আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ওমান সাগর থেকে গ্রিক কোম্পানির মালিকানাধীন তেলবাহী ট্যাংকারটি জব্দ করেছে ইরানি বাহিনী। ইরানি রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, গত বছর যুক্তরাষ্ট্র এই একই ট্যাংকার এবং তাতে থাকা ইরানি তেল জব্দ করার প্রতিশোধ নিতে তারা কাজটি করেছে।
মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী সেন্ট নিকোলাস নামের ট্যাংকারটি ইরাক থেকে তেল নিয়ে তুরস্কে যাচ্ছিল। আজ বৃহস্পতিবার ট্যাংকারটি ইরানিরা জব্দ করে। জাহাজটিতে এক লাখ ৪৫ হাজার ব্যারেল তেল রয়েছে। তারা জানিয়েছে, আদালতের নির্দেশে তারা এ কাজ করেছে। এর ফলে লোহিত সাগরীয় এলাকার উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেল। যুক্তরাষ্ট্র গত বছর যখন ইরানি তেল জব্দ করেছিল, তখনই তারা বলেছিল, তারা এর প্রতিশোধ নেবে।
সেন্ট নিকোলাস নামের ট্যাংকারটি এম্পায়ার নেভিগেশন নামের একটি গ্রিক শিপিং কোম্পানির সাথে সম্পৃক্ত। অ্যাথেন্সভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি অবশ্য এখনো ছিনতাইয়ের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে তারা জানিয়েছে, তারা ট্যাংকারটির সাথে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলেছে। জাহাজটিতে ১৯ জন ক্রু ছিল। এদের মধ্যে ১৮ জন ফিলিপাইনের, একজন গ্রিসের। জাহাজটি ইরাকের বসরা থেকে তেল নিয়ে তুরস্কের আলিগায় যাচ্ছিল।
ব্রিটিশ সমুদ্র নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান আমব্রে জানিয়েছে, চার থেকে পাঁচজনের মতো সশস্ত্র ব্যক্তি সামরিক-ধরনের কালো পোশাক পরে জাহাজটিতে ওঠে। জিএমটি সময় বৃহস্পতিবার ৩.৩০-এর দিকে জাহাজটির সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
বেসরকারি সমুদ্র গোয়েন্দা সংস্থা ট্যাংকার ট্রাকার্স জানিয়েছে, জিএমটি ৪.৪০ পর্যন্ত ট্যাংকারটি ওমান উপকূলের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে চলছি। তারপর হঠাৎ করে এটি দিক বদলিয়ে ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর বন্দর-ই-জাস্কের দিকে চলতে শুরু করে।
ট্যাংকার ট্রাকার্স জানায়, কোনো গ্রুপ হামলার দায়দায়িত্ব স্বীকার করেনি। তবে তাদের মনে হচ্ছে, ইরানের সাথে সংশ্লিষ্ট কোনো গ্রুপ কাজটি করেছে।
ট্যাংকারটির আগের নাম ছিল সুয়েজ রাজন। ইরানি তেল পরিবহন করার অভিযোগে গত বছর মার্কিন কর্তৃপক্ষ জাহাজটি জব্দ করেছিল। এর বদলা নিতে মার্কিন কোম্পানি শেভরনের জন্য কুয়েত থেকে তেল পরিবহন করা একটি ট্যাংকার জব্দ করে ইরান।
অক্টোবরে জাহাজের মালিক কোম্পানি এম্পায়ার জানায়, মার্কিন বিচার দফতরের সাথে তাদের বিরোধ নিষ্পত্তি হয়েছে। ১০ লাখ ব্যারেল তেল পরিবহনের অভিযোগে তারা ২৪ লাখ ডলার জরিমানা দেয়।
ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের হাউছিরা নভেম্বর থেকে দক্ষিণ লোহিত সাগরের জাহাজ চলাচল রুটে ২৫ বারের বেশি হামলা চালিয়েছে। আর চলতি সপ্তাহে তারা সবচেয়ে বড় হামলাটি চালায়। তারা ইসরাইলের সাথে সম্পর্কি জাহাজের ওপর মূলত হামলা চালায়।
বুধবার জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদ লোহিত সাগরে জাহাজের ওপর হামলা বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে। তাছাড়া হাউছিদের হাতে আটক গ্যালাক্সি লিডারকে ছেড়ে দেয়ার দাবিও জানানো হয়েছে। তবে হাউছিরা এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বলছে, গাজায় ইসরাইলি হামলা বন্ধ না হলে তারা ইসরাইল সম্পর্কিত জাহাজে আক্রমণ অব্যাহত রাখবে।
সূত্র : আল জাজিরা, ফিন্যান্সিয়াল টাইমস, টাইমস অব ইসরাইল এবং অন্যান্য
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।