Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home গর্ভাবস্থায় নিরাপদ ভ্রমণ: মা ও শিশুর সুস্থতায় জরুরী পরামর্শ
    লাইফস্টাইল ডেস্ক
    ট্র্যাভেল

    গর্ভাবস্থায় নিরাপদ ভ্রমণ: মা ও শিশুর সুস্থতায় জরুরী পরামর্শ

    লাইফস্টাইল ডেস্কMynul Islam NadimJuly 21, 202511 Mins Read
    Advertisement

    সোনালী রোদ্দুরে ঢাকা ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন শারমিন। দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টারে, শাহজালাল বিমানবন্দরে যাওয়ার পথে হঠাৎ তলপেটে ব্যথা! আতঙ্কিত স্বামী দ্রুত তাকে নিকটবর্তী ক্লিনিকে নিয়ে গেলেন। শারমিনের গল্পটি বিচ্ছিন্ন নয়। বাংলাদেশে প্রতি বছর লক্ষাধিক গর্ভবতী নারী কর্মসূত্রে, পরিবার পরিজনের সাথে দেখা করতে কিংবা জরুরী প্রয়োজনে ভ্রমণ করেন। কিন্তু গর্ভাবস্থায় নিরাপদ ভ্রমণ নিয়ে সচেতনতার অভাবই প্রায়শঃ বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

    গর্ভাবস্থায় নিরাপদ ভ্রমণ

    ডাঃ তাহমিনা হক, প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বললেন, “গর্ভাবস্থায় ভ্রমণ একেবারে নিষিদ্ধ নয়, তবে সেটা হতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক। অপরিকল্পিত ভ্রমণ প্রি-ম্যাচিওর লেবার, রক্তক্ষরণ, এমনকি গর্ভপাতের মতো ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকাও বলছে, ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভাবস্থায় দীর্ঘ দূরত্বের ভ্রমণ এড়ানো উচিত।” এই সতর্কবার্তা শুনে কাঁপুনি দিয়ে ওঠে মন, তাই না? কিন্তু সঠিক প্রস্তুতি ও সচেতনতা আপনাকে শারমিনের মতো অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করতে পারে। আসুন, জেনে নেই গর্ভাবস্থায় নিরাপদে ভ্রমণের অপরিহার্য দিকগুলো।

    গর্ভাবস্থায় নিরাপদ ভ্রমণ: কেন এই সতর্কতা জরুরি?

    গর্ভাবস্থা শরীরে নানা রকম শারীরিক ও হরমোনগত পরিবর্তন আনে। এই সময়ে অতিরিক্ত ক্লান্তি, মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব, পিঠে ও তলপেটে ব্যথা স্বাভাবিক। ভ্রমণের চাপ এই লক্ষণগুলোকে বাড়িয়ে তুলতে পারে, বিশেষ করে যদি গর্ভাবস্থা আগে থেকেই কিছুটা জটিল হয়। বাংলাদেশের মতো দেশে যেখানে রাস্তাঘাটের অবস্থা প্রায়শই খারাপ, যানজট চরম, আর স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা শহর থেকে দূরবর্তী এলাকাগুলোতে সীমিত, সেখানে গর্ভাবস্থায় নিরাপদ ভ্রমণ পরিকল্পনা জীবন রক্ষাকারী হতে পারে।

    • শারীরিক চাপের প্রভাব: দীর্ঘ সময় বসে থাকা বা দাঁড়িয়ে থাকা রক্ত সঞ্চালনে বাধা সৃষ্টি করে, যা ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস (DVT) নামক রক্তজমাট বাঁধার ঝুঁকি বাড়ায়। গর্ভাবস্থায় এই ঝুঁকি স্বাভাবিকের চেয়ে ৫-১০ গুণ বেশি (আমেরিকান কলেজ অফ অবস্টেট্রিশিয়ান্স অ্যান্ড গাইনোকোলজিস্টস – ACOG)।
    • অকাল প্রসবের ঝুঁকি: বিশেষ করে তৃতীয় ট্রাইমেস্টারে, কাঁপুনি দেওয়া রাস্তা, বিমানের টেকঅফ-ল্যান্ডিং এর চাপ বা মানসিক উদ্বেগ প্রি-টার্ম লেবার ট্রিগার করতে পারে।
    • স্বাস্থ্যসেবার অপ্রতুলতা: হাওর, পাহাড়ি বা দুর্গম এলাকায় ভ্রমণকালে জরুরী প্রসূতি সেবা পাওয়া কঠিন হতে পারে। ডেলিভারির তারিখ কাছাকাছি এলে এই ঝুঁকি বেড়ে যায় বহুগুণ।
    • সংক্রমণের ঝুঁকি: গণপরিবহন বা ভিড় এলাকায় ভাইরাস (যেমন: ইনফ্লুয়েঞ্জা, কোভিড-১৯) বা ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, যা গর্ভস্থ শিশুর জন্যও ক্ষতিকর।

    তাহলে কি গর্ভাবস্থায় একেবারেই ঘর থেকে বের হওয়া যাবে না? উত্তরটা একেবারেই না। চিকিৎসকরা সাধারণত দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টার (১৪-২৮ সপ্তাহ) সবচেয়ে নিরাপদ ভ্রমণের সময় বলে মনে করেন। এই সময় মর্নিং সিকনেস কম থাকে, শক্তি ফিরে আসে এবং গর্ভপাতের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে কম থাকে। তবে প্রতিটি গর্ভাবস্থাই অনন্য। তাই ভ্রমণের আগে আপনার নিজের চিকিৎসকের সাথে আলোচনা করা অপরিহার্য।

    ভ্রমণের আগে যে প্রস্তুতি অবশ্যই নেবেন

    গর্ভাবস্থায় নিরাপদ ভ্রমণ এর মূল ভিত্তিই হলো সঠিক প্রস্তুতি। হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত নিলে চলবে না। নিচের ধাপগুলো মেনে চলুন:

    1. চিকিৎসকের অনুমোদন নিন (একেবারেই নন-নেগোশিয়েবল!): ভ্রমণের পরিকল্পনার প্রথম ধাপই হলো আপনার গাইনোকোলজিস্ট বা প্রসূতি বিশেষজ্ঞের সাথে বিস্তারিত আলোচনা। তাকে জানান:
      • ভ্রমণের উদ্দেশ্য (কাজ/অবকাশ/জরুরী)
      • গন্তব্য (স্থানীয়/দূরবর্তী/বিদেশ)
      • ভ্রমণের মাধ্যম (গাড়ি/বিমান/ট্রেন/বাস/জাহাজ)
      • ভ্রমণের আনুমানিক সময়কাল
      • ভ্রমণের সময় গর্ভাবস্থার সঠিক সপ্তাহ

      ডাঃ হক জোর দিয়ে বলেন, “আপনার চিকিৎসকই সবচেয়ে ভালো জানেন আপনার গর্ভাবস্থা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ। যদি আপনার উচ্চ রক্তচাপ, গর্ভকালীন ডায়াবেটিস, জরায়ুতে রক্তপাতের ইতিহাস, একাধিক গর্ভ (টুইন/ট্রিপলেট), গর্ভপাতের পূর্ব ইতিহাস বা সার্ভিকাল ইনকম্পিটেন্সি থাকে, তাহলে তিনি ভ্রমণ না করার পরামর্শই দিতে পারেন, বিশেষ করে তৃতীয় ট্রাইমেস্টারে।” চিকিৎসকের কাছ থেকে একটি মেডিকেল ফিটনেস সার্টিফিকেট বা চিঠি নিন, যাতে আপনার গর্ভকালীন অবস্থা এবং ভ্রমণের অনুমতি উল্লেখ থাকে।

    2. গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র গুছিয়ে রাখুন:
      • চিকিৎসকের দেওয়া ফিটনেস সার্টিফিকেট/চিঠি (ইংরেজি ও বাংলা অনুবাদ সহ, বিশেষ করে বিদেশ ভ্রমণে)।
      • প্রেগন্যান্সি রেকর্ড বই/ফাইল (সকল রিপোর্ট, আল্ট্রাসাউন্ড রিপোর্ট)।
      • পরিচয়পত্র (জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট – যদি প্রযোজ্য)।
      • স্বাস্থ্য বীমা কার্ড/নথি (ভ্রমণ বীমা দেখে নিন গর্ভাবস্থা সম্পর্কিত জরুরী খরচ কভার করে কিনা)।
      • জরুরী যোগাযোগের নম্বর (চিকিৎসক, পরিবারের সদস্য, গন্তব্যের নিকটবর্তী হাসপাতাল)।
      • প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী গর্ভাবস্থার ভিটামিন ও অন্যান্য ওষুধের পর্যাপ্ত স্টক।
    3. গন্তব্য ও পরিবহন যাচাই করুন:
      • গন্তব্যের স্বাস্থ্য সুবিধা: যেখানে যাচ্ছেন, সেখানকার নিকটবর্তী ভালো হাসপাতাল বা ক্লিনিক কোথায়, সেগুলোর জরুরী নম্বর জোগাড় করুন। ইন্টারনেটে খোঁজ নিন বা স্থানীয় পরিচিতজনের সাহায্য নিন।
      • ভ্রমণ বীমা: বিদেশ ভ্রমণে গর্ভাবস্থাকে প্রি-এক্সিস্টিং কন্ডিশন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই এমন ট্র্যাভেল ইনশ্যুরেন্স নিন যা গর্ভাবস্থাজনিত জরুরী চিকিৎসা খরচ (যেমন: অকাল প্রসব, জটিলতা) কভার করে। বাংলাদেশে এ ধরনের পলিসি এখন পাওয়া যায় (প্রতিষ্ঠান যেমন: সানলাইফ, সানমেটলাইফ ইত্যাদি)। পলিসির শর্তাবলী ভালো করে পড়ুন।
      • এয়ারলাইন্স/ট্রান্সপোর্ট কোম্পানির নীতিমালা: প্রতিটি এয়ারলাইন বা ট্রান্সপোর্ট কোম্পানির গর্ভবতী যাত্রীদের জন্য আলাদা নিয়ম থাকে। উদাহরণস্বরূপ, বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন একক গর্ভাবস্থায় সাধারণত ৩৬ সপ্তাহ পর্যন্ত এবং জমজ গর্ভাবস্থায় ৩২ সপ্তাহ পর্যন্ত ভ্রমণের অনুমতি দেয়, তবে ডাক্তারের ফিটনেস সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক। বিমানবন্দরে বা টিকিট কাউন্টারে এই সার্টিফিকেট চাওয়া হতে পারে। বাংলাদেশ রেলওয়ে বা বাস সার্ভিসে সাধারণত গর্ভাবস্থার সীমা উল্লেখ না থাকলেও নিজের সুবিধা ও নিরাপত্তার কথা ভেবে সিদ্ধান্ত নিন।

    পরিবহন মাধ্যম অনুযায়ী গর্ভাবস্থায় নিরাপদ ভ্রমণের টিপস

    গাড়িতে ভ্রমণ:

    • সিট বেল্ট: সঠিকভাবে সিট বেল্ট পরা বাধ্যতামূলক। বেল্টের নিচের অংশ (ল্যাপ বেল্ট) পেলভিসের হাড়ের ওপর (পেটের নিচে) এবং ওপরের অংশ (শোল্ডার বেল্ট) বুকের মাঝখান দিয়ে, স্তনের পাশে (গর্ভের ওপরে) থাকতে হবে। বেল্ট যেন পেটে চাপ না দেয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (BRTA) এর নির্দেশনা অনুযায়ীও এটা জরুরী।
    • ড্রাইভারের পাশের সিট নয়: সম্ভব হলে পিছনের সিটে বসুন। এয়ারব্যাগ থাকলে সেটি সক্রিয় থাকলে বিপজ্জনক হতে পারে। যদি সামনের সিটেই বসতে হয়, সিটটি যতটা সম্ভব পেছনে স্লাইড করুন যাতে এয়ারব্যাগ থেকে দূরত্ব বজায় থাকে।
    • বিরতি: প্রতি ১-১.৫ ঘন্টা পরপর গাড়ি থামিয়ে ১০-১৫ মিনিট হাঁটাচলা করুন। এতে পায়ের রক্ত চলাচল ভালো থাকে, DVT এর ঝুঁকি কমে। পায়ের পাতা নাড়াচাড়া করুন, স্ট্রেচিং করুন বসে থাকা অবস্থায়।
    • আরাম: পিঠের নিচে ছোট কুশন বা গর্ভবতীদের জন্য বিশেষ বেল্ট (Maternity Support Belt) ব্যবহার করতে পারেন। পা রাখার জন্য ছোট স্টুল বা বইয়ের স্তূপও কাজে দেবে।
    • জল ও স্ন্যাকস: পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি, স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস (ফল, বাদাম, বিস্কুট) হাতের কাছে রাখুন। ডিহাইড্রেশন এড়ান।
    • রাস্তার অবস্থা: খুব খারাপ বা বন্ধুর রাস্তা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। গাড়ির গতি ধীর রাখুন।

    বিমানে ভ্রমণ:

    • সময়সীমা: সাধারণত ৩৬ সপ্তাহ (একক গর্ভ) ও ৩২ সপ্তাহ (জমজ) পর বিমান কোম্পানিগুলো ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ভ্রমণের দিন গর্ভাবস্থার সপ্তাহ নিশ্চিত করতে এয়ারলাইন চিকিৎসকের সার্টিফিকেট চাইতে পারে। ভ্রমণের তারিখের ৭ দিনের মধ্যে জারি করা সার্টিফিকেট প্রায়শই চাওয়া হয়।
    • আইল সিট: চেক-ইনের সময় জানালার পাশের সিটের চেয়ে আইল সিট (Aisle Seat) চেয়ে নিন। এতে সহজে টয়লেটে যাওয়া-আসা এবং মাঝে মাঝে হাঁটাচলা করা সুবিধাজনক হবে।
    • হাইড্রেশন ও মুভমেন্ট: কেবিনের বাতাস খুব শুষ্ক হয়। প্রচুর পানি পান করুন। প্রতি ৩০-৪৫ মিনিটে উঠে হাঁটুন বা বসে বসেই পায়ের গোড়ালি ঘোরান, পায়ের পাতা ওপর-নিচ করুন।
    • কম্প্রেশন স্টকিংস: DVT এর ঝুঁকি কমাতে চিকিৎসকের পরামর্শে কম্প্রেশন স্টকিংস পরতে পারেন।
    • সিকিউরিটি চেকপয়েন্ট: মেটাল ডিটেক্টর গেট সাধারণত গর্ভস্থ শিশুর জন্য নিরাপদ। তবে আপনি যদি উদ্বিগ্ন হন, হাতে ধরে স্ক্যান করার অনুরোধ করতে পারেন। ইমেজিং স্ক্যানার (Body Scanner) এড়িয়ে যাওয়ার অনুমতি সাধারণত দেওয়া হয় গর্ভবতী নারীদের।
    • জেট ল্যাগ: দীর্ঘ ফ্লাইটে টাইম জোন পরিবর্তন হলে বিশ্রাম নিন, হালকা খাবার খান।

    ট্রেন বা বাসে ভ্রমণ:

    • সিট নির্বাচন: রিজার্ভেশন করলে নিচের বার্থ বা সিট বুক করুন যাতে সহজে উঠানামা করা যায়। বাসে সামনের দিকের সিটে বসার চেষ্টা করুন (কম ঝাঁকুনি)।
    • হাঁটাচলা: ট্রেনে সহজে হাঁটাচলা করা যায়। বাসে সম্ভব হলে বিরতির সময় নেমে হাঁটুন। লম্বা সময় বসে থাকবেন না।
    • আরাম: পিঠের সাপোর্টের জন্য ছোট বালিশ নিয়ে নিন। পা রাখার ব্যবস্থা করুন।
    • খাদ্য ও পানি: ট্রেন/বাসের খাবারের চেয়ে বাড়ি থেকে তৈরি তাজা, হালকা খাবার (সিদ্ধ ডিম, ফল, স্যান্ডউইচ) ও পর্যাপ্ত পানি নিন। বাইরের খোলা খাবার বা পানি এড়িয়ে চলুন।
    • সুবিধা: যাত্রাপথে টয়লেটের অবস্থা বিবেচনা করুন। হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ওয়েট ওয়াইপস সাথে রাখুন।

    জাহাজে ভ্রমণ (ক্রুজ):

    • কোম্পানির নীতিমালা: ক্রুজ কোম্পানিগুলোরও গর্ভবতী যাত্রীদের জন্য নির্দিষ্ট সপ্তাহের সীমা থাকে (সাধারণত ২৪ সপ্তাহের পর অনুমতি দেয় না)। আগে থেকে জেনে নিন।
    • মোশন সিকনেস: গর্ভাবস্থায় মোশন সিকনেস বাড়তে পারে। চিকিৎসকের সাথে আলোচনা করে নিরাপদ ওষুধের অপশন জেনে নিন। সিটবেল্ট পরুন।
    • জাহাজের চিকিৎসক: জাহাজে চিকিৎসক ও মেডিকেল ফ্যাসিলিটি আছে কিনা নিশ্চিত হন। আপনার মেডিকেল হিস্ট্রি সম্পর্কে তাদের অবহিত করুন।

    ভ্রমণকালীন সময়ে করণীয় ও সতর্কতা

    ভ্রমণ শুরুর পরেও সচেতনতা বজায় রাখতে হবে:

    • হাইড্রেটেড থাকুন: ডিহাইড্রেশন কন্ট্রাকশন (ব্রাক্সটন হিক্স) বাড়াতে পারে। পর্যাপ্ত পানি পান করুন। ক্যাফেইন ও মিষ্টি পানীয় কম খান।
    • স্বাস্থ্যকর খাবার: পুষ্টিকর, সহজপাচ্য খাবার খান। বাইরের অস্বাস্থ্যকর, তৈলাক্ত বা কাঁচা খাবার (স্যালাড, স্ট্রিট ফুড) এড়িয়ে চলুন। খাবার আগে হাত ভালো করে ধুয়ে নিন বা স্যানিটাইজ করুন।
    • নিয়মিত বিরতি ও মুভমেন্ট: বসে বা দাঁড়িয়ে দীর্ঘক্ষণ থাকবেন না। প্রতি ঘন্টায় অন্তত ৫-১০ মিনিট হাঁটুন বা স্ট্রেচ করুন।
    • আরামদায়ক পোশাক: ঢিলেঢালা, সুতির আরামদায়ক পোশাক ও সমতল, আরামদায়ক জুতা পরুন।
    • চাপ ও উদ্বেগ এড়িয়ে চলুন: ভ্রমণে মানসিক চাপ থাকবেই। গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন, গান শুনুন, হালকা বই পড়ুন। সময়মতো বিশ্রাম নিন।
    • জরুরী প্রস্তুতি: আপনার সঙ্গী বা ভ্রমণসঙ্গীকে জরুরী পরিস্থিতিতে কী করতে হবে (নিকটস্থ হাসপাতালে নেওয়া, ডাক্তারকে ফোন করা) আগেই বুঝিয়ে দিন। জরুরী কাগজপত্র সহজে পাওয়া যায় এমন জায়গায় রাখুন।

    কখন দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন?

    ভ্রমণকালীন নিচের লক্ষণগুলো দেখা দিলে দেরি না করে নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগাযোগ করুন বা যান:

    • তলপেটে তীব্র বা ক্রমাগত ব্যথা বা চাপ অনুভব করা।
    • যোনিপথে রক্তপাত বা তরল নিঃসরণ (পানির মতো)।
    • জ্বর, ঠাণ্ডা লাগা বা তীব্র মাথাব্যথা।
    • দৃষ্টিশক্তিতে সমস্যা (ঝাপসা দেখা, আলো ঝলসানি)।
    • বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া যা থামছেই না।
    • প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া বা গা গোলানো।
    • শিশুর নড়াচড়া স্বাভাবিকের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়া (৩য় ট্রাইমেস্টারে বিশেষভাবে লক্ষণীয়)।
    • শ্বাসকষ্ট বা বুকে ব্যথা।
    • পায়ে তীব্র ব্যথা, ফুলে যাওয়া বা লালচে ভাব (DVT এর লক্ষণ)।

    গর্ভাবস্থায় নিরাপদ ভ্রমণ মানে শুধু পৌঁছে যাওয়া নয়, পৌঁছানোর পরও সাবধানতা জরুরি। নতুন পরিবেশ, নতুন খাবার, জলবায়ুর পরিবর্তন – এসবের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে শরীরের কিছু সময় লাগতে পারে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন, ভারী কাজকর্ম এড়িয়ে চলুন এবং গন্তব্যস্থলেও নিকটস্থ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের ঠিকানা জেনে রাখুন।

    গর্ভাবস্থায় ভ্রমণ: বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে

    রাজশাহীর রিনা আক্তার (৩২) দ্বিতীয় বাচ্চা গর্ভে ২৪ সপ্তাহে স্বামীর সাথে ঢাকায় বাসে আসছিলেন কাজের প্রয়োজনে। “বাসে আমার সিট ছিল সামনের দিকে। কিন্তু রাস্তার গর্তে প্রচণ্ড ঝাঁকুনি লাগত। মাঝপথে তলপেটে টান ধরলো। ভয় পেয়ে গেলাম। ড্রাইভারকে বললাম নিকটস্থ ক্লিনিকে নামিয়ে দিতে। সেখানে ডাক্তারবাবু শুনে কিছু ওষুধ দিলেন, এক ঘন্টা রেস্ট নিতে বললেন। পরের বার থেকে শুধু ট্রেনেই ভ্রমণ করব, আর অবশ্যই ডাক্তারের অনুমতি নিয়ে আসব,” – বললেন রিনা।

    অন্যদিকে চট্টগ্রামের আইটি প্রফেশনাল তাহসিনা ইসলাম (২৮) গর্ভাবস্থার ২০ সপ্তাহে ঢাকা থেকে সিঙ্গাপুর বিমানে গিয়েছিলেন প্রশিক্ষণে। “আমার গাইনি আমাকে ক্লিয়ারেন্স দিয়েছিলেন। আমি কম্প্রেশন স্টকিংস পরেছিলাম, আইল সিট বুক করেছিলাম। ফ্লাইটে বার বার পানি খেয়েছি, উঠে হেঁটেছি। সাথে প্রেগন্যান্সি রিপোর্ট আর ডাক্তারের চিঠি ছিল। ভ্রমণটা বেশ সুন্দরই কেটেছে সতর্কতা মেনে,” – তাহসিনার পরামর্শ।

    এই অভিজ্ঞতাগুলো প্রমাণ করে যে গর্ভাবস্থায় নিরাপদ ভ্রমণ সম্পূর্ণই সম্ভব সঠিক পরিকল্পনা, চিকিৎসকের গাইডেন্স এবং নিজের প্রতি যত্নবান হওয়ার মাধ্যমে।

    জেনে রাখুন (FAQs)

    1. প্রশ্ন: গর্ভাবস্থার কোন সময় ভ্রমণ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ?
      উত্তর: প্রথম ট্রাইমেস্টার (১-১২ সপ্তাহ) গর্ভপাতের ঝুঁকি বেশি থাকে এবং মর্নিং সিকনেস তীব্র হতে পারে। তৃতীয় ট্রাইমেস্টার (২৮ সপ্তাহ পর) অকাল প্রসবের ঝুঁকি বাড়ে, আরাম কমে যায়। তাই চিকিৎসকরা সাধারণত দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টারকেই (১৩-২৭ সপ্তাহ) ভ্রমণের জন্য তুলনামূলক নিরাপদ সময় হিসেবে উল্লেখ করেন। তবে প্রত্যেকের শারীরিক অবস্থা আলাদা, তাই ডাক্তারের পরামর্শই চূড়ান্ত।
    2. প্রশ্ন: গর্ভাবস্থায় দূরপাল্লার বিমান ভ্রমণে শিশুর কোনো ক্ষতি হয় কি?
      উত্তর: বাণিজ্যিক বিমান ভ্রমণে রেডিয়েশনের মাত্রা সাধারণত খুবই কম থাকে এবং গর্ভস্থ শিশুর জন্য তা ক্ষতিকর বলে প্রমাণিত নয় (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ACOG এর মত অনুযায়ী)। মূল ঝুঁকি হলো দীর্ঘ সময় বসে থাকার কারণে রক্ত জমাট বাঁধা (DVT), ডিহাইড্রেশন এবং ক্লান্তি। নিয়মিত হাঁটা, পানি পান ও চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললে গর্ভাবস্থায় নিরাপদ ভ্রমণ সম্ভব।
    3. প্রশ্ন: গর্ভাবস্থায় ভ্রমণের সময় কি ধরনের ওষুধ সঙ্গে রাখা উচিত?
      উত্তর: আপনার নিয়মিত প্রেসক্রিপশন ওষুধ (যেমন: আয়রন, ক্যালসিয়াম, হরমোন) পর্যাপ্ত পরিমাণে নিন। এছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শে কিছু সাধারণ ওষুধ রাখতে পারেন:

      • প্যারাসিটামল (হালকা জ্বর বা ব্যথার জন্য)।
      • অ্যান্টাসিড বা ডাক্তারের সুপারিশকৃত বমি বিরোধী ওষুধ।
      • ইলেক্ট্রোলাইট পাউডার (ডায়রিয়া বা বমির কারণে ডিহাইড্রেশন রোধে)।
      • নিরাপদ মলম (পাইলস বা চুলকানির জন্য – ডাক্তারের পরামর্শে)।
      • ফার্স্ট এইড বক্সের সাধারণ উপকরণ (প্লাস্টার, অ্যান্টিসেপটিক)।
    4. প্রশ্ন: গর্ভাবস্থায় বিদেশ ভ্রমণ করলে বিশেষ কোনো টিকা নিতে হবে কি?
      উত্তর: গর্ভাবস্থায় লাইভ ভাইরাস টিকা (যেমন: MMR, Chickenpox, Yellow Fever) সাধারণত এড়িয়ে চলা হয়। যদি কোন গন্তব্যের জন্য বাধ্যতামূলক ইয়েলো ফিভার ভ্যাকসিনের প্রয়োজন হয়, তাহলে সম্ভবত সেই ভ্রমণ স্থগিত করতে হবে বা চিকিৎসকের সাথে বিশেষ আলোচনা করতে হবে। টাইফয়েড, হেপাটাইটিস এ বা ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো নিষ্ক্রিয় ভ্যাকসিন গর্ভাবস্থায় দেওয়া যেতে পারে যদি ঝুঁকি বেশি থাকে, তবে শুধুমাত্র চিকিৎসকের পরামর্শে। গন্তব্যের স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও প্রয়োজনীয় টিকা সম্পর্কে CDC ট্র্যাভেল হেলথ ওয়েবসাইট বা বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শ নিন।
    5. প্রশ্ন: গর্ভাবস্থায় ভ্রমণের সময় পেটে বাচ্চার নড়াচড়া কম মনে হলে কী করব?
      উত্তর: বিশেষ করে তৃতীয় ট্রাইমেস্টারে (২৮ সপ্তাহ পর) শিশুর নড়াচড়া নিয়মিত মনিটর করা জরুরি। ভ্রমণের সময় যদি মনে হয় নড়াচড়া স্বাভাবিকের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে (যেমন: ২ ঘন্টা ধরে কোনো নড়াচড়া অনুভব না করা), তাহলে দ্রুত ব্যবস্থা নিন:

      • প্রথমে শান্ত হয়ে বসুন বা বাম কাতে শুয়ে পড়ুন।
      • কিছু ঠাণ্ডা পানি বা মিষ্টি জুস খান।
      • শিশুকে জাগ্রত করতে পেটে আলতো করে টোকা দিন।
      • যদি এর পরেও ১-২ ঘন্টায় পর্যাপ্ত নড়াচড়া (কমপক্ষে ১০টি আলাদা মুভমেন্ট) না অনুভব করেন, তাহলে অবিলম্বে নিকটস্থ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে যান বা চিকিৎসককে ফোন করুন। ভ্রমণরত অবস্থায়ও এটি গুরুত্বপূর্ণ জরুরী লক্ষণ।

    গর্ভাবস্থায় নিরাপদ ভ্রমণ শুধু একটি পছন্দ নয়, মা ও অনাগত শিশুর সুস্থতার জন্য এটি একান্ত দায়িত্ব। সঠিক সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন হোন, প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করুন এবং ভ্রমণের সময় নিজের শরীরের সংকেতকে অবহেলা করবেন না। মনে রাখবেন, এই সময়ে আপনার সতর্কতাই পারে দুর্ঘটনার ঝুঁকি কাটিয়ে একটি সুন্দর, নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে। তাই পরিকল্পনামাফিক ভ্রমণ করুন, সুস্থ থাকুন, এবং আগামী দিনের সুস্থ সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে এই বিশেষ সময়টা উপভোগ করুন।


    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    ‘ও maternal health pregnancy travel safety safe travel during pregnancy travel tips for pregnant women গর্ভকালীন ভ্রমণ নির্দেশিকা গর্ভবতী ভ্রমণ পরামর্শ গর্ভাবস্থায় গর্ভাবস্থায় গাড়িতে ভ্রমণ গর্ভাবস্থায় জরুরী পরামর্শ গর্ভাবস্থায় নিরাপদ ভ্রমণ গর্ভাবস্থায় বিমানে ভ্রমণ গর্ভাবস্থায় ভ্রমণ গর্ভাবস্থায় ভ্রমণের নিয়ম জরুরী ট্র্যাভেল দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টারে ভ্রমণ নিরাপদ পরামর্শ প্রেগন্যান্সিতে ট্রাভেল ভ্রমণ মা শিশুর সুস্থতায়
    Related Posts
    ট্রাভেল ব্লগ লেখার টিপস

    ট্রাভেল ব্লগ লেখার টিপস: সহজ গাইডে সফলতার সন্ধান

    July 20, 2025
    পরিবার নিয়ে নিরাপদ ট্রিপ

    পরিবার নিয়ে নিরাপদ ট্রিপ: ১০টি প্রমাণিত কৌশল ও গন্তব্য নির্দেশিকা

    July 19, 2025
    সস্তা ফ্লাইট

    সস্তা ফ্লাইট বুকিংয়ের গোপন কৌশল: টাকা বাঁচিয়ে উড়ুন বিশ্বজুড়ে!

    July 19, 2025
    সর্বশেষ খবর
    বিমান বিধ্বস্তে হতাহত

    উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তে হতাহত যত, জানাল ফায়ার সার্ভিস

    জনপ্রিয় ব্যান্ড অর্থহীন

    প্রথমবার আমেরিকা সফরে জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘অর্থহীন’

    Avneet Kaur

    Avneet Kaur: Rising from Child Star to Digital and Screen Sensation

    শরীর

    শরীরের ৭টি জায়গায় ভুলেও ছোঁবেন না

    Hannah Stocking

    Hannah Stocking: The Comedy Queen of Viral Social Media

    Improve Spoken English at Home

    Improve Spoken English at Home: Expert Tips & Techniques

    তারেক রহমান

    উত্তরায় প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত, জরুরি সহায়তার নির্দেশ তারেক রহমানের

    পোশাকের সাইজ

    পোশাকের সাইজ XL বা XXL এর মধ্যে ‘X’—র অর্থ কী? ৯০% মানুষের অজানা

    Daily English Speaking Practice

    Daily English Speaking Practice: Easy Tips for Beginners

    BCS

    ৪৮তম বিশেষ বিসিএস পরীক্ষার ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৫২০৬

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    • Feed
    • Banglanews
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.