ফিলিপাইন সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ফাং ওয়াং প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। আজ রোববার গভীর রাতে এটি স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি এগিয়ে আসতে থাকায় দেশটির পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলীয় বিভিন্ন এলাকা থেকে দশ লাখের বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

পূর্ববর্তী ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি
এর আগে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় কালমায়েগি ফিলিপাইনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটায়। সেই ঘূর্ণিঝড়ে অন্তত ২০৪ জনের মৃত্যু হয় এবং ১০৯ জন নিখোঁজ হন। ভিয়েতনামেও ওই ঘূর্ণিঝড়ে পাঁচজনের মৃত্যু ঘটে।
ফাং ওয়াংয়ের গতিবেগ ও সতর্কতা
ফিলিপাইনের বায়ুমণ্ডলীয়, ভূ-ভৌতিক ও জ্যোতির্বিজ্ঞান পরিষেবা প্রশাসন (পিএজিএএসএ) জানিয়েছে, স্থানীয়ভাবে ‘উওয়ান’ নামে পরিচিত এই ঘূর্ণিঝড় আজ রাতের প্রথম দিকে অরোরা প্রদেশে স্থলভাগে আঘাত হানবে। এর সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার এবং দমকা হাওয়া ঘণ্টায় ২৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। কাতানদুয়ানেস, ক্যামারিনেস সুর ও অরোরা প্রদেশের জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা সংকেত নম্বর ৫ জারি করা হয়েছে, আর ম্যানিলা ও আশপাশের প্রদেশে সংকেত নম্বর ৩ জারি রয়েছে।
প্রভাবিত এলাকা ও স্থানীয় পরিস্থিতি
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ছোট দ্বীপ কাতানদুয়ানেসে ঘূর্ণিঝড় সরাসরি আঘাত হানতে পারে। আজ ভোর থেকে সেখানে প্রবল বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া বইছে। উপকূলীয় সড়কগুলোতে সমুদ্রের ঢেউ প্রবলভাবে ধাক্কা দিচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা এডসন কাসারিনো বলেন, “ঢেউয়ের গর্জনে মনে হচ্ছিল মাটি কাঁপছে।”
শনিবার দ্বীপের বাসিন্দারা ঘরের চাল মজবুত করার চেষ্টা করেছেন। উদ্ধার বিভাগের কর্মকর্তা রবার্টো মন্টেরোলা জানান, বাসিন্দারা ঐতিহ্যবাহীভাবে বড় দড়ি দিয়ে ঘরের চাল মাটিতে বেঁধে রাখছেন যেন বাতাসে উড়ে না যায়।
আশ্রয় ও উদ্ধার তৎপরতা
লুজন দ্বীপের সোরসোগন শহরে কিছু মানুষ গির্জায় আশ্রয় নিয়েছেন। অরোরা প্রদেশে উদ্ধারকারী দলগুলো বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে উঁচু স্থানে যেতে বলছেন। আবহাওয়াবিদ বেনিসন এস্তারেজা জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ২০০ মিলিমিটার বা এর বেশি বৃষ্টি হতে পারে, যা ব্যাপক বন্যার সৃষ্টি করতে পারে।
ফিলিপাইন সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ফাং ওয়াং দেশজুড়ে তীব্র সতর্কতা সৃষ্টি করেছে। উচ্চ গতিবেগের বাতাস, প্রবল বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কায় বিপুল সংখ্যক মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে। আবহাওয়াবিদদের মতে, এই ঘূর্ণিঝড় ফিলিপাইনের পূর্বাঞ্চলে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির কারণ হতে পারে।
জেনে রাখুন-
১. ঘূর্ণিঝড় ফাং ওয়াং কোথায় সৃষ্টি হয়েছে?
ঘূর্ণিঝড় ফাং ওয়াং ফিলিপাইন সাগরে সৃষ্টি হয়েছে এবং এটি বর্তমানে দেশের পূর্বাঞ্চলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
২. ঘূর্ণিঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ কত?
এই ঘূর্ণিঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার এবং দমকা হাওয়া ঘণ্টায় ২৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
৩. কোন কোন এলাকায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে?
কাতানদুয়ানেস, ক্যামারিনেস সুর, ও অরোরা প্রদেশে সর্বোচ্চ সতর্কতা সংকেত নম্বর ৫ জারি করা হয়েছে।
৪. ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কী ধরনের ক্ষতি হতে পারে?
প্রবল বাতাস, বৃষ্টিপাত ও জলোচ্ছ্বাসে ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া, গাছপালা উপড়ে পড়া ও বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।
৫. ঘূর্ণিঝড়ের সময় মানুষ কীভাবে নিরাপদ থাকতে পারেন?
ঘূর্ণিঝড়ের সময় স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে চলা, উঁচু স্থানে আশ্রয় নেওয়া এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ থেকে দূরে থাকা উচিত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



