জুমবাংলা ডেস্ক : গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী এলাকায় বকেয়া বেতন না দিয়ে কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে ও বকেয়ার দাবিতে মঙ্গলবার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা। পাশাপাশি, কারখানা শ্রমিককে মারধরের ঘটনায় কালিয়াকৈরের মৌচাক এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা। দুই মহাসড়কে যানচলাচল বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। অনেকেই হেঁটে গন্তব্যে যান। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতার।
গাজীপুরের টঙ্গীর দত্তপাড়ার বিএইচআইএস অ্যাপারেলস গার্মেন্টসে দুই মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবির প্রেক্ষিতে কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার নোটিসের প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল ৯ টার দিকে কারখানার হাজার খানেক শ্রমিক ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক দুই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে। বেতনভাতা পরিশোধের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নিলে বেলা ১১ টার দিকে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।
অবরোধের ফলে, ঢাকা-টঙ্গী-গাজীপুর ও টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কসহ উত্তরবঙ্গের ৩০টি রুটের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সড়কের উত্তর-দক্ষিণে ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। দুর্ভোগে পড়েন হাজার হাজার যাত্রী, অফিসগামী চাকরিজীবী, স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী ও ব্যবসায়ীরা।
কারখানা সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে টঙ্গীর হোসেন মার্কেট এলাকার ঢাকা-ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কে এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ও সরকারি সূত্র মতে, সোমবার শ্রমিকরা কারখানার ভেতরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কাজ বন্ধ করে দেন। কর্তৃপক্ষ বারবার অনুরোধ করলেও তারা আর কাজে যোগ দেননি। এ পরিস্থিতিতে কারখানা কর্তৃপক্ষ অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধের ঘোষণা দেন।
মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে এসে কারখানার গেটে বন্ধের নোটিস টানানো দেখতে পান। এতে তারা তাৎক্ষণিক বিক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং টঙ্গীর হোসেন মার্কেট এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মো. ওয়াহিদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে। এতে মহাসড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে, ভোগান্তিতে পড়েন হাজার গাজার যাত্রী ও বিভিন্ন পেশার মানুষ।
শ্রমিকদের দাবি, তাদের দুই মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে- যা পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন না দেওয়ায় তারা সড়ক অবরোধে নামেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, শ্রমিক ও মালিক পক্ষের মধ্যে বেতন পরিশোধের সমঝোতায় শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ তুলে নেন।
অপরদিকে, জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকায় অবস্থিত গ্লোবাস কারখানার শ্রমিককে মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। আন্দোলনের কারণে নিরাপত্তার শঙ্কায় মৌচাক এলাকায় আশপাশের অন্তত ১৫টি কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়।
শিল্প পুলিশ ও কারখানার শ্রমিকরা জানান, টঙ্গীর হোসেন মার্কেট এলাকায় বিএইচআইএস অ্যাপারেলস লিমিটেড নামের কারখানার শ্রমিকদের ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন ৯ মার্চ দেওয়ার কথা থাকলেও, তা না পেয়ে তারা মঙ্গলবার কাজ বন্ধ করে কারখানার ভেতরে বিক্ষোভ করেন। কর্তৃপক্ষ দিনভর বেতন দেওয়া নিয়ে টালবাহানা করার পর বিকেলে শ্রমিকরা বাড়ি ফিরে যান।
সেই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে গিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধের নোটিস দেখতে পান। এ অবস্থায় সকাল ৭টা থেকে কারখানার সামনে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ না করায় একপর্যায়ে শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের হোসেন মার্কেট ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের সামনে মহাসড়ক অবরোধ করেন।
অপরদিকে, জেলার কালিয়াকৈর উপজেলাধীন মৌচাকের গ্লোবাস কারখানায় গত শনিবার কয়েকজন শ্রমিককে ডেকে নিয়ে মারধর করে কারখানার স্টাফরা। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে শ্রমিকরা কারখানার ভেতর আন্দোলন শুরু করেন। এতে কারখানা সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে শ্রমিক-স্টাফদের ঝামেলা মিটে গেলেও আজও কারখানা বন্ধ রয়েছে।
এ কারণে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শেষে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন। শ্রমিক আন্দোলনের কারণে মহাসড়কে সাময়িক যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে নিরাপত্তার কারণে আশপাশের ১৫টি কারখানাও বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ এ পুলিশ সুপার এ কে এম জহিরুল ইসলাম বলেন, সকাল পৌনে ১১টার দিকে কালিয়াকৈর এলাকার শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দিলে যানচলাচল শুরু হয়। সূত্র : জনকন্ঠ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।