জুমবাংলা ডেস্ক : অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার গতি কমেছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার আকারে বইছে। যা দু’ঘণ্টা আছে ছিল ২১৫ কিলোমিটার। বর্তমানে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে মাত্র ২০০ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড়টি।
কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ বিকাল নাগাদ সিটুয়ের (মায়ানমার) নিকট দিয়ে কক্সবাজার-উত্তর মায়ানমার উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রোববার দুপুরে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমান।
ঘূর্ণিঝড়টি রোববার বেলা ৩টা নাগাদ কক্সবাজার-উত্তর মায়ানমার উপকূল অতিক্রম করবে এবং সম্পূর্ণ ঘূর্ণিঝড়টি সন্ধ্যা নাগাদ সিটুয়ের (মায়ানমার) নিকট দিয়ে কক্সবাজার-উত্তর মায়ানমার উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কি.মি., যা দমকা অথবা ঝড় হাওয়ার আকারে ১৮০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
বলা হয়, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা রোববার দুপুর ১২টায় কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ২০০ কি.মি. দক্ষিণে, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ২৮৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৪৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৪৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল।
গতি কমলেও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত, চট্টগ্রাম ও পায়রাকে ৮ নম্বর এবং মোংলা বন্দরে ৪ সতর্ক সংকেত বহাল রেখেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সকাল থেকেই টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন্স দ্বীপে প্রচণ্ড বেগে বাতাস বইছে। একই সঙ্গে বৃষ্টিও হচ্ছে। জোয়ারের পানির উচ্চতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া কক্সবাজার শহর ও বিভিন্ন উপজেলায় গুড়িগুড়ি বৃষ্টি ও মৃদু বাতাস বইছে।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য বলছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং এর কাছাকাছি দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুটের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় মোখার ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন। কক্সবাজারে দেড় হাজারের বেশি আশ্রয় কেন্দ্রে বিভিন্ন স্থান থেকে কয়েক লাখ মানুষকে সরিয়ে আনা হয়েছে।
চট্টগ্রামেও গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করছে। রাত থেকে হচ্ছে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। মোখা মোকাবেলায় নেয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। পাহাড়ধস ও জলোচ্ছ্বাস আতংকে পাহাড়ী এলাকা এবং উপকূলীয় এলাকায় বসবাসকারী প্রায় ৮৮ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
ভোলা-বরিশালেও রয়েছে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। বিভিন্ন চরাঞ্চল থেকে সকালেও মানুষজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে দেখা গেছে। ভোলায় ৫২টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এছাড়া, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর ও বরগুনাসহ উপকূলীয় অঞ্চলে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।