জুমবাংলা ডেস্ক : একটি কিংবা দুইটি নয়, ৪৫টি ফেসবুক আইডি খুলেছেন। তাও আবার পুলিশ কর্মকর্তাদের নাম ও ছবি ব্যবহার করে। বাড়িতে আসা স্বজনদের ফোন দিয়ে ওইসব ফেসবুক আইডি খুলে বিভিন্নজনকে বন্ধু বানিয়ে তাতে প্রতারণার জাল বিছিয়েছেন আব্দুস সামাদ নামে এক তরুণ। এরপর চাকরি দেওয়াসহ নানা অজুহাতে টাকা হাতিয়ে নিতে শুরু করলে ছামাদের এই অপতৎপরতা টের পেয়ে তাকে গ্রেপ্তার করেছে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তারপর জানা যায় তার প্রতারণার কৌশল।
গ্রেপ্তারকৃত ছামাদ ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার মধ্যবালিপাড়া গ্রামের গার্মেন্ট শ্রমিক সাইদুল ইসলামের ছেলে। শনিবার (২৩ মার্চ) রাতে তাকে আটকের পর ডিবির এসআই পরিমল সরকার বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন।
বোরবার (২৪ মার্চ) বিকেলে ওই মামলায় ছামাদকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়। তবে এদিন রিমান্ড শুনানি না করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
পুলিশ জানায়, ছামাদ কাগজপত্রে এখনও নবম শ্রেণির ছাত্র। কিন্তু তিনবছর ধরে সে পড়ালেখায় অনিয়মিত থাকায় নবম শ্রেণির গণ্ডি পেরোয়নি। বাড়িতে আসা স্বজনদের মোবাইল ফোন নিয়ে সেই ফোন থেকে ফেসবুকে আইডি ও হোয়াটসঅ্যাপ খুলে তার ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড একটি খাতায় লিখে রেখে সেই ফোন থেকে লগআউট হয়ে যেতো। তারপর নিজের ফোন থেকে অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করত। এভাবে একে একে ৪৫টি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট চালু করে ছামাদ। কিন্তু স্বজনরা ফেসবুকে আইডির বিষয়ে কিছুই জানতেন না। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ভেবে অনেক জুনিয়র কর্মকর্তা ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলতেন ছামাদের সঙ্গে। অনেকের কাছ থেকে নানা অজুহাতে টাকাও হাতিয়ে নিয়েছেন ছামাদ। গত ৬ মাসের প্রচেষ্টায় ৪৫টি আইডি চালু করেন ছামাদ। জাল বিছানো শেষে গত কয়েকদিন ধরে নানা অজুহাতে বিকাশ নম্বরে টাকা হাতিয়ে নিতে শুরু করে সে।
পুলিশের সাইবার মনিটরিং সেলের কর্মকর্তারা সম্প্রতি দেখতে পান, পুলিশ একাডেমি সারদার অধ্যক্ষ অতিরিক্ত আইজিপি মীর রেজাউল আলম, ডিএমপি কমিশনার মো. হাবিবুর রহমানের পুলিশ পোশাক পরিহিত ছবি ব্যবহার করে ফেইসবুক আইডি খুলে অনেকের সঙ্গে বন্ধু হতে অনুরোধ পাঠাচ্ছে। এ নিয়ে সন্দেহ থেকে আইডিগুলো মনিটরিং শুরু করে সাইবার সেল। পুলিশ কর্মকর্তাদের পরিচয় দিয়ে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে মানুষের সঙ্গে চ্যাটিং করে চাকুরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করে টাকা আত্মসাৎ করে আসছিল ছামাদ।
পুলিশের কাছে ছামাদ জানায়, তারা বাবা গার্মেন্টে কাজ করে। মায়ের সঙ্গে বনিবনা নেই। অভাবের মেটাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘাঁটাঘাঁটি করে ফেসবুক আইডি খুলে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কৌশল করে। শুধু পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নামে অ্যাকাউন্ট খুলে প্রতারণা করাই ছিল তার টার্গেট।’ ছামাদের বাবা সাইদুল ইসলাম বলেন, ছেলে এ ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়বে তা ভাবতেও পারি না।
ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফারুক হোসেন বলেন, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নামে ফেসবুক আইডি খুলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার প্রলোভনসহ অন্যান্য প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করাই তার উদ্দেশ্য ছিল। রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে আরও তথ্য বের করার চেষ্টা করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।