আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ‘শার্ক ট্যাঙ্ক ইন্ডিয়া’-র বিচারক নমিতা থাপার এখন অনেকের কাছেই রোল মডেল। কেমন ছিল তাঁর বেড়ে ওঠা? এক শক্তিশালী, আত্মবিশ্বাসী নারী। লোকে তাঁকে দেখে এমনটাই ভাবেন। টেলিভিশন দুনিয়ায় নমিতা থাপার এখন রোল মডেল। কিন্তু আগে সব কিছুই ছিল প্রতিকূল। আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলতে কঠিন লড়াই রয়েছে তাঁর জীবনে, সেই অধ্যায় অনেকেরই অজানা।
সম্প্রতি লেখক চেতন ভগতের সঙ্গে আড্ডায় পুরনো কথা তুলে ধরলেন ‘শার্ক ট্যাঙ্ক ইন্ডিয়া’ রিয়্যালিটি শোর বিচারক। রক্ষণশীল গুজরাতি পরিবারে বেড়ে ওঠা নমিতা বরাবরই হীনমন্যতায় ভুগতেন। সমাজের চোখে তিনি ততটা আকর্ষণীয় ছিলেন না। লোকে তাঁকে বোকা, মাথামোটা বলত। এমনকি পরিবারের থেকেও পেয়েছেন অবহেলা, অনাদর। পরীক্ষায় দ্বিতীয় হলে তিনি ভেঙে পড়তেন। নিজেকে অপ্রয়োজনীয়, মূল্যহীন মনে হত বয়ঃসন্ধির নমিতার।
নমিতা চেতনকে বললেন, ‘‘ছোটবেলায় আমি এমন ছিলাম না। আমার চেহারা ভারী ছিল। মুখে অবাঞ্ছিত লোম, ব্রণর উৎপাত। কেউ আমার দিকে তাকাত না। ছেলেদের প্রতি উল্টে আমিই আকৃষ্ট হতাম। বিপরীতে কখনও সাড়া পাইনি। কিন্তু কৈশোরে শরীর নিয়ে কাউকে কথা শুনতে হলে সেই সব স্মৃতি পাকাপাকি ক্ষত তৈরি করে। ক্লাসে আমায় মরাঠি ভাষায় ‘গোঁফওয়ালা মেয়ে’ বলে ডাকত ডাকত সবাই।”
নমিতা আরও বলেছিলেন, ‘‘আমিও নিজেকে খুব কুৎসিত মনে করতাম। আত্মসম্মানবোধ আমার তৈরি হয়নি। প্রথম বার যখন নিজেকে আবিষ্কার করি, একটু একটু করে ভাল লাগতে শুরু করে নিজেকে। তখন আমার ২১ বছর বয়স। তখন আমি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হয়েছি।’’
অভিনেত্রীর আক্ষেপ, নিজেকে অন্যের চোখ দিয়ে দেখতে গিয়ে ভুল করেছেন। ২১ বছর সময় নিয়েছেন নিজেকে ভালবাসতে। এখন কেউ তাঁর দশম শ্রেণির পরীক্ষার ফল নিয়ে চিন্তিত নন। সেটাই যে তাঁর পরিচয় নয়, সেটা বুঝতে দেরি হয়েছে অভিনেত্রীর।
তাঁর কথায়, ‘‘আমার জীবনের সেরা বছরগুলো নষ্ট হল। যখন আমি গাছে চড়তে পারতাম, প্রাণ খুলে হাসতে পারতাম, তখন কিছুই করিনি। আফসোস হয় এখন। নিজের অমর্যাদা করে জীবনের সব আনন্দ দূরে ঠেলেছি। ভুল বুঝেছি বাবাকেও। আসলে সমাজের দেখিয়ে দেওয়া পথে মহিলা হয়ে ওঠা তখন আমার কাছে জরুরি হয়ে উঠেছিল।’’
নতুন প্রজন্মের কাছে তাই বার্তা দিতে চান নমিতা। পরীক্ষার ফল কিংবা রূপ দিয়ে নিজের প্রতি কড়া না হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরতে চান নিজের বড় হওয়া।
জানান, সংগ্রামের পথ ধরেই তিনি এক জন দয়ালু, সহানুভূতিশীল মানুষ হতে পেরেছেন। দর্শকরাও তাঁকে ভালবেসে আপন করে নিয়েছেন, যা বড় সাফল্য বলে মনে করেন তিনি। সফল প্রথম সিজনের পর মানুষের ভালবাসায় আবারও ফিরবে ‘শার্ক ট্যাঙ্ক ইন্ডিয়া’। বছর শেষেই আসবে দ্বিতীয় সিজন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।