আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাজ্যে অবৈধভাবে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে দুই দেশ। বৃহস্পতিবার দেশ দুটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম বৈঠকেই এটি স্বাক্ষরিত হয়।
ব্রিটেনের প্রভাবশালী সংবাদপত্র দ্য টেলিগ্রাফ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের মার্চ মাস থেকে চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত ১১ হাজার বাংলাদেশি ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। তাদের মাত্র পাঁচ শতাংশের আবেদন সফল হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।
রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের যে সুবিধা ব্রিটেনে রয়েছে বাংলাদেশিরা সেটির অপব্যবহারের চেষ্টা করেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এজন্য তারা পেছনের দরজা ব্যবহারের চেষ্টা করছে বলে দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
লন্ডনে বাংলাদেশের হাইকমিশন থেকে জানানো হয়েছে, আগে ইইউ’র সঙ্গে থাকা চুক্তির আওতায় ব্রিটেন থেকে অবৈধ নাগরিকদের ফেরত পাঠানো হলেও ব্রেক্সিটের পর দেশটির সাথে কোনো চুক্তি ছিল না। তাই এই সমঝোতা করা হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদন বলছে, মাত্র পাঁচ শতাংশ বাংলাদেশির রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন গৃহীত হয়। আর বেশিরভাগ আবেদন খারিজ হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে সাধারণত তিন ধরনের ভিসা নিয়ে যাওয়া ব্যক্তিরা রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন। শিক্ষার্থী, শ্রমিক বা ভ্রমণ ভিসায় গিয়ে দেশটিতে স্থায়ীভাবে থাকার প্রত্যাশায় অ্যাসাইলামের আবেদন করেন অনেকে।
যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অভিবাসীদের আইনি সহায়তা দিয়ে থাকেন সিনিয়র কোর্ট অফ ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলসের সলিসিটর আব্দুর রকিব।
তিনি জানান, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী যেসব শর্ত মিললে অ্যাসাইলাম পাওয়া যায়, সেগুলো মিলছে না। নিজ দেশে জীবনের ঝুঁকি আছে, এটি প্রমাণ করতে না পারলে, রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার সুযোগ থাকে না।
আরেকজন আইনজীবী জুয়েল চক্রবর্তী জানান, অনেকে ডকুমেন্ট অনুযায়ী প্রোপার ইন্টারভিউ দিতে পারেন না। তবে নতুন সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের খবরে অভিবাসন বিষয়ক আইনজীবীদের উদ্বিগ্ন হয়ে কেউ কেউ ফোন করছেন বলেও জানান জুয়েল।
লন্ডনভিত্তিক অভিবাসন আইনজীবী আব্দুর রকিব বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই এই দেশে অভিবাসন বিরোধী জনমত প্রবল। ফলে, এটি রাজনৈতিক অঙ্গীকারেও অগ্রাধিকার পেয়ে আসছে।এখানকার মানুষ এতো মাইগ্রেন্ট চায় না। অবৈধভাবে থেকে কম প্রাইসে কাজ করবে, কিছু মৌলিক সুবিধা নিবে। এতে অন্য ব্রিটিশরা বঞ্চিত হবে।
গত কয়েকটি জাতীয় নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টি তাদের ইশতেহারের প্রতিশ্রুতি হিসেবে অভিবাসীর সংখ্যা হ্রাসের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায়, রাকিব মনে করেন, আগামী নির্বাচনের আগে সরকার দেখাতে চায় যে তারা কাজ করছে।
যুক্তরাজ্য সরকারের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, ২০২২ সালে দেশটিতে ৭ লাখ ৪৫ হাজার মানুষ অভিবাসন গ্রহণ করেছে, যেটি যুক্তরাজ্যের অভিবাসন ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।