জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষিত নতুন মুদ্রানীতিতে ভারত ভ্রমণেচ্ছু বাংলাদেশিদের জন্য সুখবর দেয়া হয়েছে। রোববার (১৮ জুন) আগামী অর্থবছর ২০২৩-২৪ এর জন্য নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে এ কথা জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
তিনি বলেন, এখনও কোনো ধরনের কারেন্সি সোয়াপে যায়নি বাংলাদেশ। ভারতের সঙ্গে রুপি দিয়ে বাণিজ্য করার চেষ্টা চলছে। এখন কেউ ভারত যেতে চাইলে শুরুতে টাকাকে ডলারে রূপান্তর করতে হয়, পরে ভারতে গিয়ে আবার ডলারকে রুপিতে আনতে হয়। পরপর দুবার মুদ্রা ভাঙানোর ফলে মুদ্রার মান কমে যায়।
তাই ভারত ভ্রমণে মুদ্রা বিনিময়ের ঝামেলা কমাতে চলতি বছরের জুলাই-আগস্টের দিকে বাজারে বাংলাদেশে একটি ক্রেডিট কার্ড চালু করা হবে বলে জানান আব্দুর রউফ। তিনি বলেন, এই কার্ড ব্যবহারে গ্রাহকরা মুদ্রা ভাঙানোর ঝামেলা থেকে মুক্তি পাবেন।
এছাড়া চীনের সঙ্গে ইউয়ানে কারেন্সি সোয়াপের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ ব্যাংক নেয়নি।’
এদিকে দেশে নতুন টাকা ছাপানোর প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, টাকা ছাপানো মানেই যে খারাপ এমন কিছু না। কথা হচ্ছে ছাপানো টাকা কোন খাতে খরচ করা হচ্ছে তা নিয়ে। অনেক সময় তারল্য দেখা দিলে ব্যাংক বন্ড কিনে সেটা সামাল দেয়। মূলত বন্ড কেনা বা নানা মাধ্যমে সরকারকে ঋণ দিয়ে ব্যাংক প্রাইভেট খাতকে সতেজ রাখার চেষ্টা করছে।
ঘোষিত নতুন মুদ্রানীতি নিয়ে গভর্নর বলেন, এবারের মুদ্রানীতি বিগত মুদ্রানীতির থেকে আলাদা। আগেকার মুদ্রানীতি মূলত টাকা সরবরাহের দিকে জোর দিয়ে প্রস্তুত করা হতো। এবারের মুদ্রানীতিতে টাকা সরবরাহ নয় বরং মূল্যস্ফীতি কমাতে সুদহারের ওপরে জোর দিয়ে করা হয়েছে।
এবারের মুদ্রানীতিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিপিএম-৬ নীতি মেনে রিজার্ভের পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে। এছাড়া পাশাপাশি প্রথাগত নীতি মেনেও রিজার্ভ নির্ধারণ করা হবে বলে জানান গভর্নর।
নতুন মুদ্রানীতি আইএমএফের শর্ত মেনে করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে গভর্নর বলেন, ‘বিশ্বের যেসব দেশ আইএমএফের সদস্য; তাদের সবাইকে আইএমএফ ওদের রীতিগুলো মানার জন্য আহ্বান জানায়। বিশেষ করে ঋণ নিতে গেলে এসব রীতি মানতে হয়। যেখানে আইএমএফ থেকে ২ শতাংশ সুদে ঋণ নেয়া যায়, সেখানে বাকিদের সুদের পরিমাণ ৭ শতাংশ। এক্ষেত্রে যেসব শর্ত মানলে কোনো ক্ষতি নেই, আইএমএফের সেসব শর্ত মানা যেতেই পারে।’
আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী রিজার্ভ ২৪ বিলিয়ন ডলার থাকতে হবে এবং সেটা আদৌ সম্ভব হবে কিনা জানতে চাইলে গভর্নর আরও বলেন, ‘প্রথমত আইএমএফের এই শর্তটিকে শিথিল করা হয়েছে। কেননা বর্তমান পরিস্থিতিতে আমি রিজার্ভের টাকা ধরে রাখলাম আর গুরুত্বপূর্ণ খাতে টাকা দিলাম না তাতে কোনো লাভ হবে না। রোজার সময় পণ্য আমদানি কিংবা বিদ্যুতের জন্য জ্বালানি আমদানি; এসব ব্যাপারে টাকা ধরে রাখা মানে দেশে সংকটের সৃষ্টি করা। প্রয়োজনমতো রিজার্ভ থেকে টাকা খরচ করা হবে।’
‘রিজার্ভের টাকা দিয়ে ঋণপত্র (এলসি) খুলে এখনও বিলাসবহুল পণ্য আমদানি করা হচ্ছে। বিগত বছরে এত কড়াকড়ির পরেও রেকর্ড সংখ্যক বিলাসবহুল গাড়ি আমদানি করা হয়ছে। এসব রুখতে লেন্ডিং হার বাড়িয়ে দেয়া হবে। এতে করে অপ্রয়োজনীয় আমদানির পরিমাণ কমে আসবে। এতদিনের যে লেন্ডিং রেট গ্যাপ ছিল; এটি কোনো অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নয় বরং রাজনৈতিক,’ বলেন আব্দুর রউফ।
অন্যদিকে রফতানির কী পরিমাণ টাকা বিদেশের বাজারে আটকে আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেকে বলেন ১০ বিলিয়ন ডলার রফতানির টাকা বিদেশের বাজারে আটকে আছে। প্রথমত টাকার অঙ্ক ২ বিলিয়ন ডলার, দ্বিতীয়ত এটি আটকে থাকা নয়। ১৮০ দিনের মধ্যে রফতানির টাকা দেশে আসার নিয়ম। সে হিসেবে এমন কোনো বড় অঙ্কের টাকা আটকে নেই, যা নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।