মোঃ সোহাগ হাওলাদার, আশুলিয়া : উপজেলা এক কর্মকর্তা সাক্ষরিত প্রত্যায়ন পত্র দিয়ে করেছেন পুকুর ইজারার আবেদন। সেই প্রত্যায়নপত্র দেওয়া কর্মকর্তা বদলি হলেও অলকৌকি ভাবে ফিরে এসেছেন দুই মাস পর, দিয়েছেন সাক্ষর। তার সাক্ষরিত প্রত্যায়ন পত্রে প্রভাবশালী ছাত্রলীগ থেকে হয়েছেন সাধারণ মৎসচাষী। তবে পুকুর ইজারার আবেদনের সাথে যুক্ত করা হয় সেই জাল কৃত প্রত্যায়ন পত্র টি। এসবই হয়েছে ছাত্রলীগ নেতার পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী। প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসব তথ্য।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, সাভারে উপজেলায় জাল প্রত্যায়ন পত্র নিয়ে জলমহাল ইজারা আবেদন করেছেন ছাত্রলীগ নেতা। জালকৃত প্রত্যায়ন পত্রটি দিয়েছেন সাভার উপজেলা সাবেক মৎস কর্মকর্তা কামরুল হাসান সরকার। তার সাক্ষরিত পত্রটি ছাত্রলীগ নেতা নিজেকে সফল মৎসচাষী হিসেবে ঘোষনা করেছেন। সেই প্রত্যায়ন পত্র দিয়ে আশুলিয়ার দিয়াখালী মৌজার ৬ একরের একটি ইজারায় অংশগ্রহণ করেছেন। তবে প্রত্যায়ন পত্রে মৎস কর্মকর্তার সাক্ষরে তারিখ রয়েছে ২০২৪ সালের জুলাই মাসের ১০ তারিখে। অথচ সেই কর্মর্কতা সাভার থেকে বদলি হয়েছে একই বছরের মে মাসের ৮ তারিখে। সাক্ষরেও রয়েছে গরমিল। তবে চোখে ধরা পড়েনি কর্তৃপক্ষের।
উপজেলা সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ই মার্চ দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ইজারা আবেদন আহ্বান করে। পরে ২০ই মার্চ প্রাথমিক আবেদন যাচাই বাছাই শেষে দেখা যায় সর্বোচ্চ দরপত্র দিয়েছেন বাতিঘর শ্রমজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড নামের একটি সংগঠন। যেখানে সভাপতি হিসেবে রয়েছে আজিজুল হক মীর নামের এক ব্যক্তি। সমিতি নিবন্ধন হয় এবছরের জানুয়ারির ২০ তারিখে।দরপত্র সে তিনবছর জন্য পুকুর ইজারার জন্য ৬লাখ ২০ হাজার টাকা প্রস্তাব করেন।
প্রত্যায়ন পত্র যাচাই বাছাই জন্য তৎকালীন সাভার উপজেলা মৎস কর্মকর্তা কামরুল হাসান সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, আজিজুল হক মীরকে চিনেন একজন ব্যারিস্টার হিসেবে। সে আমার কাছে কখনও আসেনি। আর আমি তো সাভার থেকে চলে আসি ২০২৪ সালের মে মাসে। আমি কিভাবে তাকে একই বছরের জুলাই মাসে প্রত্যায়ন দিবো। আমি চলে আসা মানে আমার সাভারের সকল কার্যক্রম শেষ।
তিনি প্রত্যায়ন পত্র দেখে আরও বলেন, এখানে যে সাক্ষর করা হয়েছে সেটি হুবহু করার চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্ত আমার মত হয়নি। সাক্ষর টা তাদের দেওয়া,এবং এই প্রত্যায়ন পত্র জাল করা হয়েছে। আমি অবশ্যই এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সাভার উপজেলা বর্তমান মৎস কর্মকর্তাকে অনুরোধ জানাবো যেন ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
এব্যাপারে সাভার উপজেলা মৎস কর্মকর্তার মো জসিম উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
জাল প্রত্যায়ন পত্র ব্যবহার করে ইজারার আবেদন করার বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যারিস্টার আজিজুল হক মীর কে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও সে ফোন রিসিভ করেননি।
বাতিঘর শ্রমজীবি সমবায় সমিতির লিমিটেড সম্পাদক মাহিম মীর বলেন, আমি শুধু কমিটি আবেদন ও নিবন্ধন করার বিষয়ে জানি। ইজারার বিষয়ে তেমন কিছু জানি না। তবে এমন কিছু করে থাকলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু বকর সরকার বলেন, এ ধরনের কিছু পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একটি অভিযোগ দিলে সে প্রেক্ষিতে পুনরায় যাচাই বাছাই করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।