ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি অমানবিক আগ্রাসনের দুই বছর পার হয়ে গেল। এখনও অবরুদ্ধ ভূখণ্ডটিতে বন্ধ হয়নি দখলদারদের নৃশংস হত্যাকাণ্ড। বৈশ্বিক চাপের মুখে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধে ইতোমধ্যে ২০ দফা পরিকল্পনা সামনে এনেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দ্রুত গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকরে একটি চুক্তি সম্পন্ন হতে যাচ্ছে বলে আশাও প্রকাশ করেছেন তিনি। এ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে মিশরে আলোচনায় বসেছে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের প্রতিনিধি দল।
অথচ, যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলমান থাকা অবস্থায়ই ভয়ংকর হুমকি দিয়ে বসেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সব উদ্দেশ্য হাসিল না হওয়া পর্যন্ত গাজায় নিজেদের আগ্রাসন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা এসেছে তার পক্ষ থেকে।
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের দুই বছর পূর্ণ হয় মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর)। এদিন এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েল যুদ্ধের সব লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবে। এর মধ্যে রয়েছে বন্দিদের মুক্তি, হামাসের শাসন শেষ করা এবং গাজাকে আর কখনো ইসরায়েলের জন্য হুমকি হতে না দেওয়া।
অথচ একইদিন হোয়াইট হাউজে এক বক্তব্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, গাজা ইস্যুতে একটি ‘বাস্তব চুক্তির সম্ভাবনা’ তৈরি হয়েছে। মঙ্গলবার মিশরের শার্ম আল-শেইখ শহরে দ্বিতীয় দিনের আলোচনা শেষ হয়েছে।
বুধবারও আলোচনার ধারা অব্যাহত থাকবে বলে জানা গেছে। এতে যুক্ত হতে যাচ্ছেন কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারাও।
মঙ্গলবার দিনের শুরুতেই হামাসসহ কয়েকটি ফিলিস্তিনি সংগঠন এক যৌথ বিবৃতিতে জানায়, তারা ‘যে কোনো উপায়ে প্রতিরোধ অব্যাহত রাখবে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ফিলিস্তিনিদের অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার অধিকার কারো নেই। এটা সম্ভবত ট্রাম্পের পরিকল্পনায় হামাসকে নিরস্ত্র করার শর্তের জবাব ছিল।
হামাসের শীর্ষ নেতা ফাওজি বারহুম জানান, তারা যুদ্ধের সমাপ্তি ও ইসরায়েলি সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার চান। তবে, ট্রাম্পের পরিকল্পনায় এই সেনা প্রত্যাহারের নির্দিষ্ট সময়সূচি উল্লেখ নেই। পরিকল্পনা অনুযায়ী, হামাস ৪৮ জন ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার পরই ধাপে ধাপে সেনা প্রত্যাহার শুরু হবে। এর মধ্যে ২০ জনকে জীবিত রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশ করা না শর্তে এক হামাস কর্মকর্তা আল জাজিরাকে বলেন, বন্দিদেরকে ধাপে ধাপে মুক্তি দিতে চান তারা, যা ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের অগ্রগতির সঙ্গে যুক্ত থাকবে। মঙ্গলবারের আলোচনায় বন্দি বিনিময়ের সময়সূচি ও সেনা প্রত্যাহারের মানচিত্র নিয়ে আলোচনা হয়েছে। হামাস জানায়, শেষ বন্দি মুক্তির সময়ই ইসরায়েলের চূড়ান্ত সেনা প্রত্যাহার ঘটতে হবে।
হামাসের শীর্ষ আলোচক খালিল আল-হায়্যা বলেন, তারা ইসরায়েলের ওপর ‘এক মুহূর্তের জন্যও ভরসা করেন না’ এবং যুদ্ধ সম্পূর্ণভাবে বন্ধের বাস্তব নিশ্চয়তা চান। তিনি বলেন, ইতিহাস স্বাক্ষী যে ইসরাইল কোনো প্রতিশ্রুতি রাখেনি। গাজা যুদ্ধে এই অভিজ্ঞতা তাদের দু’বার হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।