আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছরে দৈনন্দিন জীবনের সব সময়ের সঙ্গী হয়ে গেছে মাস্ক ও স্যানিটাইজার। কিন্তু যেখানে ভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে, সেই স্যানিটাইজারই আবার আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠেছে ভারতের হায়দরাবাদে।
দেশটির নিজামস ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেসের (নিমস) তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে শহরটির ৮০ জন স্যানিটাইজার খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। হায়দরাবাদ শহর ছাড়া আশপাশের এলাকা থেকেও এ রকম ২০টি ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। সংখ্যাটা আরও বেশি হতে পারে বলে মত সংশ্লিষ্টদের। কারণ, এমন বহু ঘটনা অনেক সময় নথিভুক্তের বাইরে থেকে যায়।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, কোভিড পরিস্থিতির কারণে এখন স্যানিটাইজার খুবই সহজলভ্য। কেউ কেউ মজারছলে মদের সঙ্গে স্যানিটাইজার মিশিয়ে খাচ্ছেন বলেও মাঝে মধ্যে খবর পাওয়া যায়।
নিমসের মেডিসিন বিভাগের প্রধান চিকিৎসক অসীমা শর্মা বলেন, কেউ কেউ সরাসরি স্যানিটাইজার খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। কেউ আবার মদের সঙ্গে মিশিয়ে পান করেছেন। অতিমারি শুরুর পর থেকেই স্যানিটাইজারের ব্যবহার অত্যধিক হারে বেড়ে গেছে। কেননা, এটি সহজেই পাওয়া যাচ্ছে।
অসীমা শর্মা বলেন, যারা আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন তাদের বেশির ভাগই কম বয়সী। বেশ কিছু কৃষকও ছিলেন তাদের মধ্যে। তারা মূলত মফস্বল ও গ্রামীণ এলাকার। স্যানিটাইজার খাওয়ার ফলে তাদের অন্ত্র ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
তিনি আরও বলেন, স্যানিটাইজার অন্ত্রনালী জ্বালিয়ে দেয়। তবে বেশ কয়েকবার অস্ত্রোপচারের পর ধীরে ধীরে সুস্থ হন এই রোগীরা।
শহরের সরকারি গাধী হাসপাতালের এক জুনিয়র চিকিৎসক জানিয়েছেন, যারা হোস্টেলে থাকেন, পরীক্ষায় ভালো ফল করেননি, এমন বহু পড়ুয়ার মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এ রকম বহু রোগী তাদের হাসপাতালে এসেছেন, যারা স্যানিটাইজারের গোটা বোতল পান করে নিয়েছিলেন।
এক জরিপে দাবি করা হয়, মহামারির কারণে বাজারে যত স্যানিটাইজার এসেছে, তার ৫০ শতাংশ নকল। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের স্যানিটাইজার পান করলে অন্ত্রের বেশি ক্ষতি হয়। হায়দরবাদে এই ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকায় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এরই মধ্যে সতর্কবার্তা দিয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।