জুমবাংলা ডেস্ক : পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা এবং তারা পাকিস্তানের দ্বারা পরিচালিত। বিভিন্ন সময় তারা বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপিকে অর্থায়ন করেছেন। রোববার (২৭ আগস্ট) কলকাতায় এমন মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম মৃত্যু বার্ষিকী ও বাংলাদেশের জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে কলকাতার রোটারি সদনে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সংঘ একটি স্মরণ সভার আয়োজন করে। সেখানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে এমন মন্তব্য করেন মাহবুব উল আলম হানিফ।
বিএনপি ভারতকে নিয়ে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে এবং ভাবছে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপি ভারতকে নিয়ে কতটা ভাবছে, কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে সেটা তারাই বলতে পারবে। তাদের কথাবার্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে দেখা গেছে এই দলটা মূলত তৈরি হয়েছে আইএসআই এর মাধ্যমে। বহুবার প্রমাণিত হয়েছে যে, তারা পাকিস্তান দ্বারা পরিচালিত। এমনকি ২০০১ সালে পাকিস্তানের হাইকোর্টে তৎকালীন পাকিস্তানের গোয়েন্দা প্রধান একটি মামলায় সাক্ষ্য দিতে গিয়ে বলেছিলেন তারা বিভিন্ন সময় বেগম খালেদা জিয়াকে, বিএনপিকে অর্থায়ন করেছেন। সেই দলের কাছে ভারত সম্পর্কে কতটা আগ্রহ বা আন্তরিকতা থাকবে, সেটা ভারতই বিবেচনা করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক থাকবে। বাংলাদেশের ক্ষমতার মালিক দেশের জনগণ। তারা যাদের পক্ষে থাকবে, তারাই জয়লাভ করবে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের জন্য কাজ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ফের নির্বাচনে জয়লাভ করে ক্ষমতায় আসবে।’
বিএনপি, জামায়েতসহ দেশের যুদ্ধাপরাধী শক্তিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘১৯৭১ এর যুদ্ধে পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। তাদের লক্ষ্য ছিল তাকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তানের অধীনে নিয়ে যাওয়া যাবে।’
তার অভিযোগ, জিয়াউর রহমান আসলে মুক্তিযুদ্ধ ছিলেন না। উনি ছিলেন ছদ্মবেশী মুক্তিযোদ্ধা। তার কিছু কর্মকাণ্ডের মধ্যে দিয়েই সেটা প্রমাণিত হয় যে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সঙ্গে জিয়াউর রহমান যুক্ত ছিলেন।
মাহবুব উল আলম হানিফ আরো বলেন, ‘১৯৭১ সালে সংখ্যালঘু মানুষের উপর অত্যাচারের ঘটনায় যারা জড়িত ছিলেন, তারা ফের নাশকতা করার চেষ্টা করছে। আমাদের সরকারও তা দমন করার চেষ্টা করছে। শুধু তাই নয়, একাত্তরের যুদ্ধে ভারতে-বাংলাদেশের মধ্যে যে সম্পর্ক ছিল সেই সম্পর্কের উপরেও আঘাত হানার চেষ্টা হয়। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকার আসার পর সেই সম্পর্ক ফের অগ্রগতি আসে।’
পশ্চিমবঙ্গের সরকারি স্কুলের পাঠ্যবইতে বঙ্গবন্ধুকে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের স্কুলে বঙ্গবন্ধু কিংবা বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা সম্পর্কে ভারতের স্কুলের পাঠ্যবইতে কোন বিষয়ে পড়ানো হবে সেটা সে দেশের সরকার ঠিক করবে। তবে আমরা মনে করি ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে ভারতের বিশেষ অবদান ছিল। ইতিহাসের এই অংশগুলো পাঠ্যবইতে আসা উচিত। একটি দেশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে আরেকটি দেশের জনগণের কি অবদান ছিল তা শিক্ষার্থীদের জানা উচিত।’
দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে হানিফ বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের প্রতি তার যে আন্তরিকতা বিশেষ করে শেখ হাসিনার প্রতি তার যে মানসিকতা, আন্তরিকতা এটা আমাদের জাতিকে কৃতজ্ঞভাবে আবদ্ধ করেছে। আমরা চাই ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্কের মধ্য দিয়ে দুই দেশ এগিয়ে যাক।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার, কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ উপদূতাবাসের উপরাষ্ট্রদূত আন্দালিব ইলিয়াস, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী সংঘের সভাপতি শিশির বাজোরিয়া, বিশিষ্ট সমাজসেবী আবু নাসের প্রমুখ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।