আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্যারোলে মুক্তি পেয়েছেন থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা। রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) হাসপাতাল থেকে প্যারোলে ছাড়া পান তিনি। এর আগে ১৫ বছরের স্বেচ্ছা-নির্বাসন কাটিয়ে গত বছর দেশে ফিরে তিনি কারাবন্দি হয়েছিলেন।
এর মাত্র ছয় মাস পরেই মুক্তি পেলেন তিনি। রবিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, থাইল্যান্ডের দোষী সাব্যস্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে রোববার প্যারোলে মুক্তি দেয়া হয়েছে বলে তার আইনজীবী জানিয়েছেন। এতে করে সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতা থেকে উৎখাত এবং এর প্রেক্ষিতে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার ১৫ বছর পর নিজ স্বদেশে মুক্তভাবে প্রথম দিন শুরু করলেন তিনি।
রয়টার্স বলছে, প্রভাবশালী এই বিলিয়নেয়ারের পরিবারের দলই এখন থাইল্যান্ডে ক্ষমতায় রয়েছে। ক্ষমতার অপব্যবহারের জন্য ছয় মাসের দণ্ডে হাসপাতালে বন্দি থাকার পর রোববার তিনি মুক্তি পান। অবশ্য দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে তাকে আট বছরের কারাদণ্ড দেয়া হলেও কয়েকদিনের মাঝেই তার কারাদণ্ড কমিয়ে এক বছর করেন দেশটির রাজা।
বার্ত্সংস্থাটি বলছে, রয়টার্সের সাংবাদিকরা ৭৪ বছর বয়সী থাকসিনকে রোববার ভোরে একটি কালো মার্সিডিজ ভ্যানে করে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যেতে দেখেছেন। এসময় সবুজ শার্ট পরা থাকসিনকে তার কনিষ্ঠ কন্যা ও ক্ষমতাসীন ফেউ থাই দলের নেতা পেতাংটার্ন সিনাওয়াত্রার পাশে বসে থাকতে দেখা যায়।
থাকসিন তার বয়স, স্বাস্থ্যের অবস্থার কারণে প্যারোল মুক্তি পাওয়ার যোগ্য ছিলেন এবং স্বাস্থ্যগত কারণে তাকে হাসপাতালে আটক রাখা হয়েছিল। রবিবার ভোরে হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার প্রায় ২৫ মিনিট পরে তাকে বহনকারী গাড়িটিকে পরিবারের ব্যাংককের বাসভবনে আসতে দেখা যায়।
পেতাংটার্ন তার বাবার সাথে গাড়িতে তার একটি ছবির পাশাপাশি ইনস্টাগ্রামে তার অনুগামীদের একজনের একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন, যাতে লেখা ছিল: ‘থাকসিন বাড়িতে পৌঁছেছেন, আশা করি তিনি সুস্থ থাকবেন।’
তার আইনজীবী উইনিয়াত চার্টমনট্রি রয়টার্সকে জানিয়েছেন, থাকসিন প্যারোলের কার্যক্রম শেষ করেছেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তি পেয়েছেন।
প্রসঙ্গত, বিদেশে ১৫ বছর স্বেচ্ছা-নির্বাসনে থাকার পর ২০২৩ সালের আগস্টে দেশে ফেরেন থাকসিন সিনাওয়াত্রা। এরপরপই তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে নেয়া হয়। সেখান থেকে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হয় বলেও সেসময় খবর প্রকাশ হয়।
গ্রেপ্তারের সপ্তাহখানেকের মধ্যেই রাজকীয় ক্ষমার আবেদন করেছিলেন থাকসিন। অবশেষে তার সেই আবেদন মঞ্জুর হয় এবং রোববার প্যারোলে মুক্তি পান।
উল্লেখ্য, ৭৪ বছর বয়সী থাকসিন সিনাওয়াত্রা থাইল্যান্ডের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং দুই বারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তবে ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন তিনি। এরপর ‘দুর্নীতির’ দায়ে দায়েকৃত মামলায় কারাগারে যাওয়া এড়াতে থাকসিন দেশত্যাগ করেন।
আর এরপর থেকেই দেশের বাইরে স্বেচ্ছা-নির্বাসনে ছিলেন এই থাই নেতা। পরে গত বছরের আগস্টে দেশে ফিরে আসেন তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।