লাইফস্টাইল ডেস্ক : দেশে দেশে চলছে তাপপ্রবাহ। বাংলাদেশেরও কোনও কোনও জেলায় বইছে এই তাপপ্রবাহ। তবে পরিস্থিতি চরমে পৌঁছেছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। বিশেষ করে দক্ষিণ পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোতে সম্প্রতি বইছে চরম তাপপ্রবাহ। এতে কোথাও কোথাও দাবানলেও সৃষ্টি হয়েছে।
ফ্রান্স, পর্তুগাল আর স্পেনে দাবানল মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছেন দমকলকর্মীরা। আগামী দিনগুলোতে ‘আরও চরম তাপপ্রবাহের’ পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এমতাবস্থায় আসুন জেনে নিই মানুষ ও অন্যান্য প্রাণী কীভাবে গরম সহ্য করে।
মানুষ
গরমে মানুষের শরীর থেকে ঘাম ঝরে। মস্তিষ্ক তখন বলে, “একটু শীতল হতে হবে।” একক্রাইন ঘাম গ্রন্থিগুলো তখন কাজ শুরু করে এবং শিগগিরই মুখ, বগলসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে ফোঁটা ফোঁটা ঘাম জমতে থাকে। ত্বকের সেই ঘাম বাষ্পীভূত করতে শরীর তখন অতিরিক্ত তাপকে কাজে লাগায়। এভাবে শরীর ঠান্ডা হতে থাকে। তবে বেশি গরমে মানুষ গোসল করে, আইসক্রিম খেয়ে বা ফ্যান, ছাতা, এসি ইত্যাদি ব্যবহার করেও শরীর ঠাণ্ডা করার চেষ্টা করে।
শূকর
শূকরও গরমে গোসল করে। তবে তাদের শরীরে ঘাম হয় না বলে সাধারণত কাদায় গড়াগড়ি করে। কাদা বেশিক্ষণ গায়ে থাকে, শুকাতে সময় লাগে, ওই সময় পর্যন্ত ঠাণ্ডা থাকে শূকরের শরীর।
ফেনেক শিয়াল
যেকোনও শিয়াল বা কাছাকাছি গড়নের যেকোনও কুকুরের চেয়ে অনেক বড় কান থাকে ফেনেক শিয়ালের। সেই কান ব্যবহার করে তারা শরীর ঠাণ্ডা রাখে। ফেনেক শিয়ালের দেখা মেলে মরুভূমি অঞ্চলে।। সেখানে প্রায়ই তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১২২ ডিগ্রি ফারেনহাইট)-এর চেয়েও ওপরে ওঠে। তখন ওই বড় কান দুটো রীতিমতো পাখার কাজ করে।
হাতি
সব প্রাণীর গায়ে যে লোম বা পশম থাকে তা তাদের শরীরকে গরম রাখে। কিন্তু হাতির ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ঠিক উল্টো। তাদের শরীরে খুব ছোট ছোট যে চুল বা রোম থাকে, সেগুলো শরীরকে শীতল রাখতে সহায়তা করে। প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা গবেষণা করে বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন।
উট
উট পিঠের কুঁজোয় চর্বি জমিয়ে রাখে এবং যখন খাদ্য ও পানির অভাব দেখা দেয়, তখন সেই চর্বি গলিয়েই শরীরের চাহিদা মেটায়। ওই চর্বি গরমের সময় শরীরের বাড়তি উত্তাপ বের করে দিতেও সহায়তা করে। পানি না পেলেও উট কয়েক মাস বেঁচে থাকতে পারে। পানি পেলে অবশ্য ১০০ লিটারেরও বেশি পানি পান করে তেষ্টা মিটিয়ে নেয়।
কুকুর
কুকুরের ত্বকেও ঘাম ঝরানোর গ্রন্থি নেই। তীব্র গরমে এরা থাবা এবং নাকের মাধ্যমে শরীরের তাপ বের করে। তাছাড়া তীব্র গরমে কুকুরকে যে হাঁপাতে দেখা যায়, জিহ্বা বেরিয়ে থাকে, তখন কিন্তু শরীরের অতিরিক্ত তাপ নির্গত হয়। জিহ্বা গরম হয়ে গেলে কুকুর মিনিটে ৪০০ বার পর্যন্ত শ্বাস নেয়। এর ফলে জিহ্বার আর্দ্রতা বাষ্পীভূত হয় এবং এতে শরীর শীতল হয়।
সায়েগা সারং
‘সায়েগা সারং’বা সায়েগা অ্যান্টেলোপ। এর বৈজ্ঞানিক নাম সায়েগা টাটারিকা। এটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের একটি প্রাণী। বর্তমানে এই প্রাণীকে কাজাখাস্তানের বনাঞ্চলে বেশি দেখা যায়। এছাড়াও উত্তর আমেরিকা, রাশিয়া, উজবেকিস্তান ও মঙ্গোলিয়াতেও এর অস্তিত্ব রয়েছে।
অদ্ভুত-চতুর এই প্রাণীটি দেখতে কিছুটা হরিণের মতো। তবে অন্য সব প্রাণীর চেয়ে আলাদা এটি নাকের জন্য, যা ঋতুভেদে আধুনিক বিজ্ঞানের আবিষ্কার এয়ার-কন্ডিশনার বা শীতাতপ যন্ত্রের মতো। গ্রীষ্মকালে প্রাণীটির নাক গরম বাতাস ঠাণ্ডা করে ফুসফুসে পৌঁছায়। আবার শীতকালে করে ঠিক তার উল্টো, অর্থাৎ শীতের সময় ঠাণ্ডা বাতাস উষ্ণ করে ভেতরে নেয় এরা। সূত্র: ডয়েচে ভেলে, বিবিসি, উইকিপিডিয়া
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।