জুমবাংলা ডেস্ক : কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দুই মাসে ফলের বাজার থেকে ব্যবসায়ীরা প্রায় একশ কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, ডেঙ্গু আক্রান্তদের জন্য ফলের চাহিদা বাড়ার সুযোগকে কাজে লাগিয়েছেন তারা। অজুহাত হিসেবে সামনে রেখেছেন এলসি খোলার জটিলতা। চট্টগ্রাম কাস্টমস ও সংশ্লিষ্টসূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ১৫০ টাকার মাল্টা সাড়ে চারশ টাকা এবং ১৮০ টাকার আপেল সাড়ে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়। অথচ চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিভিন্ন শেডে ফল বোঝাই শত শত রেফার কন্টেইনার পড়ে আছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন শেড এবং ইয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে, আমদানি করা ফল বোঝাই সারি সারি রেফার কন্টেইনার পড়ে রয়েছে। অন্যদিকে, বাজারগুলোতেও দেশি ফলের পাশাপাশি আপেল-মাল্টা এবং কমলার মতো বিদেশি ফলের পসরা সহজেই চোখে পড়ে। অর্থাৎ বাজার কিংবা আমদানি পর্যায়ে ফলের কোনো সংকট নেই বললেই চলে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের উপ কমিশনার ব্যারিস্টার মো. বদরুজ্জামান মুন্সী সম্প্রতি জানান, কাস্টমস হাউজের তথ্য অনুযায়ী চলতি অর্থ বছরের জুলাই এবং আগস্ট মাসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ৯ হাজার ৫৪২ মেট্রিক টন মাল্টা, ১৪ হাজার ৭৫৬ মেট্রিক টন আপেলের পাশাপাশি আরো ১৯ হাজার ৫৪৪ মেট্রিক টন অন্যান্য ফল আমদানি হয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৩৩৫ কোটি টাকা।
মো. বদরুজ্জামান মুন্সী আরও বলেন, প্রতি বছর চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে যে পরিমাণে ফল আমদানি হয়, এ বছরও এখন পর্যন্ত সেই পরিমাণে ফল আমদানি হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, জুলাই মাস থেকে দেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ার সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মাল্টা এবং আপেলের মতো বিদেশি ফলের চাহিদা।
অভিযোগ উঠেছে, আমদানিকারকরা ফলবোঝাই কন্টেইনার বন্দরের ইয়ার্ডে ফেলে রেখে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছে। এতে ফলের দাম দুই থেকে তিনগুণ বেড়ে যায়। অবশ্য আমদানিকারকদের প্রতিনিধি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে আমদানি করা ফল দ্রুত ছাড় করতে তাগাদা দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, ফলমূল এবং কাঁচা মাছ ও মাংস আসলে আমদানিকারক এবং সংশ্লিষ্টদের নেয়ার জন্য দ্রুত তাগাদা দেয়া হয়।
ফল ব্যবসায়ীদের দাবি, ডলার সংকটের কারণে জুলাই মাসে ফল আমদানির কোনো এলসি খোলা যায়নি। ফলের বাজারে তার প্রভাব পড়েছে আগস্ট মাসে। আর চলতি মাসে আমদানি বাড়ায় মাল্টা ও কমলার দাম কিছুটা কমেছে। তবে বেড়েছে আপেলের দাম।
চট্টগ্রাম ফল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. তৌহিদুল আলম বলেন, যেসব ব্যবসায়ীদের মালামাল বন্দরে থেকে গেছে বা কন্টেইনার এদিক ওদিক চলে গেছে সেগুলো হয়ত বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। এখন বাজারে ফলের দাম কমবে।
মিসর-দক্ষিণ আফ্রিকা-চীন-ব্রাজিল থেকে বছরে প্রায় পাঁচ লাখ মেট্রিক টনের বেশি কমলা-মাল্টা-আপেল এবং আঙ্গুর আমাদানি করে বাংলাদেশ। এসব ফলে ১১৩ শতাংশ হারে শুল্ক আদায় করা হয়। চলতি অর্থ বছরের প্রথম দু’মাসে ফল আমদানিতে সরকার রাজস্ব পেয়েছে প্রায় ২৩৫ কোটি টাকা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।