আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী সামরিক জোট নর্থ অ্যাটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন-ন্যাটো। তুরস্ক এ জোটের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। সকল সদস্যের অনুমোদন ছাড়া, এ জোটে নতুন সদস্যপদ লাভে রয়েছে বাধা। সেই সুযোগ নিয়েই ফিনল্যান্ড ও সুইডেন ন্যাটো সদস্যপদ পেতে আবেদন করলে তুরস্ক এর বিরোধিতা করবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েব এরদোয়ান।
তাকে রাজি করাতে এই দেশ দুটির আঙ্কারায় প্রতিনিধি পাঠানোর কোনো প্রয়োজন নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।
গত বুধবার (১৯ মে) তিনি নর্ডিক দেশ দুটিকে ন্যাটোতে যোগদানের বেশকিছু শর্তও বেঁধে দিয়েছেন। ফলে তিনি তাদের ‘ব্ল্যাকমেইল’ করছেন এমন অভিযোগ উঠেছে।
এরদোয়ানের এই বিরোধিতার রয়েছে বেশকিছু কারণ। গত সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে যা কোনো প্রকার রাখঢাক না করেই তুলে ধরেন তুর্কি রাষ্ট্রনায়ক। এসময় তিনি তুরস্কের বিচ্ছিন্নতাবাদী কুর্দি বিদ্রোহী গোষ্ঠী- পিকেকে’র প্রতি ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের সমর্থন প্রত্যাহারের শর্ত দেন। ২০১৯ সালের অক্টোবরে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে তুরস্কের সামরিক অভিযানের প্রেক্ষিতে দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞাও দেয় নর্ডিক দেশদুটি। এই নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেওয়ার দাবি করেছেন এরদোয়ান।
তুরস্কের বিরোধীতা ন্যাটোতে ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের যোগদানের বিষয়টিকে দীর্ঘ করে তুলবে নিঃসন্দেহে। তবে অভ্যন্তরীণ সংকট থেকে এরদোয়ান দেশবাসীর দৃষ্টি এরমাধ্যমে অন্য দিকে ফেরাতে চাইছেন এমন অভিযোগও রয়েছে।
তুরস্কে বর্তমানে চলছে রেকর্ড ৬৬.৯ শতাংশের মতো উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি। আগামী গ্রীষ্মেই আবার নির্বাচন। তার আগেই জাতীয়তাবাদের জোয়ার হয়তো সৃষ্টি করে ভোটব্যাংক নিজের পক্ষে টানতে চাইছেন এরদোয়ান। তবে তাই বলে তার করা অভিযোগগুলি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনও নয়।
গত সোমবার তুরস্কের বিচার মন্ত্রণালয় ফিনল্যান্ড থেকে ৬ জন এবং সুইডেন থেকে ১১ জন পিকেকে সদস্যকে প্রত্যার্পণের দাবি জানায়। একইসঙ্গে, ২০১৬ সালে এরদোয়ান বিরোধী অভ্যুত্থানে মদতদাতা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লাহ গুলেনের অনুসারীদেরও ফেরত পাঠাতে বলেছে দেশদুটিকে। এদের মধ্যে ১২ জনকে ফিনল্যান্ড থেকে এবং ২১ জনকে সুইডেন থেকে ফেরত চাওয়া হয়েছে।
নর্ডিক দেশ দুটির কূটনীতিকরা বলেছেন, ২০১৭ সালেই এসব ব্যক্তির নামের তালিকা দেয় তুরস্ক। এরপর তাদের ফেরত পাঠাতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আঙ্কারা কোনো লবিং করেনি।
তুরস্কের গণমাধ্যম আরও জানায়, সুইডেন সন্ত্রাসীদের মদত দিচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে পিকেকে’র সিরিয় শাঁখার কিছু সদস্যের সাথে স্টকহোমে সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ওলাম পাম ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারের একটি বৈঠকের কথা উল্লেখ করা হয়।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।