বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : আজ থেকে ২০ বছর আগেও পৃথিবীতে ইন্টারনেটের অস্তিত্ব ছিল। তবে তখন ইন্টারনেট থেকে মানুষ খুব বেশি সুবিধা নিতে পারতো না। সেই সময় ইন্টারনেট জুড়ে যে লাখ লাখ ওয়েবসাইট ছিল তার নাম মানুষের পক্ষে মনে রাখা সম্ভব ছিল না। তাই তারা মূলত বই-পুস্তক পড়ে বা বিভিন্ন আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তথ্যগুলো সংগ্রহ করে থাকত। পরবর্তীকালে গুগল সার্চ ইঞ্জিনের আবিষ্কার মানুষের জ্ঞানের অগ্রগতির পথকে বহুগুণ সুগম করে তুলেছে।
সাধারণ ভাষায় গুগল বলতে আমরা পৃথিবীর সবচাইতে বড় সার্চ ইঞ্জিন কে বুঝে থাকি। world wide web (www) বা ইন্টারনেট জুড়ে বিস্তৃত থাকা অসংখ্য ওয়েবসাইট থেকে যেকোনো ধরনের তথ্য, ছবি, ভিডিও চিত্র, বই সহ অন্যান্য সবকিছু খুঁজে বের করার একটি অনলাইন সফটওয়্যার বা টুলস হচ্ছে গুগল।
ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে ল্যারি পেজ এবং সের্গেই ব্রিন নামের দুজন পিএইচডি অধ্যয়নরত ছাত্র ছিলেন। তারা রিসার্চের অংশ হিসেবে একসাথে একটি search algorithm তৈরি করলেন। বহু চেষ্টার পরে উভয়ে যে অ্যালগরিদমটি গঠন করেছিলেন তার নাম দেন “পেজ রাঙ্ক”। অ্যালগরিদম বাস্তবায়নের পুরো এক বছর পরে পেজ বুঝতে পেরেছিলেন যে তিনি ব্যাপকভাবে গুরুত্বপূর্ণ কিছু আবিষ্কার করেছেন। কারণ এটি যে ফলাফলগুলি প্রদর্শন করছে তা অন্য যেকোনো সার্চ ইঞ্জিনের ফলাফলের চেয়ে অনেক বেশি ব্যাপ্ত।
১৯৯৬ সালের সেপ্টেম্বরে প্রধানত একটি রিসার্চ প্রজেক্ট হিসেবে চালু করা হয়েছিল গুগল কে। বিভিন্ন কঠিন পরিস্থিতি ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার পরে সফল হয় এই প্রজেক্ট। যা পরবর্তীকালে বিশ্বের জনপ্রিয়তম সার্চ ইঞ্জিন Google search নামে খ্যাতি লাভ করে। প্রাথমিক পর্যায়ে এটিকে Stanford university-র ওয়েবসাইট থেকে google.stanford.edu এবং z.stanford.edu ডোমেইনের মাধ্যমে চালু করা হয়েছিল।
তবে পরবর্তীকালে ব্যবসায়িক ভেঞ্চার-এর অঙ্গ হিসেবে গুগলের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৭ সালে। Google.com ডোমেইন নামটি প্রথম বারের মত রেজিস্টার করা হয় ১৫ সেপ্টেম্বর ১৯৯৭ সালে ।
৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৮সালে গুগল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এর প্রতিষ্ঠার সম্পূর্ণ কৃতিত্ব ল্যারি পেজ এবং সের্গেই ব্রিন-এর।
প্রায় তিন বছর কাজ করার পর, গুগল অ্যালগরিদম কোড অমিত সিংগালের কাছে হস্তান্তর হয়।
অ্যালগরিদমে অমিত সিংগালের মূল সংযোজন ছিল এর মূল কাঠামোটি পুনর্লিখন করা, যাতে সার্চ ইঞ্জিন নতুন র্যাঙ্কিংয়ের মানদণ্ড আরও সহজে অন্তর্ভুক্ত করতে পারে।
এই অ্যালগরিদমের ফলেই আজ গুগল সার্চ ইঞ্জিন শীর্ষে এবং এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে যে গুগল প্রতিষ্ঠার মাত্র আট বছরের মাথায় Google শব্দটি বর্তমান কালে ক্রিয়াপদে পরিণত হয়ে গিয়েছে।
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই সার্চ ইঞ্জিন পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি আয় করা কোম্পানি গুলোর মধ্যে অন্যতম। বিশ্ব বিখ্যাত ম্যাগাজিন ফোর্বস এর তথ্য মতে, গুগলের দৈনিক আয় প্রায় ৬ কোটি টাকা। সে হিসেবে গুগল প্রতি সেকেন্ডে ৮২ হাজার টাকা আয় করে।
গুগলের আয়ের প্রধান উৎস মূলত বিজ্ঞাপন। গুগল এডসেন্স, গুগল এডমোব ও ইউটিউব এর বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে গুগলের আয়ের সবচেয়ে বড় অংশটি আসে। এছাড়া বিভিন্ন ডিভাইস, সফটওয়্যার তৈরি ও ক্লাউড কম্পিউটিং এর মাধ্যমে গুগলের অনেক টাকা আয় হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।