জুমবাংলা ডেস্ক : কম্বোডিয়া, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ ভ্রমণ করেছে বলে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমেরিকার ভিসা পাওয়ার জন্য আবেদন করে একটি চক্র। কিন্তু আমেরিকা অ্যাম্বাসির কাছে ভিসাগুলো জাল বলে মনে হচ্ছিল। পরে ভিসা প্রসেসিং করে জাল ভিসা বলে প্রতিয়মান হয়। ওরা চেয়েছিল প্রতারণার মাধ্যমে আমেরিকায় যেতে। কিন্তু তাদের ভাগ্য সহায় হয়নি। আমেরিকায় পাড়ি দেওয়ার আগেই ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) জালে আটকা পড়ে চক্রের ছয় সদস্য। এরপরই তাদের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে প্রতারণার পেছনের গল্প। ট্রাভেল এসেন্সির কর্তৃপক্ষের যোগসাজোসে ভিসা ও সিল তৈরী করে পাসপোর্টে ব্যবহার করে। আর সেই পাসপোর্ট জমা দিয়ে আমেরিকায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছিল ওরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিভিন্ন দেশের ভ্রমণের তথ্য দিয়ে তিনজন আমেরিকায় যাওয়ার জন্য আবেদন করে। এর মধ্যে পলাশ চন্দ্র দাস মালদ্বীপ ও মালয়েশিয়া ভ্রমণ করেছে; মাহাবুবুর রহমান খান কম্বোডিয়া ও মালদ্বীয় ভ্রমণ করেছে এবং মো. মিলন মালদ্বীপ ভ্রমণ করেছে এমন তথ্য দিয়ে আমেরিকান ভিসার জন্য আবেদন করে। কিন্তু এই পাসপোর্টধারীদের ভিসা জাল বলে আমেরিকান অ্যাম্বাসি ধারণা করে। তারা ভিসা প্রসেসিং করে ভিসা জাল বলে প্রমাণ পায়। পরে এ বিষয়ে আমেরিকান অ্যাম্বাসি কর্তৃপক্ষ গুলশান থানায় মামলা করে। সেই মামলার তদন্তে নামে ডিবি। তদন্তে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছয়জনকে শনাক্ত করে।
বুধবার রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম উত্তর বিভাগ। তারা হলেন- পলাশ চন্দ্র দাস, ওয়াহিদ উদ্দিন, শফিকুল ইসলাম সুমন, মাহবুবুর রহমান খান, মো. আবু জাফর ও মো. আরিফুর রহমান। এদের মধ্যে পলাশ ও মাহবুবুর জালিয়াতি করে আমেরিকায় যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। আর অন্যদের মধ্যে গ্রেফতার ট্রাভেলার্স ডায়েরি এজেন্সির মালিক ওয়াহিদ উদ্দিন ও তার সহযোগী শফিকুল ইসলাম সুমন এবং হ্যাপি হলিডেস এজেন্সির মালিক মো. আরিফুর রহমান ও তার সহযোগী মো. আবু জাফর। তাদের কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত ৪টি জাল সিল ও ৩টি পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়। তারা পরস্পর যোগসাজোসে আমেরিকায় যেতে চেয়েছিল।
গ্রেফতার পলাশ ট্রাভেলার্স ডায়েরি এজেন্সির সহযোগিতায় মালদ্বীপ, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের জাল সিল যুক্ত ভিসা পাসপোর্টে ব্যবহার করে। গ্রেফতার মাহবুবুর হ্যাপি হলিডেস এজেন্সির সহযোগিতায় বিভিন্ন দেশের জাল ভিসা ও সিল নিজেরা তৈরি করে পাসপোর্টে ব্যবহার করে। আমেরিকান ভিসা প্রার্থীদের ভিসা প্রাপ্তির জন্য নানা অবৈধ পন্থার কথা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা স্বীকার করে। তারা প্রতারণার উদ্দেশ্যে আমেরিকান ভিসা প্রার্থীদের সঙ্গে ১০-১৫ লাখ টাকা চুক্তি করে। প্রার্থীদের আমেরিকান ভিসা পাইয়ে দিবে বলে নিশ্চয়তা প্রদান করে প্রতারকরা। আমেরিকান ভিসা প্রার্থীদের সম্মতিতে প্রতারক চক্র প্রার্থীকে পাসপোর্টের গুরুত্ব বাড়াতে বিভিন্ন দেশের জাল ভিসা এবং বিভিন্ন দেশের ইমিগ্রেশনের ইন/আউট এর জাল সিল নিজেরা তৈরী করে প্রার্থীদের পাসপোর্টে সংযুক্ত করে। পরে আমেরিকান অ্যাম্বাসিতে ইন্টারভিউয়ের ব্যবস্থা করে।
ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম উত্তর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ জানান, গ্রেফতারকৃত চক্রটি ২/৩ বছর ধরে এ ধরণের জাল সিল এবং জাল ভিসা পাসপোর্টে সংযুক্ত করে সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। পাসপোর্টে কোন জাল ভিসা কিংবা জাল সিল ব্যবহার করা বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে অপরাধ, সবাইকে এ ধরণের কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। বিভিন্ন দেশে যাতায়াতের তথ্য দেওয়া মানে আমেরিকান ভিসা পাওয়া যাবে এমনটি নয়। আমেরিকান ভিসা প্রাপ্তির ড়্গেেত্র সব সময় সঠিক তথ্য উপস্থাপন করতে হবে। এই চক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্যদের ধরতে অভিযান চলছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।