জুমবাংলা ডেস্ক : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) আবাসিক হলগুলোর পক্ষ থেকে বুধবার (১৩ এপ্রিল) একযোগে শিক্ষার্থীদের মাঝে ইফতার বিতরণ করা হয়েছে। হল কর্তৃপক্ষের উপস্থিতি ও ব্যবস্থাপনায় সব হলে ইফতার বিতরণ করা হলেও উল্টো চিত্র ছিল সাদ্দাম হোসেন হলে। এই হলে গিয়ে দেখা যায় হলের ছাত্রলীগ কর্মীরা নিজেদের মতো করে ইফতার বিতরণ করছেন। এ সময় প্রভোস্ট, আবাসিক শিক্ষক বা হলের কোনো কর্মকর্তার দেখা মেলেনি।
তালা ঝুলছিল প্রভোস্টের কার্যালয় ও হল অফিসে। বিকেলে উপাচার্য ইফতার বিতরণ কার্যক্রম পরিদর্শনে এসে হল কর্তৃপক্ষের কাউকে না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
হলটির আবাসিক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মীরা জানান, হলের কর্মকর্তারা বিকেল ৩টার মধ্যেই হল ছেড়ে চলে যান। যাওয়ার আগে হলের কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম হলের ছাত্রলীগকর্মী আসিফ আহমেদ শিমুল ও মৃদুল হাসান রাব্বীকে শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দকৃত ইফতারের তিন শ পঞ্চাশ প্যাকেট খাবার বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে যান। হলের এক পরিচ্ছন্নতাকর্মী তাদেরকে এসব প্যাকেট সরবরাহ করেন।
ছাত্রলীগকর্মী আসিফ আহমেদ শিমুল বলেন, ‘আমরা হল অফিসে কথা বলতে গিয়েছিলাম। তখন সাড়ে তিন শ প্যাকেট খাবার আমাদের হাতে দিয়ে বণ্টন করতে বলা হয়েছে। হলের পরিচ্ছন্নতাকর্মী মাধব প্যাকেটগুলো আমাদের দিয়েছে। আমরা আমাদের সাধ্যমতো বিতরণের চেষ্টা করেছি। এসব হল প্রশাসনের গাফিলতির ফল।’
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অন্য হলগুলোতে আবাসিকতা কার্ডের ভিত্তিতে টোকেন পদ্ধতিতে ইফতার বিতরণ করা হলেও সাদ্দাম হলে এমন কোনো ব্যবস্থা ছিল না। ছাত্রলীগকর্মীরা তাদের ইচ্ছেমতো বিতরণ করেছেন। শিক্ষার্থীদের অনেকের আবাসিকতা থাকা সত্বেও ইফতার নিতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন বলে অভিযোগ করেন। হল প্রশাসন কর্তৃক ছাত্রলীগকর্মীদের হাতে দায়িত্ব দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা।
হলটির আবাসিক শিক্ষকদের দাবি হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. গৌতম কুমার তাদেরকে এ বিষয়ে কিছুই জানাননি। এ নিয়ে তারাও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আবাসিক শিক্ষক ড. শেখ শাহিনুর রহমান বলেন, ‘ইফতারির বিষয়ে আমাদের কোন আবাসিক শিক্ষক জানেনই না। ইফতার বিতরণ নিয়ে প্রভোস্ট আমাদের কিছু বলেননি।’
এ বিষয়ে হলের কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ৩টার সময় চলে আসছি। আর কেউ যাবো না জন্য হলের ছাত্রলীগকর্মী শিমুল ও রাব্বিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ওরা বলল রুমে রুমে গিয়ে ইফতার পৌঁছে দিবে।’
এদিকে, প্রথমবারের মতো একযোগে হলগুলোতে ইফতার বিতরণ কার্যক্রম পরিদর্শন করতে হলগুলোতে যান উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গির হোসেন। তারা সাদ্দাম হোসেন হলে গিয়ে খোঁজাখুঁজি করেও হল প্রশাসনের কাউকে না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এসময় শিক্ষার্থীরা তাদের নিকট ইফতার বন্টনে অব্যবস্থাপনাসহ হল প্রশাসনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরেন।
এ বিষয়ে হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. গৌতম কুমারের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি।
উপাচার্য অধ্যপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘আমি সাদ্দাম হল পরিদর্শনে গিয়ে খুবই আশ্চর্য হয়েছি। সেখানে কোনো প্রশাসন আছে বলে মনে হয়নি। আমার কাছে মনে হয়েছে, বর্তমানে যিনি প্রভোস্টের দায়িত্ব আছেন, তার এ বিষয়ে আগ্রহের ঘাটতি রয়েছে। আমরা দ্রæতই এ বিষয়ে একটা পদক্ষেপে যাব।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।