বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহারকারীর প্রাইভেসি লঙ্ঘনের দাবি করা এক মামলার নিষ্পত্তিতে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হয়েছে গুগল।
মামলার অভিযোগ, ব্যবহারকারীরা ‘প্রাইভেট মোড’-এ ব্রাউজিং করার সময়ও প্রাইভেসি লঙ্ঘন করেছে মার্কিন এই সার্চ জায়ান্ট কোম্পানিটি।
এ ক্লাস অ্যাকশন মামলা নিষ্পত্তির জন্য গুগলকে অন্তত পাঁচশ কোটি ডলারের জরিমানা গুনতে হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে বিবিসি।
এর আগেও যুক্তরাষ্ট্র’সহ বেশ কয়েকটি দেশে নিজস্ব কার্যক্রম পরিচালনা নিয়ে তদন্তের মুখে পড়তে দেখা গেছে বিভিন্ন শীর্ষ প্রযুক্তি কোম্পানিকে।
এ প্রসঙ্গে বিবিসি গুগল ও বাদীপক্ষের আইনজীবিদের মন্তব্য জানতে চাইলেও কারও কাছ থেকেই তাৎক্ষণিক সাড়া মেলেনি।
গেল বৃহস্পতিবার ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের আদালতে ধার্য করা এক শুনানি আটকে দেন যুক্তরাষ্ট্রের ডিস্ট্রিক্ট বিচারক ইভন গঞ্জালেজ রজার্স। এর আগে মামলার আইনজীবিরা বলেন, উভয় পক্ষই প্রাথমিক সমঝোতায় পৌঁছেছে।
বছরের শুরুতে গুগলের মামলা খারিজের আপিল নাকচ করেছিলেন বিচারক রজার্স। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, ব্রাউজিং সংশ্লিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করার আগে গুগল ব্যবহারকারীদের অনুমতি নিয়েছে, এমন বক্তব্যের সঙ্গে একমত হতে পারছেন না তিনি।
বিবিসি বলছে, এ সমঝোতার শর্তগুলো প্রকাশ করা হয়নি। তবে, আদালতের অনুমতি পেতে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে সমঝোতার নথি প্রকাশ করতে পারেন মামলার আইনিজীবিরা।
ক্লাস অ্যাকশন মামলাটি দায়ের করেছিল নিউ ইয়র্কভিত্তিক আইনি প্রতিষ্ঠান ‘বোইএস স্কিলার ফ্লেক্সনার’, যেখানে অভিযোগ ছিল, ব্যবহারকারী গুগল ক্রোম ব্রাউজারের ‘ইনকগনিটো’ মোড বা অন্যান্য ব্রাউজারের ‘প্রাইভেট মোড’-এ ইন্টারনেট ব্রাউজ করার সময়ও তাদের কার্যক্রম ‘ট্র্যাক করেছে’ গুগল।
মামলায় উল্লেখ রয়েছে, এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীর পছন্দ এমনকি ‘সম্ভাব্য বিব্রতকর বিষয়াদি’ সম্পর্কে ‘তথ্যের ভাণ্ডার’ তৈরি করেছে গুগল।
মামলায় আরও যোগ করা হয়, গুগল যুক্তরাষ্ট্রের সকল কম্পিউটার বা ফোন থেকে ‘গোপন ও অননুমোদিত ডেটা’ সংগ্রহ করতে পারেনি।
গুগল বলেছে, ডেটা সংগ্রহ নিয়ে তারা কখনওই রাখঢাক করেনি। এমনকি প্রাইভেট মোডের ডেটা সংগ্রহ বা ব্যবহারকারীর বড় এক অংশ এর বিপরীত ভেবে থাকলেও।
সার্চ ইঞ্জিন কোম্পানিটি আরও বলেছে, প্রাইভেট ভিউয়িং মোডের ক্ষেত্রেও সার্চ হিস্টরির ডেটা সংগ্রহের বিষয়টি ‘নিজস্ব কনটেন্ট, পণ্য, বাণিজ্য ও অন্যান্য বিষয় আরও ভালোভাবে মূল্যায়ন করতে’ সাহায্য করেছে বিভিন্ন সাইটের মালিককে।
ক্রোম ব্রাউজারের ইনকগনিটো মোড তৈরি হয়েছিল ব্যবহারকারীদেরকে সার্চ হিস্টরি সেইভ না করেই ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ের সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যে। তবে, ‘গুগল অ্যানালিটিক্স’-এর মতো ফিচারের সহায়তায় ব্যবহারকারীর ভিজিট করা ওয়েবসাইটগুলো তার ব্যবহারের মাত্রা ট্র্যাক করতে পারে।
এদিকে, নিজস্ব সার্চ ব্যবস্থা ও ডিজিটাল বিজ্ঞাপন বিষয়ক কার্যক্রম নিয়ে বেশ কিছু মামলার মুখে পড়েছে গুগল।
এ মাসের শুরুতে কোম্পানিটি বলেছে, অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে গুগলের প্লে স্টোর ডিফল্ট হিসেবে রেখে প্রতিদ্বন্দ্বীদের ওপর দখলদারিত্বের অভিযোগ তোলা এক মামলার ক্ষতিপূরণ বাবদ তারা ৭০ কোটি ডলার জরিমানা দেবে। আর এ মামলা করেছিল বিভিন্ন মার্কিন অঙ্গরাজ্য।
কিছুদিন আগে মার্কিন আদালতে ফোর্টনাইট গেইমের নির্মাতা কোম্পানি এপিক গেইমসের দায়ের করা এক মামলাতেও হেরে গেছে গুগল। ২০২০ সালে দায়ের করা মামলাটিতে ভিডিও গেইম নির্মাতা কোম্পানিটি অভিযোগ তুলেছিল, গুগল অবৈধভাবে অ্যাপস্টোরে আধিপত্য বিস্তার করে প্রতিদ্বন্দ্বীদের দমিয়ে রাখছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।