বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : ইউরোপের সর্বোচ্চ আদালতে আরও একবার আইনি জটিলতার সম্মুখীন হয়েছে গুগল। সম্প্রতি গুগলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ইউরোপের একটি ই-মোবিলিটি অ্যাপকে তাঁরা নিজেদের অ্যান্ড্রোয়েড অটো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করার সুযোগ দিচ্ছে না। এটি ইউরোপের অ্যান্টিট্রাস্ট আইনের অধীনে প্রতিযোগিতা সম্পর্কিত নীতিমালার লঙ্ঘন বলে মত দিয়েছেন ইউরোপের উচ্চ আদালতের একজন উপদেষ্টা।
২০২১ সালে ইতালির অ্যান্টিট্রাস্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থা অ্যালফাবেটের গুগল ইউনিটকে ১১৩.২ মিলিয়ন ডলার (১৩৫০ কোটি টাকার বেশি) জরিমানা করেছিলো। গুগলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিলো ইতালির বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান এনটেলের ই-মোবিলিটি অ্যাপ জুসপাস-কে ‘অ্যান্ড্রোয়েড অটো’ সিস্টেম ব্যবহার করতে না দেয়া।
“অ্যান্ড্রোয়েড অটো প্ল্যাটফর্মে থার্ড-পার্টি অ্যাক্সেস দিতে গুগলের অস্বীকৃতি জানানোয় প্রতিযোগিতা সম্পর্কিত নীতিমালা লঙ্ঘন হতে পারে,” এমনটাই বলেছেন আদালতের অ্যাডভোকেট জেনারেল লায়লা মেদিনা।
ইউরোপের অ্যান্টিট্রাস্ট আইনে উল্লেখ আছে যে, একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বাজারে তাঁর আধিপত্যকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের তৈরি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা থেকে কোন থার্ড-পার্টি অ্যাপকে বঞ্চিত করতে, কিংবা ব্যবহার করায় বাঁধা সৃষ্টি করতে, অথবা প্ল্যাটফর্মটিতে অ্যাক্সেস দিতে দেরি করতে পারে না। তবে এমন কিছু করার ফলে যদি বাজারে প্রতিযোগিতা-বিরোধী মনোভাব তৈরি হয় যেটা ভোক্তাদের জন্য ক্ষতিকর এবং সার্বিকভাবে ন্যায়সঙ্গত নয়- সেক্ষেত্রে এমন কর্মকাণ্ড উক্ত আইনের পরিপন্থী বলে গণ্য হবে।
এর আগে গুগল ইতালির কাউন্সিল অব স্টেটের কাছে করা আবেদনে অ্যান্ড্রোয়েড অটো অ্যাপটিতে জুসপাস-কে অ্যাক্সেস না দেয়া প্রসঙ্গে নিরাপত্তা জনিত কারণ দেখিয়েছে। পাশাপাশি জুসপাস-কে অ্যান্ড্রোয়েড অটোর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে তোলার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নির্দিষ্ট টেমপ্লেট না থাকার বিষয়টিরও উল্লেখ আছে আবেদনে। তবে সম্প্রতি এই সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট নিজেদের অবস্থান থেকে সরে এসে বিষয়টির সমাধানে উদ্যোগ নিয়েছে।
আদালতে অ্যাডভোকেট জেনারেল মেদিনা’র সাম্প্রতিক বক্তব্যের পর গুগলের একজন মুখপাত্র বলেন, ”আমরা অ্যাডভোকেট জেনারেলের মতামত নোট করেছি এবং আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছি। মামলাটি শুরু হওয়ার পর থেকে এনেল যে টেমপ্লেট চেয়েছে সেটা যুক্ত করার জন্যও আমরা কাজ করে যাচ্ছি। অ্যান্ড্রোয়েড অটো-তে একই ধরণের অ্যাপ্লিকেশন ইতোমধ্যেই সারা বিশ্বে প্রচলিত আছে।”
সাম্প্রতিক সময়ে অ্যাপল, মেটা, টেসলার মতো টেক জায়ান্টরা ইউরোপে অ্যান্টিট্রাস্ট ইস্যুতে বিপাকে পড়েছে। আমারিকাতেও ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের ‘অ্যান্টিট্রাস্ট আইন’ প্রযুক্তি খাতের রাঘব বোয়ালদের জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এই ইস্যুতে সিলিকন ভ্যালির নেতাদের একটি বড় অংশ আমেরিকার আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে মাঠেও নেমেছেন।
গুগলের সাম্প্রতিক এই অ্যান্টিট্রাস্ট মামলায় শেষ পর্যন্ত কার জয় হয় সেটাই এখন দেখার বিষয়।
তথ্যসূত্র: রয়টার্স
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।