জুমবাংলা ডেস্ক : বিপণন ব্যবস্থায় হাতবদল কমাতে না পারলে নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি মিলবে না। ভোক্তার ভোগান্তি কমাতে চাহিদা আর যোগানের তারতম্যও দূর করতে হবে। কোনোভাবেই যখন নিয়ন্ত্রণে আসছে না নিত্যপণ্যের বাজার, তখন এ পরামর্শই দিলেন সংসদে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
নিত্যপণ্য আমদানি ও উৎপাদনে সরকারি নীতি কাঠামো সহজ করার পরও বাজার ভোক্তাবান্ধব হচ্ছে না। এর কারণ কী — এমন প্রশ্নের জবাবে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, বাজারে ঘাটতি পূরণে তো সব সময়ই চেষ্টা করা হচ্ছে। বিশ্ববাজারে পণ্যের মূল্য বেশি। তাছাড়া সম্প্রতি তো আমদানি শুল্ক কাঠামোও পরিবর্তন করা হয়েছে। মূলত বাজারের সরবরাহ ব্যবস্থায় মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রভাব বেশি। সেটি থেকে বেরিয়ে আসতে পারলে আমরা আরও উন্নতি করতে পারতাম বলে মনে করি।
এছাড়া ভুল পরিসংখ্যানও বাজার নিয়ন্ত্রণের পথে বড় বাধা হয়ে আছে বলে জানালেন তিনি। টিপু মুনশি বলেন, ‘কোথাও কোথাও আমার মনে হয় চাহিদা আর যোগানের পরিসংখ্যানের দিকেও খেয়াল রাখা দরকার। সেটি আরও বেশি নির্ভরযোগ্য হওয়া দরকার।’
অর্থনীতিবিদরা অবশ্য বলছেন ভিন্ন কথা। বড় বড় বিনিয়োগকারীদের নজরদারিতে আনতে না পারলে মধ্যস্বত্বভোগীদের ছোট ছোট হাত কেটে বাজারে স্বস্তি ফেরানো সম্ভব নয়।
এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবির বলেন, ‘যাদের বড় প্রতিষ্ঠান, যারা বিপুল পরিমাণে পুঁজি বিনিয়োগ করেন, তারাই মূলত বাজার থেকে মুনাফা তুলে নেন। যদি বাজারে অস্থিতিশীলতা তৈরি হয় বা বাজারে যদি কোনো ধরনের কারসাজি থাকে, সেই কাজগুলো কিন্তু তারাই করেন। ফড়িয়া বা ব্যাপারীরা যে বাজারে গিয়ে অস্থিরতা তৈরি করবেন, তাদের কিন্তু সে সক্ষমতা নেই। সুতরাং, আমাদের ধরতে হবে তাদের, যারা একটি বড় মুনাফার আশায় বড় বিনিয়োগ করছেন।’
চাহিদা ও যোগানের পরিসংখ্যানে ত্রুটি থাকলে ব্যবসায়ীরা ঘোলা জলে মাছ শিকারের সুযোগ নেবে বলেও সতর্ক করছেন অর্থনীতিবিদরা।
নিত্যপণ্যের দাম কমাতে চালের গুদামে গুদামে চালানো অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্বয়ং খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। আবার বাজারে বাজারে চষে বেড়াচ্ছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামানসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা।
তবে দিন শেষে কাটছে না ভোক্তাদের নাভিশ্বাস ওঠা; কমছে না পণ্যমূল্য — যার পক্ষে সাক্ষ্য দিচ্ছে বাজার নিয়ে কাজ করা সরকারি সংস্থাগুলোর পরিসংখ্যানও। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলছে, বছর ব্যবধানে চালের দাম বেড়েছে ১.৪৮ শতাংশ, পাম তেলের ৯.৭০ শতাংশ, মসুর ডাল ১০.২৬ শতাংশ, আলু ৪৮.৯৪ শতাংশ, পেঁয়াজ ২০০ শতাংশ, রসুন ৬৬.৬৭ শতাংশ, চিনি ১৭.৩৯ শতাংশ এবং লবণের দাম বেড়েছে ২.৫০ শতাংশ।
বাজারে পণ্যের দামে নাভিশ্বাস উঠার অবস্থা — এমন এক ক্রেতা বলেন, পেঁয়াজ থেকে শুরু করে সবকিছুর দাম বেশি। বাজারে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। যুক্তি একটাই, যে যেভাবে পারছে সে সেভাবে কামাই করছে।
আরেক ক্রেতা বলেন, বাজারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ না হলে মানুষ বাঁচবে কীভাবে? আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের তো নাজেহাল অবস্থা! আমাদের আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের কোনও সমাঞ্জস্য হচ্ছে না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।