লাইফস্টাইল ডেস্ক : ‘আপনার হৃদয়ের যত্ন নিন’–এই কথাটি আমরা বলতে শুনলেও ‘আপনার কিডনির যত্ন নিন’–এটি শোনা যায় না। মানব শরীরের এই দুই আশ্চর্যজনক অঙ্গের গুরুত্ব প্রায়ই উপেক্ষা করা হয়। এগুলো শরীরের পাওয়ার হাউস, যা আপনার রক্তে বিষাক্ত পদার্থ এবং অতিরিক্ত তরল ফিল্টার করে আপনার পুরো শরীরকে সুস্থ রাখে। তারা হরমোন তৈরি করে যা আপনার হাড়কে শক্তিশালী রাখে এবং আপনার রক্ত সুস্থ রাখে। যদি কিডনি তার কাজে ব্যর্থ হয় সে ক্ষেত্রে আপনার শরীরের ক্ষতিকারক বর্জ্যগুলো শরীরের সিস্টেমকে ব্যাহত করে; আর এটি অন্য অঙ্গগুলোকে মৃত্যুর দিকে পরিচালিত করবে।
কিডনির ক্ষতি প্রায়ই অপরিবর্তনীয় হয়, তাই যারা তাদের কিডনির যত্ন নেন না তারা উল্লেখযোগ্য স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারে। এর ফলে ডায়ালাইসিস এমনকি কিডনি প্রতিস্থাপনও করা লাগতে পারে, বলেছেন পাইডমন্টের নিবন্ধিত ডায়েটিশিয়ান স্যালি ব্রোজেক।
তাই আমাদের জীবনযাত্রার চরম পরিবর্তনগুলো এড়াতে আমাদের নিজেদের প্রতি যত্নশীল হতে হবে। আপনার শরীরের জন্য ক্ষতিকারক খাদ্য কিংবা পানীয় প্রত্যাহিক রুটিন থেকে বাদ দেয়া উচিত। চলুন জেনে নিই কিডনির যত্নে কোন কোন খাবার বাদ দেবেন–
পিঠ ব্যথার কারণসমূহ
লবণ
বেশি পরিমাণ সোডিয়াম কিডনির জন্য ক্ষতিকর। লবণে প্রচুর সোডিয়াম থাকে। এ কারণে বেশি লবণ খাওয়া উচিত নয়। দীর্ঘদিন ধরে লবণ খাওয়ার ফলে উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি হয়, এতে কিডনি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সাধারণত ডায়েটে প্রতিদিন প্রায় ৩৩০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম থাকে বলে অনুমান করা হয়েছে, যা স্বাস্থ্যকর প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দৈনিক সর্বাধিক ২৩০০ মিলিগ্রাম (প্রায় এক চা চামচ লবণ) থেকে অনেক বেশি।
সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন অনুসারে, ৭৫ শতাংশ সোডিয়াম আমেরিকানরা গ্রহণ করেন প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং রেস্টুরেন্টের খাবারে। অন্যান্য সাধারণ উচ্চ সোডিয়াম আসে টিনজাত স্যুপ, প্রক্রিয়াজাত মাংস, হিমায়িত পিৎজা, স্ন্যাক খাবার (যেমন: চিপস, ক্র্যাকার, প্রিটজেল), কেচাপ, বারবিকিউ সস, সয়া সসের মতো মসলা, সালাদ ড্রেসিং, আচার, জলপাই, বীট, টিনজাত শাকসবজি ইত্যাদি খাবার থেকে।
চিনি
চিনি বেশি খেলে শুধু সুগার বাড়ে না সেই সঙ্গে কিডনির সমস্যাও আসে। রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে প্রস্রাবের মাধ্যমে চিনি বেরিয়ে যায়। রক্তে শর্করার পরিমাণ যত বেশি হয় কিডনি দিয়ে ততই বেশি চিনি পরিস্রুত হয়। এর কারণেই ডায়াবেটিসের রোগীদের কিডনির সমস্যা হয়।
আমাদের বেশিরভাগ খাবারেই চিনি পাওয়া যায়। প্রাকৃতিক কিংবা প্রক্রিয়াজাত সব কিছুতেই চিনি রয়েছে। তাই চিনি গ্রহণে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত। ফল প্রাকৃতিক চিনির উৎস, যা আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় অনেক ভিটামিন এবং খনিজ সরবরাহ করে। এটি যোগ করা শর্করাযুক্ত খাবার, যা পুষ্টির মান স্কেলে কম থাকে। আপনি জানলে অবাক হবেন যে মসলা, রুটি এবং অন্যান্য স্ন্যাক খাবারেও অতিরিক্ত চিনি থাকে।
সোডা
আমেরিকান কিডনি ফান্ডের মতে, একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষায় পরামর্শ দেয়া হয়েছে যে প্রতিদিন দুই বা ততোধিক কার্বনেটেড সোডা, ডায়েট বা নিয়মিত পান করলে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে। কার্বনেটেড এবং এনার্জি ড্রিংকস উভয়ই কিডনিতে পাথর তৈরির সঙ্গে যুক্ত।
মাংস ও দুগ্ধজাত পণ্য
মাংস এবং দুগ্ধজাত দ্রব্য থেকে প্রাণিজ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারগুলো কিডনির ক্ষতি করতে পারে। কারণ, সেগুলো বিপাক করা খুব কঠিন হতে পারে। এটি কিডনির ওপর একটি ভারী বোঝা রাখে, যা তাদের পক্ষে বর্জ্য পণ্যগুলো দূর করা কঠিন করে তোলে। একটি উচ্চ প্রোটিন খাদ্য বিদ্যমান কিডনি সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এ ছাড়াও গবেষণাগুলো দেখায় যে একটি প্রাণীভিত্তিক খাদ্য থেকে উদ্ভিদের ওপর ভিত্তি করে একটির দিকে সরে যাওয়ার অনেক স্বাস্থ্য সুবিধা রয়েছে। রঙিন উদ্ভিদের খাবার হলো পুষ্টির শক্তি এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধ করতে পারে।
ক্যাফেইন
কফি, চা, সোডা এবং খাবারে পাওয়া ক্যাফেইন আপনার কিডনিতেও চাপ সৃষ্টি করতে পারে। ক্যাফেইন একটি উদ্দীপক, যা রক্তপ্রবাহ, রক্তচাপ এবং কিডনিতে চাপ বাড়াতে পারে। অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ কিডনিতে পাথরের সঙ্গেও যুক্ত।
জেনেটিকালি মডিফাইড অর্গানিজম (GMOs)
আমাদের প্রক্রিয়াজাত খাবারের একটি বড় শতাংশে জেনেটিক্যালি পরিবর্তিত জীব (GMOs) থাকে। দুর্ভাগ্যবশত, গবেষণার অভাবের কারণে মানুষের ওপর জেনেটিক্যালি মডিফাইড অর্গানিজম (GMO) ফসলের দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যের প্রভাব অজানা থেকে যায়।
সূত্র: পিডমন্ট
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।