অন্যরকম খবর ডেস্ক : আকবর আর সীতা কেন এক খাঁচায়? ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারিতে এই দুই নামের সিংহ-সিংহী একসঙ্গে থাকা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এই ঘটনায় এবার সাসপেন্ড হলেন ত্রিপুরার বন কর্মকর্তা।
মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে পৌরাণিক চরিত্র সীতার কোনও মিল হতে পারে না। ফলে এই দুই সিংহের এক খাঁচায় থাকা পছন্দ নয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের। এই সংগঠনের দাবি, রাজ্যের বন দফতর সিংহ এবং সিংহীটির নামকরণ করেছে এবং তাদের একসঙ্গে রেখে ধর্মের অবমাননা করেছে। সিংহটির নাম বদলেরও দাবি তোলে সংগঠনটি। মামলা গড়ায় কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ির সার্কিট বেঞ্চে। রাজ্যের তরফে জানানো হয়, তারা এই সিংহগুলির নামকরণ করেনি। বরং ত্রিপুরা সরকার এই নামকরণের সঙ্গে যুক্ত।
ঘটনার সূত্রপাত গত ১৩ ফেব্রুয়ারি। আকবর নামে সিংহের সঙ্গে সীতার নামের সিংহীর এক খাঁচায় থাকা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি)। ত্রিপুরার বিশাল-গড়ের সিপাহি-জলা জুলজিক্যাল পার্ক থেকে জলপাইগুড়ির সাফারি পার্কে নিয়ে আসা হয় এদের। গত ১২ ফেব্রুয়ারি পশু ‘এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম’-এর আওতায় এই সিংহ এবং সিংহীকে শিলিগুড়িতে নিয়ে আসে তারা। যখন তাদের উত্তরবঙ্গে পাঠানো হয়েছিল তখন ‘ডেসপ্যাচ রেজিস্টারে’ নাম আকবর এবং সীতা বলে উল্লেখ করা হয়। গোটা প্রোগ্রামটির দায়িত্বে ছিলেন ত্রিপুরার মুখ্য বন সংরক্ষণ কর্মকর্তা প্রবীণ লাল আগরওয়াল।
১৯৯৪ ব্যাচের আইএফএস অফিসার ত্রিপুরার সিপাহি-জলা চিড়িয়াখানা থেকে শিলিগুড়িতে এই সিংহ ও সিংহীকে পাঠানোর নেপথ্যে মূল ভূমিকা পালন করেছিলেন। যখন ত্রিপুরা থেকে তাদের নিয়ে আসা হয়, তখনই নামকরণ করা হয়ে গিয়েছিল বলে খবর। বাংলায় নতুন করে কোনও নাম দেয়া হয়নি। ফলে বিতর্কের মুখে পড়ে এই কর্মকর্তাকে সাসপেন্ড করল ত্রিপুরা সরকার।
বাংলার অ্যাডিশনাল অ্যাডভোকেট জেনারেল জয়জিৎ চৌধুরী জানান, বেঙ্গল সাফারি কর্তৃপক্ষ সিংহ ও সিংহীর নাম বদল করবে। তিনি আদালতে বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ কোনও বিতর্ক চায় না। ত্রিপুরা এই নাম রেখেছিল।’ আদালত প্রশ্ন তোলে, ‘বিতর্কের জন্য কে এসব নাম রেখেছেন? কোনও পশুর নাম ভগবান, পৌরাণিক নায়ক, স্বাধীনতা সংগ্রামী বা নোবেল প্রাপকদের নামে রাখা যায় কি? কোনও সিংহের নাম কি রামকৃষ্ণ বা বিবেকানন্দ রাখবেন? একটি সিংহের নাম কি সম্রাট অশোক রাখবেন? কেন সিংহ আর সিংহীর নাম আকবর আর সীতা রেখে বিতর্ক বৃদ্ধি করলেন? এই ধরনের নাম এড়িয়ে যাওয়া উচিত।’
আর এই বিতর্কের মাঝেই সিংহ ও সিংহীর নামকরণ প্রসঙ্গে বন কর্মকর্তাকে সাসপেন্ড করল ত্রিপুরা সরকার। সূত্র: ট্রিবিউন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।