আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রতন টাটা থেকে শুরু করে ধীরুভাই অম্বানী, মুকেশ অম্বানী থেকে গৌতম আদানি— ভারতের প্রথম সারির শিল্পপতিদের তালিকায় রয়েছেন আরও অনেকে। কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক তাঁরা। কিন্তু তাঁদের কেরিয়ারের শুরু কোথায়, কী ভাবে হয়েছিল?
গুজরাতের একটি গ্রামে জন্ম ধীরুভাই অম্বানীর। স্কুলে ভর্তি করানো হলেও আর্থিক অভাবের কারণে মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে দিতে হয়েছিল তাঁকে। পরিবারের পাশে দাঁড়াতে ছোট থেকেই নানা ধরনের কাজ করতে শুরু করেছিলেন তিনি।
বুনন সংক্রান্ত কাজকর্ম করার জন্য ১৯৮৮ সালে ইয়েমেনের এডেনে চলে যান ধীরুভাই। সেখানকার একটি গ্যাস স্টেশনে পেট্রল বিক্রি করে উপার্জন করতেন তিনি। এই চাকরি থেকেই প্রথম আয় তাঁর।
ধীরুভাইয়ের প্রথম উপার্জন ছিল ৩০০ টাকা। এডেন থেকে মুম্বই ফেরেন তিনি। সেখানে গিয়ে নিজের ব্যবসা শুরু করার পরিকল্পনা করেন তিনি। মুম্বইয়ে ৩৫০ বর্গফুটের একটি ঘরে একটি টেবিল, তিনটি চেয়ার এবং একটিমাত্র টেলিফোন থেকে রিলায়্যান্সের জন্ম দেন ধীরুভাই।
ভারতের শিল্পপতিদের মধ্যে রতন টাটা সাফল্যের শিখরে পৌঁছে গেলেও মাটির মানুষ হয়ে থাকতেই পছন্দ করেন। ১৯৬১ সালে টাটা স্টিল সংস্থায় সাধারণ কর্মী হিসাবে কাজ করতেন রতন।
পরে টাটা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড লোকোমোটিভ কোম্পানি (টেলকো)-তে কাজ শুরু করেন রতন। ছ’মাস সেখানে প্রশিক্ষণ নেন। অন্য একটি বেসরকারি সংস্থার তরফে উচ্চ বেতনের চাকরির প্রস্তাব পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেন রতন। নিজের সংস্থা নিয়েই ভবিষ্যৎ দেখেছিলেন তিনি।
ভারতের মহিলা শিল্পপতিদের মধ্যে অন্যতম কিরণ মজুমদার শ। বেঙ্গালুরুতে নিজের সংস্থা খোলেন কিরণ। সেই সংস্থার অধিকর্ত্রী তিনি। বর্তমানে প্রায় ২০ হাজার ৮৮৩ কোটি টাকার মালিক তিনি।
পড়াশোনার সূত্রে অস্ট্রেলিয়ায় যান কিরণ। সেখানে যাওয়ার পর হাতখরচের জন্য কফিশপে কাজ করতে শুরু করেন তিনি। কফি কী ভাবে তৈরি করতে হয় তার প্রশিক্ষণও নেন। এমনকি ভারতে ফেরার পরেও নাকি কিছু দিন এই কাজ করেন কিরণ।
চলতি বছরের তথ্য অনুযায়ী, আদানি গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানির মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৬ লক্ষ ৯৬ হাজার ৬৫৪ কোটি টাকা।
১৯৭৮ সালে কিশোর বয়সে মুম্বই যান গৌতম। মুম্বইয়ের একটি সংস্থার জন্য হিরে বাছাইয়ের কাজ করতেন তিনি। দুই থেকে তিন বছর সেখানে কাজ করার পর মুম্বইয়ে হিরের ব্যবসা শুরু করেন তিনি।
ইংরেজি সাহিত্যজগতের জনপ্রিয় লেখিকা। পাশাপাশি ইনফোসিস সংস্থার অধিকর্তা নারায়ণ মূর্তির স্ত্রী সুধা মূর্তি। ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
কানাঘুষো শোনা যায়, টেলকো সংস্থার তৎকালীন অধিকর্তাকে একটি পোস্টকার্ড পাঠিয়েছিলেন সুধা। সংস্থায় মহিলা কর্মীদের প্রতি আচরণ পছন্দ ছিল না সুধার। এই কথাই পোস্টকার্ডে লিখে জানিয়েছিলেন তিনি।
সুধার লেখা পোস্টকার্ড পাওয়ার পর সংস্থার তরফে তাঁর সঙ্গে দেখা করা হয়। সুধাকে চাকরিও দেওয়া হয়। সেটাই ছিল তাঁর প্রথম চাকরি।
১২ বছর ধরে পেপসিকো সংস্থার অন্যতম কর্তা ছিলেন ইন্দ্র নুয়ি। ১৮ বছর বয়সে একটি কারখানায় প্রথম কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। তার পর মুম্বইয়ের অন্য একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন তিনি।
গোদরেজ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন আরদেশির গোদরেজ। ওষুধের দোকানের কর্মী হিসাবে রোজগার শুরু করেছিলেন তিনি। তখন আরদেশির ভেবেছিলেন, অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি তৈরি করবেন। এই ভাবনা নিয়েই প্রথম ব্যবসা শুরু তাঁর।
প্রথম ব্যবসা চলেনি আরদেশির। টাকাপয়সাও বেশি ছিল না, যা দিয়ে নতুন ব্যবসা শুরু করবেন তিনি। সেই সময় তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মেরওয়ানজি কামা নামে এক ব্যবসায়ী।
আরদেশির যেন নতুন করে ব্যবসা শুরু করতে পারেন, তাই তাঁকে টাকা দিয়েছিলেন মেরওয়ানজি। তালা নির্মাণের ব্যবসা শুরু করেছিলেন আরদেশির। সেই ব্যবসা থেকেই সাফল্যের সিঁড়িতে উঠতে শুরু করে গোদরেজ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।