জুমবাংলা ডেস্ক : সপ্তাহের শুরুতে, সোমবার (৫ মে) লেনদেনের শুরুতেই স্বর্ণের দাম হঠাৎ করে ২ শতাংশেরও বেশি বেড়ে গেছে। বিশ্লেষকদের মতে, ডলারের দুর্বলতা, বাজারে ভালো স্পট চাহিদা, এবং বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে ঝুঁকি এড়ানোর প্রবণতা এই ঊর্ধ্বগতির পেছনে মূল ভূমিকা রাখছে।
বিশ্ববাজারে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার বাণিজ্য উত্তেজনা যেমন বিনিয়োগকারীদের নজরে এসেছে, তেমনি স্বর্ণের প্রতি ক্রমবর্ধমান চাহিদাও আলোচনায় উঠে এসেছে।
এমসিএএক্সে জুন ৫ চুক্তি অনুযায়ী, বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে স্বর্ণের দাম দাঁড়ায় প্রতি ১০ গ্রামে ৯৪ হাজার ৬১৫ ডলার, যা আগের দিনের তুলনায় ২.১৪ শতাংশ বেশি। আন্তর্জাতিক বাজারেও স্বর্ণের দর ১ শতাংশের বেশি বেড়েছে। বিনিয়োগকারীরা এখন যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য আলোচনা এবং ফেডারেল রিজার্ভের নীতিগত অবস্থানের দিকে নজর রাখছেন—খবর লাইভমিন্টের।
যুক্তরাষ্ট্রে মন্দার শঙ্কা এবং ডলারের পতন
ডলারের ইনডেক্স প্রায় অর্ধ শতাংশ কমে গেছে। কারণ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে মন্দার শঙ্কা বাড়াকে দায়ী করা হচ্ছে। ফলে দেশটির মুদ্রা চাপের মুখে পড়েছে।
২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বার্ষিক হারে ০.৩ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। এপ্রিল মাসে পরপর দ্বিতীয়বারের মতো দেশটির শিল্প উৎপাদনেও পতন দেখা গেছে। আইএসএম-এর তৈরি ম্যানুফ্যাকচারিং পিএমআই সূচক মার্চের ৪৯.০ থেকে এপ্রিল মাসে নেমে এসেছে ৪৮.৭-এ, যা গত পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
ডলার দুর্বল হলে অন্যান্য মুদ্রায় স্বর্ণ কিনতে খরচ কমে যায়। এর ফলে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের চাহিদা বৃদ্ধি পায় এবং দাম পায় জোরালো সমর্থন।
বিনিয়োগকারীদের নজর ফেডের দিকে
যদিও যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য আলোচনা এখনো সোনার দামের প্রধান চালক হিসেবে কাজ করছে, তবে বিনিয়োগকারীদের ফোকাস এখন মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক পূর্বাভাস এবং সুদের হারের সম্ভাব্য পরিবর্তনের দিকে।
ধারণা করা হচ্ছে, এই সপ্তাহে ফেড সুদের হার অপরিবর্তিত রাখতে পারে। তবে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে যে, ফেড ভবিষ্যতে সুদের হার কমাতে পারে।
বাজার বিশ্লেষকের ব্যাখ্যা
এলকেপি সিকিউরিটিজের কমোডিটি ও মুদ্রা বিশ্লেষক ও ভাইস প্রেসিডেন্ট যতীন ত্রিবেদী বলেন, “মার্কিন ফেডার সুদের হার কমাতে পারে—এমন প্রত্যাশায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক ক্রয়চাপ দেখা দিয়েছে, যার ফলে সোনার দাম হঠাৎ করে বেড়ে গেছে।”
তিনি আরও বলেন, “বাজারে নতুন করে ঝুঁকি এড়ানোর প্রবণতা, ডলারের দুর্বলতা এবং ফেডের নীতিগত অবস্থান ঘিরে আশাবাদ—এই তিনটি বিষয় মিলে স্বর্ণের উত্থানকে জোরালো সমর্থন দিচ্ছে।”
ত্রিবেদী বলেন, “এফওএমসি-র সিদ্ধান্ত ঘিরে বাজারে উৎকণ্ঠা রয়েছে, বিশেষ করে যখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং ফেড চেয়ার জেরোম পাওয়েলের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে সুদের হার নিয়ে প্রকাশ্য মতবিরোধ দেখা গেছে। যদি ফেড নরম অবস্থান নেয় বা সত্যিই হার কমায়, তবে সোনার দাম আরও বাড়তে পারে। অন্যদিকে, যদি কোনো কঠোর বার্তা আসে, তবে বাজারে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।