উজ্জ্বল কমলা রঙের অদ্ভুত সুন্দর কমলা দামা বাংলাদেশের বিভিন্ন অংশে পরিচিত বিভিন্ন নামে। কেউ ডাকে কমলা বউ, কেউ মেটে দোয়েল, কেউবা কমলাফুলি। প্রায় দোয়েল আকৃতির পাখিটি খাদ্য সংগ্রহ করে মূলত মাটি থেকেই। পোকামাকড়, কেঁচো এসবই প্রধান খাদ্য। গ্রাম এলাকায় মাটি থেকে খুঁটে খুঁটে খাবার খেতে খেতে মাঝেমধ্যেই ঢুকে পড়ে গেরস্ত বাড়ির উঠানে।
ইংরেজিতে Orange-headed Thrush, বৈজ্ঞানিক নাম Geokichla citrina. প্রায় দোয়েল আকৃতির পাখিটি খাদ্য সংগ্রহ করে মূলত মাটি থেকেই। পোকামাকড়, কেঁচো এসবই প্রধান খাদ্য। গ্রাম এলাকায় মাটি থেকে খুঁটে খুঁটে খাবার খেতে খেতে মাঝেমধ্যেই ঢুকে পড়ে গেরস্ত বাড়ির উঠানে। খুব নিরীহ পাখিটির শত্রুর হাত থেকে ডিম বা ছানাদের রক্ষা করার প্রতিরোধ ব্যবস্থা বলতে তীক্ষ্ণ ধাতব কণ্ঠের হুইসেল ছাড়া কিছু নেই বললেই চলে। তাই স্বাভাবিকভাবেই যতটা সম্ভব নিভৃতে থাকতে পছন্দ করে।
গ্রীষ্ম থেকে শরৎ- তিন মাস শিকড়, লতাপাতা, ঘাস দিয়ে শক্তপোক্ত শৈল্পিক বাড়ি বানায় উঁচু ঝোপ বা সুপারি গাছের পাতায়। কেবল দেখার সৌন্দর্যই নয়, গায়ক পাখি হিসেবেও কমলা বউ এর বেশ খ্যাতি আছে। ঝোপঝাড়ের আড়ালে এদের মিষ্টি গান শোনার সৌভাগ্য যে কারও হতে পারে।
বলাই বাহুল্য, পাখিটির নাম এসেছে তার গায়ের উজ্জ্বল কমলা রং থেকে। মাথা, ঘাড়, গলা, চিবুক, পেট- সবটাই কমলা। গলায় খানিকটা আর লেজের তলদেশ সাদা। পিঠ থেকে লেজের উপরিভাগ ধূসর, ঠোঁট কালচে। ঘাড়ের কাছে ডানার প্রান্তে গোল গোল সাদা ফোঁটা। পা জোড়া গোলাপি রঙের। ফেব্রুয়ারি থেকে জুনে মেয়ে পাখি গোলাপি-মাখনরঙা ডিম পাড়ে একসঙ্গে ৪টি। ডিম ফুটে ছানা হতে সময় লাগে ১৪ দিন।
সাধারণত ঝোপঝাড় আর গ্রামীণ পরিবেশ পছন্দ করলেও শহরাঞ্চলে কমলা দামার দেখা মিলে মাঝেমধ্যে। বুয়েট ক্যাম্পাসেই দ্বিতীয়বার দেখা পাওয়ার আগে পাখিটির দেখা পেয়েছিলাম বোটানিক্যাল গার্ডেনে। তবে শহরাঞ্চলে গাছের সংখ্যা কমার সঙ্গে সঙ্গে কমছে এই গায়ক পাখির সংখ্যাও।
আবার পোকামাকড় নিধনে ব্যবহৃত কীটনাশকের ব্যবহার খাদ্যের পরিমাণও কমিয়ে দিচ্ছে। গত কয়েক দশকে শুধু হংকংয়ে কমলা দামার সংখ্যা বৃদ্ধির হার লক্ষ্য করলেই দেখা যায় বনায়নের মাধ্যমে সুন্দর এই পাখিটিকে শহরাঞ্চলে আবার ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।