কুয়েত সরকার দেশের ডিজিটাল অবকাঠামো আধুনিকীকরণ ও বৈশ্বিক সংযোগ বাড়াতে নতুন ইলেকট্রনিক ভিসা (ই-ভিসা) চালু করেছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই নতুন প্ল্যাটফর্মে চার ধরনের ভিসার সুবিধা পাওয়া যাবে— পর্যটন, পারিবারিক, ব্যবসায়িক ও সরকারি।
এই উদ্ভাবনী পদক্ষেপ শুধু সাধারণ পর্যটকদের জন্য নয়, বরং উপসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থানরত বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের জন্যও নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত খুলে দিয়েছে। এখন অনলাইনের মাধ্যমে সহজে আবেদন করে দ্রুত সময়ে ভিসা পাওয়া যাবে, কমে আসবে কাগজপত্র ও দাফতরিক ঝামেলা।
ই-ভিসার চারটি ক্যাটাগরি: সুবিধা ও মেয়াদ
১. পর্যটন ভিসা
সর্বোচ্চ ৯০ দিনের জন্য কুয়েত ভ্রমণের সুযোগ পাওয়া যাবে এই ভিসায়। কুয়েতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, ঐতিহাসিক স্থান ও বিনোদন উপভোগ করতে আগ্রহী বিদেশিদের জন্য এটি অত্যন্ত উপযোগী।
২. পারিবারিক ভিসা
কুয়েতে বসবাসরত প্রবাসীরা তাদের পরিবারের সদস্যদের ৩০ দিনের জন্য আমন্ত্রণ জানাতে পারবেন। পরিবার পুনর্মিলনের পথ আরও সহজ হবে।
৩. ব্যবসায়িক ভিসা
উদ্যোক্তা, পেশাজীবী ও বাণিজ্য প্রতিনিধিদের জন্য ৩০ দিনের জন্য ভিসা দেয়া হবে যারা কুয়েতে সেমিনার, মিটিং বা ব্যবসায়িক আলোচনায় অংশ নিতে চান।
৪. সরকারি ভিসা
সরকারি আমন্ত্রণসাপেক্ষে কূটনৈতিক বা সরকারি প্রতিনিধি দল যারা দ্বিপাক্ষিক বৈঠক কিংবা আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিতে চান, তাদের জন্য এই ভিসা প্রযোজ্য।
অনলাইনে আবেদন পদ্ধতি
ই-ভিসা পেতে হলে কুয়েত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সরকারি ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। এতে সময় ও খরচ দুটোই বাঁচবে এবং দীর্ঘপ্রতীক্ষিত অনুমোদন প্রক্রিয়া আরও গতিশীল হবে।
ডিজিটাল রূপান্তরের অংশ এই উদ্যোগ
এই ই-ভিসা উদ্যোগ কুয়েতের বৃহৎ ডিজিটাল রূপান্তর পরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। সরকার কুয়েতকে আধুনিক নাগরিকসেবার মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। একইসঙ্গে দেশটিকে আন্তর্জাতিক পর্যটন, বিনিয়োগ ও কূটনৈতিক কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ চলছে।
‘জিসিসি গ্র্যান্ড ট্যুর ভিসা’র সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ
এই উদ্যোগ উপসাগরীয় অঞ্চলের আসন্ন GCC Grand Tour Visa প্রকল্পের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এই বহুদেশীয় ভিসা চালু হলে একাধিক উপসাগরীয় দেশ ঘুরে দেখার সুযোগ সৃষ্টি হবে পর্যটকদের জন্য। ধারণা করা হচ্ছে, খুব শিগগিরই এই বহুল প্রতীক্ষিত ভিসা সিস্টেম চালু হবে।
বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের জন্য বড় সুযোগ
কুয়েত বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সভাপতি লুৎফর রহমান মুখাই আলী জানান, এই ই-ভিসা উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা মধ্যপ্রাচ্যে একটি শক্তিশালী সংগঠন গড়তে পারবেন। ফলে বাংলাদেশের বিভিন্ন পণ্য সহজে উপসাগরীয় বাজারে প্রবেশ করতে পারবে।
নতুন বিনিয়োগ ও পর্যটনের সম্ভাবনা
এই উদ্যোগে উপকৃত হবেন পর্যটক ও বিনিয়োগকারীরা। দ্রুত ভিসা সুবিধা পাওয়ার মাধ্যমে পর্যটন খাত, আঞ্চলিক বাণিজ্য এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগব্যবস্থা ও ব্যবসা প্রসারে বড় ভূমিকা রাখবে।
কুয়েত ই-ভিসা চালুর ফলে কুয়েতে যাওয়া এখন অনেক সহজ, দ্রুত ও ঝামেলামুক্ত হয়েছে। এই ডিজিটাল পদক্ষেপ বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভ্রমণকারী, বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তাদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। ভবিষ্যতে কুয়েত হতে পারে উপসাগরীয় অঞ্চলের ডিজিটাল ও কূটনৈতিক কেন্দ্রবিন্দু।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।