জুমবাংলা ডেস্ক : বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে জাতীয় সংসদে বিরোধীদলের কঠোর সমালোচনার মুখে ‘বাংলাদেশ গ্যাস, তেল ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন বিল-২০২২’ পাস হয়েছে। সমালোচনার জবাবে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খানিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সংসদে জানিয়েছেন, সরকার এ মাসেই লোড শেডিং থেকে বের হয়ে এসেছে। শুধু তাই নয়, আগামী বছর বিদ্যুৎ পরিস্থিতি আরো ভালোর দিকে যাবে।
বুধবার (২ নভেম্বর) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে বিলটি পাসের জন্য উত্থাপন করেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। পরে কণ্ঠভোটে বিলটি পাস হয়। এর আগে বিলটির ওপর দেওয়া সংশোধনী এবং যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করেন স্পিকার।
এ সময় বিলের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও গণফোরামের একাধিক সদস্য অভিযোগ করে বলেন, ঘরে ঘরে বিদ্যুতের ঘোষণা দিয়ে সরকার ঘরে ঘরে লোড শেডিং পৌঁছে দিয়েছে।
বিদ্যুতের দায়মুক্তি আইন এবং একাধিকবার আইনের মেয়াদ বাড়ানোর সমালোচনা করে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য মো. হারুনুর রশীদ বলেন, কেন বিদ্যুতের দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে? সমস্ত রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল কাকে দেওয়া হয়েছে?
জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, দায়মুক্তির এই বিধানের কারণেই মানুষ সুবিধা ভোগ করছে। তিনি বলেন, সরকারের ভুল নীতির কারণে মানুষ বিপর্যস্ত। শিল্প কারখানা, বাসাবাড়িতে বিদ্যুৎ নেই। এই সরকারের আমলে তিন বার ব্ল্যাক আউট হয়েছে। কিন্তু কেন এমন হলো তা সরকার স্পষ্ট করেনি।
একই দলের রুমিন ফারহানা বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা যতই থাক না কেন, ঘরে ঘরে চলছে লোড শেডিং। বিদ্যুৎ খাতে দায়মুক্তি দিয়ে রেন্টাল–কুইক রেন্টাল করে বিপুল লুটপাট করা হয়েছে। একদিন এসব লুটপাটের তদন্ত হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
জাতীয় পার্টির রওশন আরা মান্নান বলেন, গ্যাস সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। নিজেদের গ্যাস উত্তোলনের ব্যবস্থা করা হলে এই অবস্থা হতো না। এখন দিনের বেলায় ঢাকায় রান্নার গ্যাস পাওয়া যায় না।
গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দুরবস্থা চলছে। একটি অশুভ চক্র এই খাতকে গ্রাস করেছে।
এসব সমালোচনার জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, বিশ্বে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের ১১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কারখানা গ্যাসে চলে। এতে বিদ্যুৎ কারখানায় গ্যাস দেওয়া বন্ধ করা হয়েছে। এর ফলে লোড শেডিং করা হয়েছে। সরকার এই মাসেই লোড শেডিং থেকে বের হয়ে এসেছে। চাহিদা আস্তে আস্তে কমে আসছে। শুধু তাই নয়, আগামী বছর খুব ভালোর দিকে যাবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
নসরুল হামিদ বলেন, দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হয়েছে। বাধ্য হয়ে লোড শেডিংয়ে যেতে হয়েছে। জ্বালানি আমদানির বেশ কিছু অংশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তেল আমদানি করতে হচ্ছে উচ্চমূল্যে। তেলের মূল্য সমন্বয় করার পরেও বিপিসির বাৎসরিক ক্ষতি প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা।
ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির কারণ উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মাতারবাড়ি, পায়রা থেকে রংপুর বিদ্যুৎ নিতে সিস্টেম লস ও ট্রান্সমিশন ক্ষতি ৪ শতাংশ। সেটা লাভবান হবে না। কম দূরত্বে বিদ্যুৎ আনলে খরচ কম পড়বে। ভারত থেকে ট্রান্সমিশন খরচ কম পড়বে।
Get the latest Zoom Bangla News first — Follow us on Google News, Twitter, Facebook, Telegram and subscribe to our YouTube channel.