জুমবাংলা ডেস্ক : বিলুপ্ত ঘোষণার ২৩ বছর পর দেখা মিলেছে মিঠা পানির কুমিরের। পদ্মায় ধরা পড়া তিনটি কুমির রাখা হয়েছে মোংলার করমজল বন্যপ্রাণী প্রজণনস্থলে। তবে সেখানে নোনা পানির পরিবেশ হওয়ায় খাবারে মুখ দিচ্ছে না এরা। গবেষকেরা বলছেন, এদের বাঁচাতে স্বাদু পানির পরিবেশ তৈরি করা না গেলে, ছেড়ে দিতে হবে প্রাকৃতিক জলাশয়ে।
দেশের জলসীমায় মিঠা পানির কুমির বিলুপ্তির ঘোষণা এসেছিল ২০০০ সালে। তবে গত আগস্ট ও অক্টোবরে পদ্মা নদীতে জেলেদের জালে আটকা পড়ে তিনটি স্বাদু পানির কুমির। পরে তাদের নেওয়া হয় সুন্দবনের করমজলে।
চৌবাচ্চায় রেখে মাছ, মুরগি ও কাঁকড়া খেতে দিলেও এসবে মুখ লাগাচ্ছে না কুমিরগুলো। সংরক্ষণ ও প্রজননকেন্দ্রের কর্মকর্তা বলছেন, করমজলে মিঠা পানির পরিবেশ তৈরি না করলে এদের বাঁচিয়ে রাখা মুশকিল।
পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ হাওলাদার বলেন, ‘একটা ভালো পুকুর পাওয়া দরকার। এই পুকুরেই এদের ছাড়ব। আমরা যদি ভালো বেড়িবাঁধ দিয়ে রাখতে পারি, তাহলে এর ভেতরে মিষ্টি পানিটা থাকবে। তাহলে ইনশাল্লাহ ডিম পাড়া থেকে প্রজননের যে কাজটা এটা করতে আমরা সক্ষম হব।’
ইনকিউবেটরে বাচ্চা ফোটানোর সুবিধা আছে দেশের একমাত্র এই কুমির প্রজননকেন্দ্রে। এখানে জন্ম নেওয়া কুমির ছাড়া হয় ঢাংমারি-জয়নিগোলর পশুর ও শ্যালা নদীতে। তবে মিঠা পানির কুমির রক্ষায় নতুন পরিকল্পনা জরুরি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মনিরুল হাসান খান বলেন, ‘রাজশাহীর নিকটবর্তী যে পদ্মা নদী সেটা পাখির জন্যও কিন্তু খুব আদর্শ জায়গা। এমনকি নদীতেও আমাদের যে রক্ষিত এলাকা যেখানে ভবিষ্যতে কুমির বা ঘড়িয়াল টিকে থাকতে পারবে এরকম একটি রক্ষিত এলাকাও কিন্তু আমাদের জন্য প্রতিষ্ঠা করা জরুরি।’
তবে মিঠা পানির জলাধারে পুনর্বাসনের মাধ্যমেও প্রজাতিটি প্রকৃতিতে ফিরিয়ে আনা সম্ভব বলে মত প্রাণী গবেষকদের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফিরজ জামান বলেন, ‘মিঠাপানির কুমির যদি নোনাপানিতে চাষ করার চিন্তা তারা করে তাহলে সেটা ভুল। সেটা করা যাবে না। এটা খেয়াল রাখতে হবে। এই প্রাণীগুলো যদি আমরা মিঠাপানিতে পরিবেশ তৈরি করে ক্যাপটিভ ব্রিডিং করার চিন্তা করি, তাহলে আমি মনে করি এটা বাস্তবসম্মত হতে পারে।’
মিঠা বা স্বাদু পানির কুমির নির্ভরশীল মাছের ওপর। নদীনালা, প্রকৃতিক জলাশয়ে মাছ কমে যাওয়াই এই প্রাণী বিলুপ্তির বড় কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।