জুমবাংলা ডেস্ক : নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায় নতুন জাতের ধান ‘ফাতেমা’র চাষাবাদ শুরু হয়েছে। উপজেলার পানিহাড়া মানপুর গ্রামের কৃষক দেলোয়ার হোসেন তার ৪৫ শতাংশ জমিতে এই ধান চাষ করেছেন। প্রত্যাশা করছেন, এই জাতের ধানের বাম্পার ফলন পাবেন তিনি।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নিয়ামতপুর উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের পানিহাড়া মানপুর গ্রামের কৃষক দেলোয়ার হোসেন ‘ফাতেমা’জাতের ধান চাষ করেছেন। দৃষ্টিজুড়ে শুধু সোনালি ধান। দু’এক দিনের মধ্যে ধান কাটা শুরু হবে।
জানা যায়, বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার বেতাগা ইউনিয়নের চাকুলিয়া গ্রামের সেকেন্দার আলীর স্ত্রী ফাতেমা বেগমের কথামতো ছেলে লেবুয়াত শেখ নিজেদের জমিতে ধান চাষ করে তিনটি শীষ খুঁজে পান।
পরে সেই শীষের ধান বুনে পান দুই কেজি বীজ। সেই বীজ এক বিঘা জমিতে চাষাবাদ করে লেবুয়াত ৩৫ মণ ধান ঘরে তোলেন। যেখানে অন্যান্য ধানের ফলন বিঘা প্রতি ১৮ মণের বেশি পাওয়া সম্ভব ছিল না, সেখানে ৩৫ মণ ছিল কল্পনা।
পরবর্তী সময়ে কৃষক লেবুয়াতের মা এই জাতের ধানের উদ্ভাবক হওয়ায় তার মায়ের নামানুসারে ধানের নাম রাখেন ‘ফাতেমা’। দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে এই ধান।
গাছ, ফলন, পাতা, শীষ সবকিছু অন্য যেকোনো জাতের ধানের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। প্রতি গোছে একটি চারা রোপণ করা হয়, যা বেড়ে ১০-১২ টিতে রূপান্তরিত হয়।
প্রতিটি ধান গাছ ১২০ থেকে ১৩০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। একেকটি ছড়ার দৈর্ঘ্য ৩৫ থেকে ৪০ সেন্টিমিটার। প্রতি ছড়ায় দানার সংখ্যা ৭০০ থেকে ১ হাজার। যার ওজন ৩৫ থেকে ৪০ গ্রাম। ধানগাছের পাতা লম্বা ৮৮ সেন্টিমিটার, ফ্লাগলিপ (ছড়ার সঙ্গের পাতা) ৪৪ সেন্টিমিটার। পাতা চওড়া দেড় ইঞ্চি।
এই জাতের গাছের কাণ্ড, পাতা দেখতে অনেকটা আখ গাছের মতো এবং বেশি শক্ত। তাই এ ধান ঝড়-বৃষ্টিতে হেলে পড়ার কোনো আশঙ্কা নেই। ফাতেমা ধান একর প্রতি ফলন হয় প্রায় ১২০ থেকে ১৩০ মণ। তাই অন্য যে কোনো জাতের তুলনায় এই জাতের ধান অনেক ব্যতিক্রম।
নিয়ামতপুর উপজেলার কৃষক দেলোয়ার হোসেন জানান, ইউটিউবের মাধ্যমে ফাতেমা ধানের বিষয়ে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাগেরহাটের কৃষক লেবুয়াতের মায়ের নিকট থেকে বীজ সংগ্রহ করি।
এরপর প্রাথমিকভাবে আমার ৪৫ শতাংশ জমিতে এ ধানের চাষ করি। এতে সবকিছু মিলে মাত্র ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আমি আশাবাদী এ জমিতে প্রায় ৫৫-৬০ মণ ধান হবে। এই ধান উপজেলাব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার বলেও তিনি মনে করেন।
তিনি বলেন, ‘এই ধান চাষ করে লাভবান হতে পারবো বলে আশা করছি। আগামী মৌসুমে আরও বেশি জমিতে আবাদ করবো।’
উপজেলা কৃষি অফিসার আমীর আব্দুল্লাহ ওয়াহেদুজ্জামান বলেন, ‘উপজেলায় একজন কৃষক পরীক্ষামূলকভাবে ফাতেমা ধান চাষ করেছেন। ভালো ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
তথ্যসূত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।