আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের একটি টানেলে থেকে ৫ জিম্মির মরদেহ খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছে ইসরায়েল। নিহত ওই পাঁচজনই ইসরায়েলি এবং তাদের মধ্যে তিনজন ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর সদস্য ছিলেন বলে জানা গেছে।
সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামাসের সশস্ত্র শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডস জানিয়েছিল, পাঁচজন ইসরায়েলি বন্দিকে আটক রাখা একটি দলের সাথে তাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং ওই বন্দিরা ইসরায়েলি হামলায় নিহত হতে পারে। এরপরই রোববার সন্ধ্যায় গাজা উপত্যকার একটি টানেল থেকে পাঁচ ইসরায়েলির মরদেহ উদ্ধারের বিষটি নিশ্চিত করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ইসরায়েলি বাহিনী উত্তর গাজা উপত্যকার জাবালিয়া অঞ্চলে সুড়ঙ্গের একটি নেটওয়ার্ক উন্মোচন করেছে এবং সেখান থেকে পাঁচ ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ উদ্ধার করেছে।’
কয়েকদিন আগে আল-কাসাম ব্রিগেডসের প্রকাশিত একটি ভিডিওতে এই পাঁচ বন্দির মধ্যে তিনজনকে দেখানো হয়েছে। সেই ভিডিওতে বন্দিরা তাদের মুক্ত করার জন্য ইসরায়েলি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।
হাগারি বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী দক্ষিণ গাজা উপত্যকার খান ইউনিস শহরে তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারণ করতে চায়। শহরটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার লক্ষ্যেই সেখানে কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হবে। তবে এই কাজে ‘উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সময় লাগতে পারে’ বলেও জানান তিনি।
গাজা উপত্যকায় স্থল আক্রমণকে ‘জটিল’ হিসাবে বর্ণনা করে হাগারি আরও বলেন, ‘আমাদের পক্ষে হতাহতের ঘটনা ছাড়া হামাসকে ধ্বংস করা অসম্ভব।’
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। তারপর থেকেই গাজায় বিমান হামলা ও স্থল অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল। দুই মাসের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় গাজায় ২০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে ৭০ শতাংশেরও বেশি নারীও শিশু। আহত হয়েছেন ৫৪ হাজার ফিলিস্তিনি।
এছাড়া ইসরায়েলি বর্বরোচিত হামলায় গাজার হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। যা গত ৭৫ বছরে ফিলিস্তিনিদের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক সংঘর্ষ হিসাবে চিহ্নিত করেছে।
মাঝে এক সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতিতে ৮৪ ইসরায়েলি এবং ২৪ বিদেশিকে মুক্তি দেয় হামাস। বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগার থেকে ২৪০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে ৭১ জন মহিলা এবং ১৬৯ জন শিশু রয়েছে।
যুদ্ধবিরতি শেষে গত ১ ডিসেম্বর থেকে গাজা উপত্যকায় পুনরায় সংঘাতে জড়ায় ইসরায়েল ও হামাস।
অন্যদিকে হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন ১ হাজার ২০০ জন। পাশপাশি ইসরায়েল থেকে প্রায় ২৪০ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে যায় হামাস। এরমধ্যে বন্দিবিনিময়ে ১০৫ জনকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। তাদের কাছে এখনো প্রায় ১৩০ জন জিম্মি রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।