স্পোর্টস ডেস্ক : জার্মানির বিপক্ষে আগের চার দেখাতে একটিও জয় ছিল না জাপানের। পঞ্চম দেখাতেও জার্মানির দিকেই পাল্লা ছিল ভারি। ম্যাচে প্রাধান্য বিস্তার করে এগিয়েও গিয়েছিল চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। তবে ম্যাচের শেষের দিকে দারুণ চাপ তৈরি করে গোল আদায় করে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে এশিয়ার ব্রাজিল খ্যাত জাপান। কোচ হাজিমে মরিয়াসু বলছেন, পরিকল্পনামাফিক ফুটবল খেলতে পারায় সম্ভব হয়েছে এ অসাধ্য সাধন।
আল রাইয়ানের খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে বুধবার (২৩ নভেম্বর) গ্রুপ ‘ই’র ম্যাচে জার্মানিকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে অঘটনের জন্ম দেয় জাপান। গত বিশ্বকাপে এশিয়ার আরেক দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষেও হেরেছিল চারবারের চ্যাম্পিয়নরা।
এদিন ম্যাচের অষ্টম মিনিটে জার্মানির জালে বল পাঠায় জাপান। কিন্তু অফসাইডের কারণে গোল বাতিল করে দেন রেফারি। এরপরই জাপানকে চেপে ধরে জার্মানি। একের পর এক আক্রমণ শানাতে থাকে ডাই ম্যানশাফটরা।
ম্যাচের ৩৩ মিনিটে পেনাল্টি পায় জার্মানি। স্পটকিক থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন ইলকায় গুন্দোগান। ম্যাচের অধিকাংশ সময় বল দখলে রাখে জার্মানরা। তবে ম্যাচের ৭৫ মিনিটে জার্মানিকে চমকে দেয় জাপান। ব্লু সামুরাইদের সমতায় ফেরান রুতু দোয়ান। এর আট মিনিট পর তাকুমা আসানোর গোলে তারা স্তব্ধ করে দেয় জার্মানিকে। দ্বিতীয়ার্ধে মোট পাঁচ খেলোয়াড় বদলি করেছিলেন কোচ মরিয়াসু। এ দুজনও বদলি হিসেবে নেমে পাল্টে দিয়েছেন ফল।
ম্যাচের পর মরিয়াসু জানান, পরিকল্পিত ফুটবল খেলতে পারাতেই এসেছে এ ফল। তিনি বলেন, ‘আমরা আক্রমণাত্মক শুরু করতে চেয়েছিলাম এবং খেলায় আধিপত্য বিস্তার করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু জার্মানি খুব শক্তিশালী দল; তাই আমাদের অবিচল থেকে রক্ষণ সামলানো এবং সুযোগ কাজে লাগানোর দরকার ছিল।’
জার্মানির বিপক্ষে অনেক কিছু ভেবে বিকল্প পরিকল্পনা সাজিয়ে রেখেছিলেন তিনি। ব্লু সামুরাই কোচ বলেন, ‘আমাদের কৌশলে অনেক বিকল্প ছিল এবং আমরা অনেক রকম পরিস্থিতির কথাই বিবেচনা করেছিলাম। আমরা জানতাম যে আমরা পিছিয়ে পড়তে পারি, এমন কিছুর জন্যও পরিকল্পনা করেছিলাম, তার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম।’
এ ম্যাচের পর তার মনে পড়ে গেছে চার বছর আগের এক ম্যাচের স্মৃতি। রাশিয়া বিশ্বকাপের শেষ ষোলোয় বেলজিয়ামের বিপক্ষে ২-০ গোলে এগিয়ে ছিল জাপান। ৬৮ মিনিট পর্যন্ত লিড ধরে রাখা জাপান পরের পাঁচ মিনিটে হজম করে দুই গোল। আর যোগ করা সময়ে আরেক গোল করে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে যায় বেলজিয়াম।
সে ম্যাচের প্রসঙ্গ টেনে এনে মোরিয়াসু জানান, ইউরোপের ক্লাব ফুটবলে খেলার সুবাদে তার খেলোয়াড়রা এখন ম্যাচের পরিস্থিতি আগের চেয়ে বেশি ভালো বোঝেন।
তিনি বলেন, ‘শেষ দিকে তারা (জার্মানি) পুরো শক্তি নিয়ে আমাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। অতীতে এরকম অবস্থায় হয়তো আমরা হেরে যেতাম। কিন্তু আমাদের খেলোয়াড়রা জার্মানি এবং ইউরোপে খেলছে; তারা সেখান থেকে অনেক কিছু শিখেছে। তাই আমরা লিড ধরে রাখতে পেরেছি।’
জাপানের বিশ্বকাপ স্কোয়াডের মোট ৮ জন খেলেন জার্মানির ঘরোয়া লিগে। গত ম্যাচে জাপানের দুই গোলদাতাই খেলেন বুন্দেসলিগার দল ফ্রেইবুর্গ ও বচুমে। তাই জাপান ফুটবলের বিকাশে জার্মানির অবদান কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন মোরিয়াসু। তিনি বলেন, ‘এ লিগগুলো খেলোয়াড়দের বিকাশে অবদান রেখেছে। আমরা কৃতজ্ঞ। কিন্তু যখন ম্যাচের সময় আসে, আমরা জয়ের জন্যই নামি।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।