গাজায় তিন সন্তানের মা আমাল আবু আসসি যখন একটি আকাশ থেকে পড়া ত্রাণের প্যাকেট খুললেন, তখন তাঁর চোখে হতাশা—প্যাকেটে ছিল একটি হুমাস ক্যান। ক্ষুধার্ত সন্তানদের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “এই অপমান আর সহ্য হচ্ছে না… আমাদের সম্মানের সঙ্গে সাহায্য দরকার।”
ত্রাণ না হয়ে উঠেছে অপমানের প্রতীক
ত্রাণ পেতে গিয়ে মানুষকে মরতে হচ্ছে, ছুরি হাতে লড়তে হচ্ছে। তাবুর ওপর, ছাদের ওপর পড়ে এসব খাবারের প্যাকেট। কেউ আবার এই প্যাকেট পাওয়ার জন্য অন্যের বাড়িতে হামলা করছে।
এই পরিস্থিতিতে আমাল বলেন, “আমরা আগের মতো সম্মানের সঙ্গে সহায়তা নিতে চাই—যেমন কুপনের মাধ্যমে বা গ্যাস দিয়ে।”
খাদ্য অপ্রতুল, মানুষ ক্ষুধায় কাতর
গাজার আরেক বাসিন্দা ফারেস জাহের বলেন, “৮ জনের পরিবারের জন্য এই ত্রাণ দুই দিনও চলে না।” সাহায্য নিতে গিয়ে তাকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কিলোমিটার পাড়ি দিতে হয়, যেখানে হামলার শিকার হন অনেকে।
ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না, অপুষ্টিতে মৃত্যু বাড়ছে
- প্রতি দিন দরকার ৫০০-৬০০ ট্রাক, কিন্তু যাচ্ছে মাত্র ১০০টিরও কম।
- ইউনিসেফ ও ডব্লিউএফপি বলছে, শিশুদের জন্য জরুরি থেরাপিউটিক খাবার আগস্টের মাঝামাঝি শেষ হয়ে যাবে।
- এপ্রিল থেকে জুলাইয়ে ২০ হাজারের বেশি শিশু গুরুতর অপুষ্টিতে ভুগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
বিশ্লেষণ: আকাশপথে সহায়তা নয়, চাই স্থলপথে কার্যকর পৌঁছানো
- ইউনিসেফ, ডব্লিউএফপি সহ অন্যান্য সংস্থা বলছে—আকাশ থেকে খাবার ফেলা বেশি ব্যয়বহুল এবং অনিরাপদ।
- সবচেয়ে ক্ষুধার্তরা তা পায় না। বরং সংঘর্ষ হয়, সম্পদ লুট হয়।
জিএইচএফ বিতর্ক: মার্কিন পরিচালিত সংস্থা বিতরণের দায়িত্বে
- এই সংস্থার মাধ্যমে বিতরণে প্রাণহানি বেড়েছে বলে অভিযোগ।
- যদিও সংস্থাটি বলে, “আমরা নিরাপদভাবে কাজ করছি।”
- জাতিসংঘ তাদের সঙ্গে কাজ করতে চায় না।
দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে গাজা
- আইপিসি জানায়, গাজায় শিশুদের মৃত্যু বাড়ছে অপুষ্টিতে।
- স্বাভাবিক খাদ্যচক্র ভেঙে গেছে, জ্বালানি ও পানি নেই।
সম্মানের সঙ্গে সহায়তা চাই
গাজার মানুষ শুধু খাবার নয়, সম্মান চায়। প্যাকেট নয়—চায় নিরাপদ করিডোর, মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি, এবং পূর্বের মতো সম্মানজনক কুপন বা হস্তান্তর ব্যবস্থা। আকাশপথে ত্রাণ নয়, চাই স্থলপথে কার্যকর মানবিক সহায়তা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।