আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনে আমরা সকলেই একটু ভিন্ন কিছু খুঁজি, তাই না? কল্পনা করুন এমন একটি চাকরি, যেখানে বসের ঝামেলা নেই, ক্লায়েন্টের চাপ নেই, আপনার বস আপনি নিজেই! আপনার চারপাশে শুধু অন্ধকার সমুদ্র, মাথার ওপর বিরাট আকাশ, আর সঙ্গী শুধু বাতাসের সুর। দিনের পর দিন, রাতের পর রাত, একা দাঁড়িয়ে থাকতে হবে সমুদ্রের পাশে। কেমন শোনাচ্ছে? অদ্ভুত, তাই না?
কিন্তু এই অদ্ভুত চাকরির জন্যই দেওয়া হয় আকর্ষণীয় বেতন প্রায় ৩৫ থেকে ৬০লাখ টাকা! এর সঙ্গে রয়েছে স্বাস্থ্য বিমাসহ আরও অনেক ভাতা। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, এত সুবিধা থাকার পরও বাতিঘরের চাকরি করতে আগ্রহী প্রার্থী পাওয়া কঠিন। কিন্তু কেন এমন হয়?
হ্যাঁ এই চাকরিটি হলো ‘বাতিঘর’ বা লাইটহাউসের কাজ। বাতিঘর সম্পর্কে আমাদের ধারণা মিশ্রিত, মনে হয় যেন নির্জন দ্বীপের ওপরে উঁচু একটি টাওয়ার যা আলোর মাধ্যমে পথ দেখায় মাঝ সমুদ্রে জাহাজগুলোকে। কিন্তু এই কাজটি শুধু আলোর ব্যবস্থাপনা নয়; এটি মূলত একটি একাকীত্বের জীবন, যেখানে একা কর্মচারীকে দীর্ঘ সময় ধরে সমুদ্রের পাশে একাকী থাকতে হয়।
চাকরির চ্যালেঞ্জিং বাস্তবতা
বাতিঘরের কাজ অত্যন্ত কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং। কর্মীদেরকে একা থেকে সবকিছু সামলাতে হয়, ঝড়, বৃষ্টি, রোদ, সবকিছুর সঙ্গে লড়াই করতে হয়। কর্মীদের প্রধান দায়িত্ব হলো আলোর ব্যবস্থা চালু রাখা, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা, এবং দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সময় জরুরি সংকেত পাঠানো। এই কাজের জন্য প্রয়োজন হয় সাহসী ও ধৈর্যশীল মানুষের, যারা কঠিন পরিবেশেও কাজ চালিয়ে যেতে সক্ষম।
বাতিঘরের কর্মীদের একাকীত্ব ও সামাজিক চ্যালেঞ্জ
বাতিঘরের কর্মীদের একাকী জীবন কাটাতে হয় দিনের পর দিন, বছরের পর বছর। এই একঘেয়ে এবং একাকী পরিবেশের কারণে বেশিরভাগ মানুষ এই পেশায় আসতে চান না। কাজের চাপ, একাকীত্ব এবং পরিবারের থেকে দূরে থাকার কারণে মানসিক ও শারীরিকভাবে এটি অত্যন্ত কঠিন কাজ। যুক্তরাষ্ট্র কোস্ট গার্ড এবং ট্রিনিটি হাউস এর মতো সংস্থাগুলো জানায়, বাতিঘরের কর্মীদের জীবনে সামাজিক জীবন খুবই সীমাবদ্ধ এবং অনেকেই এই পেশা এড়িয়ে চলে।
প্রযুক্তির উন্নতি ও বাতিঘরের ভবিষ্যৎ
আধুনিক প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে, অনেক বাতিঘর এখন স্বয়ংক্রিয় হয়ে গেছে এবং মানুষের প্রয়োজনীয়তা কমেছে। অনেক বাতিঘর সম্পূর্ণভাবে স্বয়ংক্রিয় করা হয়েছে, যেখানে মানুষের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হয় না। তবে কিছু ঐতিহাসিক এবং কৌশলগত স্থানে এখনও মানুষকে এই কাজ করতে হয়, যেমন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের কিছু লাইটহাউসে। তথ্যসূত্র অনুযায়ী, বাতিঘরগুলো এখনো জরুরি সংকেত ব্যবস্থা এবং নেভিগেশন সেবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
আরশের সঙ্গে দূরত্বের, শামিম হাসানের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে যা জানালেন তানিয়া বৃষ্টি
বাতিঘরের কাজের রোমাঞ্চ ও চ্যালেঞ্জ
যদিও অনেকের কাছে এই চাকরি অত্যন্ত একঘেয়ে মনে হতে পারে, যারা প্রকৃতির কাছে থাকতে ভালোবাসেন এবং সাহসী মনোভাবের অধিকারী, তাদের জন্য এটি হতে পারে এক চমকপ্রদ অভিজ্ঞতা। বাতিঘরের কর্মজীবনে একাকীত্ব থাকলেও, এটি প্রকৃতির সান্নিধ্যে থাকার এক অসাধারণ সুযোগ দেয়। যারা সমুদ্রের ঢেউয়ের সুরে মুগ্ধ, তাদের জন্য বাতিঘর একটি রোমাঞ্চকর কর্মক্ষেত্র হতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।