জুমবাংলা ডেস্ক : চলতি বছরকে ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণ বছর বলে অভিহিত করেছে ইউরোপীয় জলবায়ু পর্যবেক্ষণ সংস্থা কোপার্নিকাস। সংস্থাটির মতে, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাওয়ার ‘প্রায় নিশ্চিত’ ইঙ্গিত রয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে আজারবাইজানে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনের পূর্বেই এই সতর্কবার্তা এসেছে। জলবায়ু সম্মেলনে সাধারণত কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে পদক্ষেপ গ্রহণের গতি বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়।
কোপার্নিকাসের তথ্য অনুযায়ী, গত অক্টোবর মাসে বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছায়। এটা ২০২৩ সালের একই সময়ের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। তাপমাত্রার নতুন মাইলফলক গড়ার পাশাপাশি স্পেনে ভয়াবহ বন্যা এবং যুক্তরাষ্ট্রে হারিকেন মিলটনসহ বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন চরম আবহাওয়ার ঘটনা ঘটে।
সংস্থাটি জানায়, ২০২৪ সালের গড় তাপমাত্রা প্রাক-শিল্প যুগের ১৮৫০-১৯০০ সালের গড়ের তুলনায় ১.৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি হবে। তবে এটি প্যারিস চুক্তির লঙ্ঘন বলে ধরা হবে না। কারণ, চুক্তির তাপমাত্রা সীমা নির্ধারণ করা হয় দীর্ঘমেয়াদী সময়ে।
কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিসের (C3S) উপ-পরিচালক সামান্থা বার্জেস বলেন, ২০২৪ সালটি রেকর্ডকৃত ইতিহাসের উষ্ণতম বছর হবে এবং প্রথমবারের মতো প্রাক-শিল্প স্তরের তুলনায় ১.৫ ডিগ্রির বেশি উষ্ণতা অর্জন করবে।
জাতিসংঘের জলবায়ু আলোচনায় আজারবাইজানে যে গুরুত্বপূর্ণ কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হবে, তার পূর্বেই বৈশ্বিক তাপমাত্রার এমন বেড়ে যাওয়া সতর্ক সংকেত দেয়। যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী বিজয়ের পরিপ্রেক্ষিতে এই আলোচনা হবে। ট্রাম্প অতীতে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন এবং প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করেছিলেন। পরবর্তীতে তার উত্তরসূরি জো বাইডেন চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রকে ফিরিয়ে আনলেও, ট্রাম্প পুনরায় চুক্তি থেকে বের হওয়ার হুমকি দিয়েছেন।
বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বৃদ্ধির পাশাপাশি বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসের ঘনত্বও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রতিটি দশমাংশ ডিগ্রির উষ্ণতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতির মাত্রাও বেড়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘ গত মাসে বলেছিল, বর্তমান গতিতে চললে উষ্ণতা ৩.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যেতে পারে।
বিশ্ব উষ্ণায়ন কেবল তাপমাত্রা বৃদ্ধির বিষয় নয়, বরং এর ফলে সাগর-মহাসাগর ও বায়ুমণ্ডলে অতিরিক্ত উত্তাপজনিত বিভিন্ন প্রভাব রয়েছে। গরম বাতাস অধিক জলীয়বাষ্প ধারণ করতে পারে এবং উষ্ণ সাগরপৃষ্ঠের ফলে বাষ্পীভবন বাড়ে, যা ঝড় ও ভারী বর্ষণ তীব্রতর করে তোলে।
কোপার্নিকাস জানিয়েছে, গত অক্টোবর মাসে ইউরোপ, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল এবং অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে গড় বৃষ্টিপাতের হার ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। যুক্তরাষ্ট্রে চলমান খরাও জনজীবনকে প্রভাবিত করেছে।
কোপার্নিকাস বিভিন্ন উপগ্রহ, জাহাজ, বিমান এবং আবহাওয়া স্টেশনের মাধ্যমে প্রাপ্ত ডেটা ব্যবহার করে তার বিশ্লেষণ প্রকাশ করে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, বর্তমান সময়টি গত ১,০০,০০০ বছরের মধ্যে পৃথিবীর উষ্ণতম সময়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।