জুমবাংলা ডেস্ক : আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের কুষ্টিয়ার বাসায় হামলা চালানো হয়েছে। রবিবার (৪ আগস্ট) সন্ধ্যার একটু আগে এ ঘটনা ঘটে। হানিফ কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য।
এছাড়া কুষ্টিয়ায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষে পুরো শহর রণক্ষেত্রে পরিনত হয়। আন্দোলনকারীরা শহরের এনএস রোড এবং কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের মজমপুর গেট থেকে চৌড়হাস মোড় পর্যন্ত এলাকার বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর করে।
তারা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে এবং মহিলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতৃবৃন্দকে মারধর করে। হামলায় বাংলাদেশ ফোডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি ও নিউ নেশন পত্রিকার কুষ্টিয়া প্রতিনিধি আফরোজা আক্তার ডিউ আহত হন।
এরপর আন্দোলনকারীরা শহরের চার রাস্তার মোড়ে অবস্থিত কুষ্টিয়া মডেল থানার মূল ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ রাবার বুলেট এবং টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করলে হামলাকারীরা সেখান থেকে সরে যায়। তারা শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর করে এবং সেখানে আগুন লাগিয়ে দেন।
এরপরই আন্দোলনকারীরা কুষ্টিয়ার মজমপুরের ট্রাফিক পুলিশের কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে তিন সাংবাদিকসহ প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়।
সংঘর্ষের সময় শহরের মুজিব চত্বরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুর করে আগুন দেয়া হয়। এছাড়াও ভাঙচুর ও আগুন দেয়া হয়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
সন্ধ্যার ছয়টার পর তারা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি’র পিটিআই রোডের বাড়িতে হামলা চালায়। ভেঙে ফেলা হয় একটি মোটরসাইকেল এবং আসবাবপত্র। পরে পুলিশ গিলে টিয়ারশেল এবং রাবার বুলেট ছুড়লে হামলাকারীরা চলে যায়।
কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খান বলেন, ‘কিছু উচ্ছৃঙ্খল লোক এই হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। তবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়-ক্ষতি হয়নি।’
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি নাথ বলেন, পুলিশ চরম ধৈর্য্যের পরিচয় দেয়ার পরও তারা ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। পুলিশ তাদের থামাতে প্রাণপন চেষ্টা করে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল এবং রাবার বুলেট ছুড়তে বাধ্য হয়। এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত কতজন আহত হয়েছে তা বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে পুলিশের কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এদিকে, সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি ঘিরে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ব্যাপক সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। রোববার এই কর্মসূচির প্রথম দিনে সরকার-সমর্থিত নেতা-কর্মী ও পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে রাজধানী ঢাকাসহ ২০টি জেলা-মহানগরে অন্তত ৯৬ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় ১৩ জন ছাড়াও কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জে পৃথক হামলায় হাইওয়ে থানার এক পুলিশসহ ১৪ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।