জুমবাংলা ডেস্ক : ঘরের মেঝেতে পড়ে রয়েছে মায়ের লাশ। এদিকে, মায়ের জন্য উঠানে বসে কাঁদছে ৫ বছরের শিশু আরাব। শিশুটি হয়তো জানেই না, তার মা আর এই পৃথিবীতে আর নেই। এমনই একটি হৃদয়বিদারক দৃশ্য চোখে পড়ে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের চকপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের বাড়িতে।
খবর পেয়ে আজ শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
মর্মান্তিক এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মাওনা ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) মিন্টু মোল্লা।
ওই গৃহবধূর নাম আমেনা (২০)। তিনি শ্রীপুর উপজেলার কেওয়া পশ্চিম খন্ড গ্রামের মৃত ফরিদুল আলমের মেয়ে। ৮ বছর আগে চকপাড়া গ্রামের মৃত গুঞ্জুর আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে আমেনার বিয়ে হয়। আমেনার ৫ বছর বয়সী একটি ছেলে ও দেড় বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে।
জানা গেছে, স্বামী-দেবর-শাশুড়ি মিলে গৃহবধূ আমেনাকে ওপর নির্যাতন করতেন। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে বহুবার সালিশ হয়েছে। তবুও আমেনার ওপর নির্যাতন বন্ধ হয়নি। গতকাল শুক্রবার দুপুরে তাদের মধ্যে আবারও ঝগড়া হয়। ওইদিন রাত ১১টার দিকে আমেনাকে মারধর করে রাস্তার পাশে ফেলে রাখে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পরে প্রতিবেশীরা আমেনাকে উদ্ধার করে আবারও ওই বাড়িতে রেখে আসে। আজ সকালে ওই বাড়িতে কাউকে দেখতে না পাওয়ায় স্থানীয় কয়েকজন মিলে ওই বাড়িতে যান। এসময় ঘরের মেঝেতে আমেনার মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
আমেনার স্বজনদের অভিযোগ, যৌতুকের জন্য আমেনার স্বামী আনোয়ার হোসেন, দেবর দেলোয়ার হোসেন, শাশুড়ি আনোয়ারা, মামা শ্বশুর দুলাল ও মামী শাশুড়ি রেনু পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে মরদেহ ঘরের মেঝে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে এসআই মিন্টু মোল্লা জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ভিকটিমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। স্বামীসহ বাড়ির লোকজন পলাতক আছে। মরদেহের গলার নিচে জখমের চিহ্ন রয়েছে। মৃত্যুরকারণ নিশ্চিত হওয়ার জন্য মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে। স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তীকালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে আমেনার মা মনোয়ারা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই স্বামী-দেবর-শাশুড়ি যৌতুকের জন্য আমেনাকে নির্যাতন করত। আমি মেয়ের সুখের জন্য ঘরের আসবাবপত্রসহ কয়েক লাখ টাকা দিয়েছি। কিছুদিন আগে ১০ হাজার টাকা দিয়েছি। তবু বন্ধ হয়নি আমেনার ওপর নির্যাতন। আমার মেয়েকে তারা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।