জুমবাংলা ডেস্ক : কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)র লালন শাহ হলে সদ্য আগত কয়েকজন নবীন শিক্ষার্থীর ওপর র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই আবাসিক হলের সিনিয়র নয়জন ছাত্রের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী তারেক নামে এক নবীন শিক্ষার্থী মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে বাদী হয়ে মামলা করেন ইবি থানায়।
এ মামলার এজাহারনামীয় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেছে ইবি থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৭টার দিকে কুষ্টিয়া অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করার পর আদালত শুনানি শেষে পাঁচ শিক্ষার্থীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এ মামলায় অভিযুক্তরা হলেন– ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সাব্বির হোসেন, লিমন হোসেন, শেহান শরীফ, কান্ত বড়ুয়া, শফিউল্লাহ, তরিকুল, মুকুল, জিহাদ এবং ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সঞ্চয় বড়ুয়া। অভিযুক্ত সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে সাব্বির হোসেন, শেহান শরীফ, লিমন হোসেন, কান্ত বড়ুয়া ও সঞ্চয় বড়ুয়াকে আজ সন্ধ্যায় ইবি ক্যাম্পাস থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ইবি হলে আবারও র্যাগিংয়ের মতো নিকৃষ্ট ঘটনার তদন্তে লালন শাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আকতার হোসেনকে প্রধান ও সহকারী রেজিস্ট্রার জিল্লুর রহমানকে সদস্য সচিব করে গঠিত চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে ইবি কর্তৃপক্ষ।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. ফখরুল ইসলাম ও হলের আবাসিক শিক্ষক রসুল করিম। এই কমিটিকে আগামী রোববারের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, অভিযুক্তরা কয়েকদিন ধরে বিভিন্নস্থানে বিভিন্নভাবে তাদের র্যাগিং করে আসছিলেন। তারা ভুক্তভোগীদের অশোভন অঙ্গভঙ্গি, বিভিন্নভাবে হুমকিসহ নানাভাবে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করেন।
ভুক্তভোগী তারেক হোসাইন বলেন, ‘আমরা ক্যাম্পাসে এসেছি মাত্র ১৭ দিন। তারা আমাদের ১৭ দিনে কী পরিমাণ মানসিক নির্যাতন করেছেন ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। আমরা এসবের সুষ্ঠু বিচার চাই। ’
আরেক ভুক্তভোগী ছাত্র রাকিব বলেন, ‘আমাদের ওপর অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা তাদের শাস্তির দাবি জানাই। ’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, র্যাগিংয়ের ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে, তবে মামলার বিষয়টা আলাদা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ ফরিদ উদ্দীন বলেন, সোমবার গভীর রাতে র্যাগিংয়ের ঘটনায় জড়িত পাঁচ ছাত্রকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে ইবি প্রশাসন।
ভুক্তভোগীদের একজন বাদী হয়ে এ বিষয়ে মামলা করেছেন। আজ সন্ধ্যায় এ মামলার এজাহারনামীয় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত তাদের জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
উল্লেখ্য, সোমবার মধ্যরাতে লালন শাহ হলের ৩৩০ নম্বর কক্ষে (গণরুম) ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২৩-২৪ বর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন আমির হামজা, শামীম রেজা, রাকিবুল হাসান, আবু সাইম। চুপচাপ থাকায় ভুক্তভোগীদের একজনকে পাঁচ রকমের হাসি দিতে বলা হয়, অপর একজনকে সিনিয়র এক ভাইকে কল দিয়ে বাজে ভাষায় কথা বলতে বলা হয় এবং আরেকজনকে নাচতে বলেন অভিযুক্তরা।
এছাড়াও, গত ১৬ নভেম্বর রাতে ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী সাদী অ্যান্ড হাদী ছাত্রাবাসে রাত আড়াইটা পর্যন্ত ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের পর্নো তারকাদের নাম জিজ্ঞাসা ও তাদের রোল প্লে করতে বলা, অশ্লীল কবিতা পাঠ করানো এবং গালিগালাজ করেন অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।