জুমবাংলা ডেস্ক : ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলো দাবি আদায়ে অনড় অবস্থানে রয়েছে। এই অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় সরকারের গঠিত উপদেষ্টা কমিটিকে তারা ইতিবাচক উদ্যোগ হিসেবে দেখলেও মনে করছেন—বিষয়টির এখনও পূর্ণ সমাধান হয়নি। ঈদের ছুটির পর তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন।

এদিকে, বৈষম্য বিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরাম ঈদের ছুটির পরে তাদের চার দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আবারও সচিবালয়ে গিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, বৈষম্য বিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কার্যকরী সভাপতি ও সাবেক সচিব মো. আব্দুল খালেক বলেন, “স্বৈরাচারী মানসিকতার কিছু সচিব, অতিরিক্ত সচিব, যুগ্মসচিব ও উপসচিবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদের অপসারণ করে আইনের আওতায় আনতে হবে। বিতর্কিত ও চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত কর্মকর্তাদের চুক্তি বাতিল করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকার রুলস অব বিজনেস ভঙ্গ করে যে উপদেষ্টা কমিটি গঠন করেছে, তা বাতিল করতে হবে। আর সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ ২০২৫ নামের এই নিবর্তনমূলক কালো আইন অবশ্যই বাতিল করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এই দাবিগুলো কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য নয়, বরং প্রশাসনিক সংস্কারের স্বার্থে। আমরা অভিজ্ঞতার আলোকে দাবি তুলেছি। কিন্তু কিছু সুবিধাভোগী কর্মকর্তা সরকারকে বিভ্রান্ত করে বিষয়গুলো থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিচ্ছেন। তবে আমরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো।”
বাংলাদেশ সচিবালয় নন-ক্যাডার কর্মকর্তা কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. বাদিউল কবীর বলেন, “ঈদের পর আন্দোলন চলবে। প্রয়োজনে আমরা বিভাগীয় পর্যায়েও আন্দোলন চালাবো। কালো আইন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আমরা থামবো না।” আরেক কো-চেয়ারম্যান মো. নূরুল ইসলাম বলেন, “সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ ২০২৫ বাতিলের আন্দোলন এখনো চলছে এবং চলবে। সরকার এই বিষয়ে উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলকে আহ্বায়ক করে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে। আমরা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই, তবে বিষয়টি এখানেই শেষ নয়। ঈদের পর আবার আমরা মাঠে নামবো।”
উল্লেখ্য, সরকারি কর্মচারীদের দুই সপ্তাহব্যাপী আন্দোলনের পর গত ৪ জুন সরকার তিন সদস্যের একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠন করে। এর আহ্বায়ক করা হয় আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলকে। অপর সদস্যরা হলেন: বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ। কমিটিকে সহায়তা করার জন্য আরও তিনজন সচিবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে—ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম এবং তথ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিসংখ্যান বিভাগের সচিব আলেয়া আক্তার।
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ ২০২৫-এ চারটি অপরাধের জন্য তিন ধরনের শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।
অপরাধগুলো হলো:
১. এমন কোনো কাজ করা যা অনানুগত্য সৃষ্টি করে বা অন্য কর্মচারীদের মধ্যে শৃঙ্খলা ভঙ্গ বা কর্তব্যে বাধা দেয়।
২. যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া এককভাবে বা সমবেতভাবে অনুপস্থিত থাকা।
৩. অন্য কর্মচারীদের অনুপস্থিত থাকতে, কর্তব্য থেকে বিরত থাকতে বা দায়িত্ব পালনে বাধা দিতে উৎসাহিত করা বা প্ররোচিত করা।
৪. কর্মে উপস্থিত থাকতে বা দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়া।
এই অপরাধগুলোর জন্য যে তিন ধরনের শাস্তির বিধান রয়েছে, তা হলো:
* নিম্নপদ বা বেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ
* চাকরি থেকে অপসারণ
* চাকরি থেকে বরখাস্ত
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।