মারুফ দেওয়ান : দেশে এখন রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আমরা যারা দীর্ঘদিন প্রবাসে আছি তাদের অনেকেরই এনআইডি করা হয়ে ওঠেনি। দীর্ঘ চার বছর পর এবার ফেব্র‚য়ারিতে দেশে যাওয়ার একটা সুযোগ হলো। তাই ভাবলাম, এই সুযোগে এনআইডি আবেদন করে ফেলব। ইদানীং পত্রপত্রিকায় প্রায়ই দেখা যায় এনআইডি আবেদনের সময় প্রবাসীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তাই আমি একটু ভয়ে ছিলাম, না জানি কী হয়। কিন্তু আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম কত সহজে এবং দ্রুতই কাজটি হয়ে গেল। আমার কাছে মনে হয়েছে সেবা প্রদানে নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাচন অফিস একটি রোল মডেল। আশা করি, আমার এই সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন লেখাটি পড়ে অন্য প্রবাসীরাও (বাংলাদেশে আসা সাপেক্ষে) এনআইডি আবেদনে আগ্রহী হবেন।
প্রথমেই বলে রাখা ভালো, প্রবাসীদের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেবা প্রদানের বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া আছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে এবং এর জন্য প্রবাসীদের ঢাকাস্হ ইসির প্রবাসী ডেস্কে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। সরাসরি মাঠ পর্যায়ে নিজের উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করলেই হলো।
প্রথম দিন সকালে আমি সশরীরে উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে অফিস সহকারীর সঙ্গে দেখা করে বললাম, আমি একজন প্রবাসী, অল্প সময়ের জন্য দেশে আছি এবং নতুন ভোটার হতে চাই। উনি আমাকে একটা লিস্ট দিলেন কী কী কাগজপত্র জমা দিতে হবে। সেখান থেকে বের হয়ে পাশের একটা কম্পিউটার দোকানে গেলাম অনলাইন নিবন্ধন ফরম-২ পূরণ করতে (আপনার বাসায় যদি কম্পিউটার এবং প্রিন্টার থাকে, তাহলে নিজেও এটা করতে পারেন)।
ফরম পূরণকালে প্রদত্ত সব তথ্যাদি সঠিক ও নির্ভুলভাবে লিপিবদ্ধ করতে হবে এবং এটা হতে হবে এসএসসি পাশের সনদ, ডিজিটাল জন্মসনদ ও বাংলাদেশ পাসপোর্ট অনুযায়ী। এরপরে চলে গেলাম নওগাঁ পৌরসভাতে। সেখানে আমার জাতীয়তার সনদপত্র, ভোটার হইনি এই মর্মে প্রত্যয়নপত্র, এবং ফরম-২-এ যাচাইকারী হিসেবে প্যানেল মেয়র-কাউন্সিলরের নাম, এনআইডি নম্বর, স্বাক্ষর ও সিল নিলাম। পৌরসভাতেও সেবাগুলো হয়রানি ছাড়াই পাওয়া গেল।
তারপর লিস্ট অনুযায়ী বাকি সব কাগজপত্র একসঙ্গে করে ঐ দিনেই বিকেলে অফিস সহকারীকে জমা দিতেই উনি আমাকে তিন দিন (প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ের সময়) পরে আসতে বলেন। তিন দিন পরে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করলে উনি একটি অঙ্গীকারনামায় আমার স্বাক্ষর নিলেন এবং আমার আবেদনপত্রটি নিয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসারের সঙ্গে দেখা করতে বলেন।
নির্বাচন অফিসার আমাকে কিছু ছোটখাটো প্রশ্ন জিগ্যেস করলেন (তদন্তের জন্য), অনুমোদন করে আমাকে ডাটা এন্ট্রি/সার্ভার রুমে যেতে বলেন আমার বায়োমেট্রিক তথ্য দেওয়ার জন্য। এ সময় আমাকে এক পৃষ্ঠার একটি ডাটা এন্ট্রি প্রুফ কপি দেওয়া হলো, যাতে আমার প্রদত্ত তথ্যাদি সঠিক আছে কি না যাচাই করে আমার স্বাক্ষর দিতে হয়। বায়োমেট্রিক দেওয়ার পরেই আমার কাজ শেষ, ঐ অফিসে আর যাওয়ার দরকার হয়নি।
এরপর বিদেশে চলে আসি এবং অনলাইনে চেক করে দেখি ১৪ কর্মদিবস পর আমার ভোটার তথ্য দেখা যাচ্ছে। এর সঙ্গে সঙ্গেই এনআইডি কার্ডটি অনলাইন থেকে ডাউনলোড করে নিতে পেরেছি। তাই প্রবাসীরা পরবর্তী দেশ ভ্রমণের সময় এনআইডির আবেদন করে দেখতে পারেন। আশা করি, হয়রানির শিকার হবেন না।
লেখক: ফিনল্যান্ড থেকে
ওমানে আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম মৌলভীবাজারের সাঈদ আলম
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।