আলাউদ্দিন আলাদিন : হ্যাকার বা হ্যাকিং– শব্দ দুটির সঙ্গে কমবেশি পরিচিতি আছে সবার। বিশ্বের প্রতিটি দেশই এখন সাইবার হামলার ভয়ে থাকে। প্রযুক্তির বৈপ্লবিক সুবিধা বাড়ার সঙ্গে যেন পাল্লা দিয়েই বাড়ছে সাইবার হামলার ঘটনা। কারিগরি সুদক্ষ কিছু লোক বা গ্রুপ আছে, যারা বিশ্বজুড়ে ব্যবসা আর তথ্যের গোপনীয়তা ভাঙার কাজে নিয়োজিত। সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ২০২৫ সালের মধ্যে সাইবার ক্রাইম থেকে সুরক্ষা পেতে নিরাপত্তা ব্যয় বেড়ে ১০ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।
অ্যাড্রিয়ান লেমো
অ্যাড্রিয়ান লেমোকে বলা হয় হোমলেস হ্যাকার। দারিদ্র্যের মধ্যে বেড়ে ওঠা অ্যাড্রিয়ান টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে সাইবার ক্যাফেতে হ্যাকিং শেখা শুরু করেন। মাইক্রোসফট, নিউইয়র্ক টাইমসের মতো প্রতিষ্ঠানের সিস্টেমকে হ্যাক করে অবাক করা ক্ষতি মুখোমুখি করে যিনি নিজের জাত চিনিয়েছেন। যদিও এফবিআই তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে। আর তাঁকে জরিমানা গুনতে হয় ৩৫ হাজার ডলার।
ডিনাইয়াল অব সার্ভিস অ্যাটাক
২০০০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ঘটনা। ১৫ বছর বয়সী মাইকেল ক্যালস ওরফে মাফিয়াবয় দুষ্টুমির ছলে অ্যামাজন, সিএনএন, ইবে আর ইয়াহু ছাড়াও বেশ কিছু বৃহৎ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে ডিডস (DDoS) আক্রমণ করে বসেন; যার নাম দেওয়া হয় ‘ডিনাইয়াল অব সার্ভিস অ্যাটাক’। এরপর তাৎক্ষণিক ভেঙে পড়ে সাইটগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ধারণা করা হয়, মাফিয়াবয়ের আক্রমণে প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। ২০০১ সালে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তখন কিশোর বয়সী হওয়ায় আট মাসের জন্য উন্মুক্ত হেফাজতে সাজা দেওয়া হয়। তাঁর চলাফেরা এবং অন্যান্য কাজে নজরদারি বাড়ানো হয়। ক্যালসের অনলাইন অ্যাকসেসও ছিল আদালত নিয়ন্ত্রিত। ২০০৮ সালে কলামিস্ট ক্রেইগ সিলভারম্যান ও ক্যালস যৌথভাবে হ্যাকিংয়ের ওপর বই প্রকাশ করেন।
সোলার সানরাইজ
১৯৯৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি। ওই সময় ইরাকে আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছিল যুক্তরাষ্ট্র। তখন একদল হ্যাকার যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কম্পিউটারের নেটওয়ার্কের ২০টির বেশি সিস্টেমের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। তারা সেখানে ‘স্নিফারস’ নামে ট্র্যাপ ডোর টুল ইনস্টল করে দেয়। হ্যাকাররা সান সোলারিস অপারেটিং সিস্টেমে চলমান কম্পিউটারগুলোকে নিয়ন্ত্রণে নেয়। তাই ওই সম্মিলিত আক্রমণকে বলা হয় ‘সোলার সানরাইজ’। অবাক হওয়ার ঘটনা হচ্ছে, হ্যাকিংয়ের সঙ্গে জড়িত কোনো ইরাকি অপারেটিভ ছিল না। মার্কিন সরকার বিষয়টি তদন্তের জন্য এফবিআই এবং ডিফেন্স ইনফরমেশন সিস্টেম এজেন্সি ছাড়াও বেশ কয়েকটি প্রতিরক্ষা বিভাগকে একত্র করে। তদন্তের ফলে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে তিন কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ক্যাভিন মিটনিখ
বিখ্যাত হ্যাকার ক্যাভিন মিটনিখ সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবক্তা হিসেবে সুপরিচিত। যুক্তরাষ্ট্রের (মোস্ট ওয়ান্টেড) হ্যাকার হিসেবে পরিচিত ক্যাভিনের গল্প অবলম্বনে হলিউডে সিনেমাও হয়েছে; যার নাম ‘দ্য সিক্রেট বুক অব হ্যাকিং’। যুক্তরাষ্ট্রের সিকিউরিটি সিস্টেমে আঘাতের জন্য তাঁকে বেশ কয়েকবার হাজতবাস করতে হয়। জেল থেকে বেরিয়ে তিনি দেশের জন্য হ্যাকিং সুরক্ষা নিয়ে কাজ করছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।