দেশে শীতের শুরুতে তীব্রতা কিছুদিন কম থাকলেও গত কয়েক দিনে হঠাৎ করেই ঠান্ডা বেড়ে গেছে। ঘন কুয়াশায় ঢেকে গেছে দেশে। এমন আবহাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে, ফলে সর্দি-কাশি থেকে শুরু করে নানা শারীরিক সমস্যায় ভোগেন অনেকেই। তাই শীতকালে শুধু খাবার নয়, দৈনন্দিন অভ্যাস বিশেষ করে গোসলের নিয়ম ও পানির তাপমাত্রা নিয়েও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

অনেকের ধারণা, শীতকালে ঘাম কম হয় বলে প্রতিদিন গোসল না করলেও চলে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীতকালেও সঠিক নিয়মে গোসল করা স্বাস্থ্যকরই নয়, বরং শরীর ও মনের জন্য বেশ উপকারী। সমস্যা হয় মূলত ভুল পদ্ধতিতে গোসল করলে। তাই শীতে গোসলের সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখা জরুরি।
পানির তাপমাত্রা ঠিক রাখুন
শীতে বেশিরভাগ মানুষই গরম পানি ব্যবহার করেন। তবে অতিরিক্ত গরম পানি ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, গোসলের জন্য কুসুম গরম বা হালকা গরম পানিই সবচেয়ে উপযোগী। খুব গরম পানিতে গোসল করলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া, চুলকানি কিংবা র্যাশের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় ত্বক সহজেই রুক্ষ হয়ে পড়ে। তাই গোসলের সময় স্ক্রাবার বা লুফা দিয়ে জোরে ঘষা এড়িয়ে চলাই ভালো। গোসল শেষে তোয়ালে দিয়ে আলতোভাবে শরীর মুছে নিতে হবে। ত্বক পুরো শুকানোর আগেই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়। এই সময় গ্লিসারিন, অলিভ অয়েল বা নারকেল তেল ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সহায়ক।
শীতে দীর্ঘ সময় ধরে গোসল করা উচিত নয়। চিকিৎসকদের পরামর্শ, ৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যেই গোসল শেষ করা ভালো। বেশি সময় পানিতে থাকলে ত্বকের স্বাভাবিক তেল নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
শীতে কি প্রতিদিন গোসল জরুরি?
বিশ্বজুড়ে গোসলের অভ্যাসে ভিন্নতা রয়েছে। হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র বা অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে মানুষ সাধারণত প্রতিদিন গোসল করেন, আবার চীনের মতো কিছু দেশে সপ্তাহে এক বা দুইবার গোসল করাই প্রচলিত। তবে ভারতের মতো পরিবেশ দূষণপ্রবণ দেশগুলোতে প্রতিদিন গোসল করাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। নিয়মিত গোসল শরীর পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি নানা রোগের ঝুঁকিও কমায়।
গোসলের উপকারিতা
- চিকিৎসকদের মতে, নিয়মিত ও সঠিকভাবে গোসল করার বেশ কিছু শারীরিক ও মানসিক উপকার রয়েছে।
- গরম পানিতে গোসল রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং শরীরের ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
- নিয়মিত গোসল মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও ভূমিকা রাখে।
- ঘুমানোর আগে কুসুম গরম পানিতে গোসল করলে শরীর আরাম পায়, ফলে ঘুমের মান উন্নত হয়।
- গবেষণায় দেখা গেছে, গরম পানিতে গোসল স্ট্রেস কমায় এবং মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়, যা শীতকালে বিশেষভাবে উপকারী।
সব মিলিয়ে বলা যায়, শীতকালে গোসল এড়িয়ে যাওয়ার বদলে সঠিক নিয়ম মেনে গোসল করাই সবচেয়ে ভালো। এতে শরীর থাকবে সুস্থ, ত্বক থাকবে সজীব আর মনও থাকবে প্রফুল্ল। শীত উপভোগ করতে চাইলে শরীরের যত্ন নেওয়াটাই হোক প্রথম অগ্রাধিকার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।


