বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : আকাশে চলছে বিশেষ এক উল্কা শো। নাম ড্রাকোনিড উল্কাবৃষ্টি। এটা প্রতি বছর অক্টোবরের প্রথম দিকে ঘটে। এটি সাধারণত ৬ থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত সক্রিয় থাকে, আর ৮ ও ৯ অক্টোবর এর শীর্ষ অবস্থায় থাকে।
ড্রাকোনিড নামটি এসেছে ‘ড্রাকো’ নামের এক বিশেষ তারামণ্ডল থেকে। ওখান থেকেই এই উল্কাগুলি উদ্ভূত হয় বলে মনে করা হয়। এই উল্কাবৃষ্টির সময়ে, প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১০টি উল্কা দেখা যেতে পারে। তবে বছরভেদে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে, এবং কখনও কখনও অনেক বেশি উল্কাও দৃশ্যমান হতে পারে।
ড্রাকোনিড উল্কাবৃষ্টি উৎপন্ন হয় ধুলো ও বর্জ্য থেকে। যা 21P/জিয়াকোবিনি-জিনার নামের একটি রেখে গেছে। এই ধুলো এবং ক্ষুদ্র বস্তুগুলি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে এবং ঘর্ষণের ফলে পুড়ে গিয়ে উজ্জ্বল আলোর রেখা তৈরি করে। এগুলো আমরা উল্কার মতো দেখি।
এই উল্কাবৃষ্টি রাতের আকাশে এক দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য তৈরি করে। ড্রাকোনিড উল্কাবৃষ্টি দেখতে খুব সহজ। এর জন্য কোনও বিশেষ সরঞ্জামের প্রয়োজন নেই। খোলা আকাশে, আলোক দূষণ কম এমন জায়গা থেকে ড্রাকোনিড উল্কাবৃষ্টি দেখা যায়।
চাঁদের আলো যদি কম থাকে, তবে উল্কাগুলি আরও উজ্জ্বল দেখায়।
উত্তর গোলার্ধের দেশগুলি থেকে এই উল্কাবৃষ্টি সবচেয়ে ভালো দেখা যায়। এবং রাতের সময় উত্তর-পশ্চিম আকাশে তাকালে ড্রাকো তারামণ্ডলের কাছাকাছি থেকে উল্কাগুলি পড়তে দেখা যাবে।
ড্রাকোনিড উল্কাবৃষ্টি অন্যান্য বিখ্যাত উল্কাবৃষ্টির তুলনায় তুলনামূলকভাবে দুর্বল। যেমন পার্সেইড বা জেমিনিড উল্কাবৃষ্টি। তবে এটি বেশ অনির্দেশ্য, অর্থাৎ কোনও বছর এটি বিশেষ রকমের উজ্জ্বল উল্কাবৃষ্টি হতে পারে। ইতিহাসে এমন কিছু বছরও ছিল, যখন ড্রাকোনিড উল্কাবৃষ্টি অসাধারণ তীব্র ছিল, এবং প্রতি ঘণ্টায় হাজার হাজার উল্কা পড়েছে।
ড্রাকোনিড উল্কাবৃষ্টি তার প্রাচীন উৎস এবং তার প্রকৃতির কারণে বিশেষ। এই উল্কাবৃষ্টির উৎস ১৯০০ সালের শুরুর দিকে আবিষ্কৃত হয়েছিল এবং তখন থেকে এটি বিজ্ঞানীদের গবেষণার এক বিশেষ ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে এটি।
এটি প্রতি বছর এক ধরনের পূর্বাভাসযোগ্য মহাকাশীয় শো হলেও এর সঠিক তীব্রতা এবং উল্কাপাতের সংখ্যা অনুমান করা কঠিন। ২০১১ সালে, ড্রাকোনিড একবার প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১,০০০ উল্কা পাত ঘটেছিল। এ দৃশ্য মহাকাশপ্রেমীর চমকে দিয়েছিল।
সূত্র: স্পেস ডট কম
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।