লাইফস্টাইল ডেস্ক : বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধে চিরতা খুবই কার্যকর। ৪০টিরও বেশি রাসায়নিক উপাদান চিরতা থেকে শনাক্ত করা হয়েছে। বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যমে সব উপাদানের বেশির ভাগেরই জৈব রাসায়নিক কার্যকারিতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ইউনানী চিকিৎসা অনুযায়ী চিরতা হৃৎপিণ্ড ও যকৃতের সবলকারক, চোখের জ্যোতিবর্ধক ও জ্বর রোগে বিশেষ উপকারী। এছাড়া, হাঁপানিতে এর ব্যবহারে ভালো ফল পাওয়া যায়। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মোতাবেক চিরতা স্নিগ্ধকারক, হজমকারক, চুরোগনাশক ও লিভার রোগ উপশমকারী।
চিরতার লোকায়তিক প্রয়োগ
১. প্রচণ্ড বমিতে: পিত্তজ্বরে বা ঘন ঘন বমি হচ্ছে যেটা তিতা ও কিছুটা জ্বর আছে এবং পেটে কিছুই থাকছে না, সেক্ষেত্রে ২ কাপ গরম পানিতে ৫ গ্রাম চিরতা একটু থেঁতো করে ভিজিয়ে রাখতে হবে। ২-৩ ঘণ্টা বাদে ওটা ছেঁকে অল্প করে খেতে হবে তাহলে এ সমস্যা দূর হবে।
২. ইনফুয়েঞ্জায়: ৫ থেকে ১০ গ্রাম চিরতা ৪ কাপ পানিতে সিদ্ধ করে ২ কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে সকালের দিকে অর্ধেকটা এবং বিকালের দিকে অর্ধেকটা খেতে দিতে হবে।
৩. ডায়াবেটিসে: ডায়াবেটিস নানা ধরনের হতে পারে। তবে যে ধরনেরই হোক না কেন ৫০০ মিলিগ্রাম চিরতা চূর্ণ ও ২ গ্রাম ছোট গোচূর্ণ একসাথে মিশিয়ে সকালে ও বিকালে পানিসহ দু’বার খেতে হবে। তাহলে এই রোগ প্রশমিত হবে।
৪. রক্তপিত্তে: এই সমস্যায় ৪ বা ৫ গ্রাম চিরতা দেড় বা দু’কাপ ঠাণ্ডা পানিতে ঘণ্টাখানিক ভিজিয়ে রেখে ৩-৪ বার খেতে হবে।
৫. ক্রিমির উপদ্রবে: পেটের ওপরের অংশে মোচড়া দিয়ে ব্যথা যা সাধারণত ২ থেকে ৮ বছরের বালক বালিকাদেরই বেশি হয়; এক্ষেত্রে ২৫০ থেকে ৫০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত চিরতা অল্প মধু অথবা একটু চিনি মিশিয়ে খেতে দিতে হবে। এর ফলে ক্রিমির উপদ্রবজনিত পেটে ব্যথা সেরে যাবে।
৬. নবপ্রসূতার স্তন্য শোধনে: অনেক সময় দেখা যায়, নবপ্রসূতার শরীরে জ্বর জ্বর ভাব, জড়তা, এসিডিটি প্রভৃতি দেখা দেয়। এই মায়ের বুকের দুধ খেয়ে সন্তানের পেটফাঁপা, বমি, সাদা বা সবুজ ধরনের পায়খানা প্রভৃতি দেখা দেয়। এক্ষেত্রেও ৪ বা ৫ গ্রাম চিরতা ২ কাপ ঠাণ্ডা পানিতে ৩-৪ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে সেটা ছেঁকে খেলে মায়ের স্তন্য দোষের সংশোধন হবে।
৭. প্রবল হাঁপানিতে: একজিমার সাথে যাদের হাঁপানি অথবা অর্শ্বে রক্তপড়া বন্ধ হওয়ায় হাঁপানি প্রবলাকার ধারণ করেছে, এমনটি হলে আধা গ্রাম চিরতা চূর্ণ ৩ ঘণ্টা অন্তর ২-৩ বার মধুসহ চেটে খেতে হবে। ফলে হাঁপানির প্রকোপটা কমে যাবে।
৮. গর্ভাবস্থায় বমিতে: গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে বমির উদ্রেক হয়। এ ক্ষেত্রে চিরতা চূর্ণ ১ গ্রাম করে চিনির পানি দিয়ে খেলে ওই বমি হওয়াটা বন্ধ হয়ে যায়।
বাহ্য প্রয়োগ
১. চুল পড়া রোধে: হয়তো কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না চুল পড়ে যাচ্ছে সে ক্ষেত্রে ২-৩ গ্রাম চিরতা ১ কাপ গরম পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সেই পানিটা ছেঁকে মাথা ধুলে চুল ওঠা কমে যাবে। তবে ১ দিন পরপর ৩-৪ দিন ধুতে হবে। এছাড়াও ২৫ গ্রাম চিরতা ফুল ২০০ গ্রাম নারকেল তেলে ভেজে ওই তেল মাথায় ব্যবহারে খুসকিসহ মাথায় ফুসকুড়ি ওঠা বন্ধ হয়।
২. পচা ঘায়ে: যেসব পচা ঘা সহজে সারছে না সেসব ঘায়ের ক্ষেত্রে ১০ গ্রাম চিরতা রাতে ১ কাপ বা গ্লাস গরম পানিতে ভিজিয়ে পরের দিন সে ঘা ধুলে ২-৩ দিনে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
৩. যেকোনো চুলকানিতে: ২০ গ্রাম চিরতাকে অল্প পানি দিয়ে ছেঁকে লোহার কড়াইতে সরষের তেল গরম করে তাতে ভাজতে হবে যেন পুড়ে না যায়। এরপর ওটাকে নামিয়ে ছেঁকে অল্প অল্প করে নিয়ে চুলকানিতে ঘষে লাগালে ২-৩ দিনের মধ্যে উপশম হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।