ – কখনও কখনও এটি একটি হালকা শব্দ এবং এটি ব্যবহার করা হয় শুধু মাত্র হাসি মাখা মুখের জন্য। কিন্তু আমি মনে করি ‘সুখ’ আরও মৌলিক বা বিশাল অর্থে কিছু বুঝায়।
সাধারণত প্রতিবছর ২০ মার্চ সুখী দিবসের প্রাক্কালে সুখী দেশের তালিকা প্রকাশ করে জাতিসংঘ। এবারের তালিকায় ১৩৭টি দেশের মধ্যে টানা ষষ্ঠবারের মতো শীর্ষে ফিনল্যান্ড। সুখী দেশের তালিকায় ফিনল্যান্ডের পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ডেনমার্ক ও আইসল্যান্ড। চতুর্থ ইসরায়েল ও পঞ্চম নেদারল্যান্ডস। সেরা ১০টি সুখী দেশের মধ্যে এরপর রয়েছে সুইডেন (ষষ্ঠ), নরওয়ে (সপ্তম), সুইজারল্যান্ড (অষ্টম), লুক্সেমবার্গ (নবম) ও নিউজিল্যান্ড (দশম)।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে নেপালের অবস্থান ৭৮। পাকিস্তান ১০৮, শ্রীলঙ্কা ১১২, ভারত ১২৬তম অবস্থানে রয়েছে। আর বাংলাদেশের অবস্থান ১১৮তম।
সুখী দেশের তালিকা করার ক্ষেত্রে মানুষের সুখের নিজস্ব মূল্যায়ন, সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে শূন্য থেকে ১০ সূচকে নম্বর পরিমাপ করা হয়। পাশাপাশি প্রতিটি দেশের মানুষের ব্যক্তিগত সুস্থতার অনুভূতি, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, জিডিপি ও দুর্নীতির মাত্রা বিবেচনায় নেওয়া হয়।
২০২২ সালের সুখী দেশের তালিকা করতে গিয়ে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে করোনা মহামারিকে। করোনা সারা বিশ্বকে এক ভয়াবহ অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কোভিড ১৯ মানুষের ভালো থাকার খরচ বাড়িয়ে দিয়েছে সেই সঙ্গে বেড়েছে বেকারত্ব। এর প্রভাব পড়েছে সূচকেও।
এ ছাড়া করোনা মহামারির ধাক্কা সামলাতে না সামলাতে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যুদ্ধ সারা বিশ্বকে এক ভয়াবহ সমস্যার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। বিশ্বজুড়ে দেখা দিয়েছে বেকারত্ব ও মূল্যস্ফীতি। দেশে দেশে বেড়েছে খাবার-জ্বালানিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম। এবারের সুখের সূচকে ইউক্রেন যুদ্ধেরও প্রতিফলন দেখা গেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।