ফ্রিজে কাঁচা মাছ বা মাংস রাখার ক্ষেত্রে অনেকেরই মাঝেই ভুল ধারণা আছে। মৌসুমে বেশি করে মাছ সংগ্রহ করে ডিপ ফ্রিজে রেখে সেটা বছরের বাকি সময় খেয়ে থাকেন । বিশেষ করে ইলিশ মাছ বা সামুদ্রিক মাছ ও কুরবানির মাংস, হাঁসের মাংস এসব দীর্ঘ সময় সংরক্ষণের প্রবণতা দেখা যায়। এসব খাবার শুধু স্বাদে নয়, পুষ্টিতেও ভরপুর। অনেকেই মনে করেন, একবার ফ্রিজে রাখলেই খাবার দীর্ঘদিন ভালো থাকে পুষ্টি ঠিক থাকে। কিন্তু বিষয়টি সঠিক নয়। তাহলে মাছ বা মাংস কতদিন ফ্রিজে রাখা নিরাপদ? কীভাবে সংরক্ষণ করলে খাবারের গুণগত মান ঠিক থাকে? আবার কোন কোন ভুলে তৈরি হতে পারে স্বাস্থ্যঝুঁকি?
মাছ ও মাংস সংরক্ষণের আদর্শ সময়সীমা, প্যাকেটিংয়ের পদ্ধতি, কাঁচা ও রান্না করা খাবার আলাদা রাখার গুরুত্ব—সবই তুলে ধরেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, একাধিকবার একই প্যাকেট খুলে রান্না করলে কী ধরনের বিপদ হতে পারে, সে সম্পর্কেও দিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ।
সময়সীমা: পুষ্টিবিদ চামিলি জান্নাত জানান, সাধারণত ফ্রিজে কাঁচা মাছ বা মাংস সর্বোচ্চ তিন মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা নিরাপদ। তবে এটি নির্ভর করে ফ্রিজের তাপমাত্রা ও সংরক্ষণের পদ্ধতির ওপর।
১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার নিচে তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করলে মাছ বা মাংস অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ সময় ভালো থাকতে পারে। তবে সময় যত বাড়ে, ততই খাবারের স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিগুণে হেরফের হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
তাই যত দ্রুত সম্ভব, অর্থাৎ সাতদিন বা এক মাসের মধ্যেই এসব খাবার খেয়ে ফেলা সবচেয়ে ভালো। এতে করে খাবারের আসল স্বাদ ও পুষ্টি বজায় থাকে এবং সংক্রমণের ঝুঁকিও কমে।
সংগ্রহ করার নিয়ম: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, অনেকেরই বাসায় একটি ফ্রিজ থাকে এবং তার ছোট ডিপ অংশে রান্না খাবার ও কাঁচা মাছ মাংস দুটোই এক সঙ্গে রাখা হয়, যার ফলে খাবারের পুষ্টিগুণ নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা থাকে অনেক বেশি।
রান্না করা খাবার এবং কাঁচা মাছ-মাংস ফ্রিজের একই চেম্বারে রাখা অনিরাপদ। এতে খাবার নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পুষ্টিগুণ কমে যায়। যদি একই ফ্রিজে বা একই ডিপে রান্না খাবার এবং কাঁচা মাছ-মাংস রাখতেই হয়, সে ক্ষেত্রে যদি দুটি তাক থাকে বা ড্রয়ার সিস্টেম থাকে তাহলে আলাদা করে রাখতে হবে।
যেখানে রান্না খাবার থাকবে সেখানে কাঁচা মাছ ও মাংস থাকবে না। এছাড়া কাঁচা মাছ-মাংস ভালোভাবে কনটেইনার বা পলি দিয়ে মুড়িয়ে রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, ফ্রিজে রাখার আগে খাবার রাখার পাত্রটি ভালোভাবে পরিষ্কার করে শুকিয়ে নিতে হবে।
একই সঙ্গে যেই পলিতে বা কনটেইনারে মাছ-মাংস সংগ্রহ করবেন সেটিও ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। যদি পরিষ্কার ও শুকনো না হয় তাহলে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণের সম্ভাবনা থাকে।
টিপস: আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সবাইকে সচেতন হতে হবে, একটি পলিতে বা কন্টেইনারে যেই পরিমাণ মাছ বা মাংস রাখবেন সেটা যেন, একবেলা বা একদিনের পরিমাণ খাবার হয়।
একটা পলিথিনে পুরো মাছ বা মাংস রেখে না দেয়াই ভালো। কারণ রান্নার জন্য সেটা খুলে পানিতে রাখবেন এরপর বাকি অংশ সেই পলি করে ফ্রিজে রাখলে খাবারের পুষ্টিগুণ নষ্ট হতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।