জুমবাংলা ডেস্ক : আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিল রেখে প্রতি মাসে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করা হলেও চলতি মাসে তা হচ্ছে না। ফলে ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন ও পেট্রলের দাম এবার বাড়বেও না কমবেও না। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা মীর মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন। তিনি জানান, আগস্ট মাসে দেশের বাজারে জ্বালানি তেলের দাম অপরিবর্তিত থাকবে।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, বিশ্ববাজারে তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে এ মাসে দেশে তেলের মূল্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু দেশের চলমান পরিস্থিতির কারণে এখন মূল্যবৃদ্ধির ঝুঁকি নিতে চাইনি সরকার। এ কারণে এবার আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মূল্য সমন্বয় করা হয়নি।
এদিকে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) সূত্র জানায়, বিশ্ব বাজারে যে দাম তাতে প্রতি লিটার অকটেন ও পেট্রলে গড়ে ২ টাকা থেকে আড়াই টাকার মতো মুনাফা হচ্ছে তাদের। কিন্তু সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত জ্বালানি ডিজেল বিক্রি করে প্রায় ৪ টাকা লোকসান হচ্ছে। এর ফলে এ মাসে বিপিসির প্রায় ৩০০ থেকে সাড়ে ৩শ কোটি টাকার মতো লোকসান গুনতে হতে পারে।
বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গত মার্চ থেকে জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ করে আসছে সরকার। এ হিসাবে প্রতি মাসে নতুন দাম ঘোষণা করছে সরকার। যদিও জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের অনেকের অভিযোগ, যে ফর্মুলায় বিপিসি জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ করছে তাতে অস্বচ্ছতা রয়েছে।
সর্বশেষ গত জুলাই মাসের জন্য প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ১ টাকা কমিয়ে নতুন দর নির্ধারণ করা হয় ১০৬ টাকা ৭৫ পয়সা। আর পেট্রলের দাম লিটারে ১২৭ টাকা এবং অকটেনে ১৩১ টাকা অপরিবর্তিত রাখা হয়। এর আগে মে মাসে পেট্রোল ও অকটেনের দাম লিটারে আড়াই টাকা করে বাড়ানো হয়েছিল। মার্চ মাসে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৭৫ পয়সা, অকটেনের দাম ৪ টাকা এবং পেট্রোলের দাম ৩ টাকা কমানো হয়।
আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে দেশের বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ করতে গত ২০ ফেব্রুয়ারি জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ ফর্মুলার নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, দেশে ব্যবহৃত অকটেন ও পেট্রল ব্যক্তিগত যানবাহনে অধিক পরিমাণে ব্যবহার হয়। তাই বাস্তবতার নিরিখে বিলাস দ্রব্য (লাক্সারি আইটেম) হিসেবে সবসময় ডিজেলের চেয়ে অকটেন ও পেট্রলের দাম বেশি রাখা হয়। ভর্তুকির চাপ এড়াতে ২০২২ সালের আগস্টে গড়ে ৪২ শতাংশ বাড়ানো হয় জ্বালানি তেলের দাম। এরপর ব্যাপক সমালোচনার মুখে ২৩ দিনের মাথায় সব জ্বালানি তেলের লিটারে ৫ টাকা করে কমানো হয়।
ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রল ও অকটেনের দাম জ্বালানি বিভাগ নির্ধারণ করে। এছাড়া উড়োজাহাজে ব্যবহৃত জেট ফুয়েল ও বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যবহৃত ফার্নেস অয়েলের দাম নিয়মিত সমন্বয় করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)।
এদিকে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম প্রায় ৩৭ শতাংশ বেড়েছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মজুদ হ্রাস এবং দাবানলের কারণে কানাডা থেকে সরবরাহ ঝুঁকি বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে বলে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।