জুমবাংলা ডেস্ক : মৌসুমের শুরুতেই রংপুরের বাজার সয়লাব হয়ে গেছে হাঁড়িভাঙ্গা আমে। এই বিভাগের আশেপাশের জেলা ও উপজেলাগুলোতে এখন হরহামেশাই মিলছে সুমিষ্ট আশবিহীন এই আমটি। গত ১০ জুন থেকে বাজারে আসা এই আম এখন জেলার সর্বত্র বিক্রি হচ্ছে (পাকা) ৪০ টাকা কেজি দরে। তবে কাঁচা আম বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা কেজিতে।
রংপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার ৩ হাজার ৫৩৫ হেক্টর জমিতে সব জাতের আমের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৯০৫ হেক্টরে রয়েছে হাঁড়িভাঙ্গা আম। আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫ হাজার ৭৩০ মেট্রিক টন। শুধু হাঁড়িভাঙ্গা আমের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারিত হয়েছে ২৯ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন। আবহাওয়া ভালো থাকলে এবারে এই হাঁড়িভাঙ্গা আম বিক্রি করে প্রায় ২৫০-৩০০ কোটি টাকা আয় করতে পারবেন বাগানিরা।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) দুপুরে রংপুর নগরীর লালবাগ রেলগেট এলাকা, শাপলা চত্বর, জাহাজ কোম্পানি মোড়, মর্ডান মোড়, সাত মাথা, বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন এলাকার আম বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সুমিষ্ট এই আম বিক্রি হচ্ছে খুচরা পর্যায়ে। কেউবা আবার ক্যারেটে করে ২০ কেজি ৪০ কেজি করে দূর জেলায় প্রিয়জনদের কাছে পাঠাতে কিনছেন হাঁড়িভাঙ্গা আম।
আমের ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাঁচা আম প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে রঙ ও আকার ভেদে ৪৫-৫০ টাকা। আর পাকা আম ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
লালবাগ রেলগেট এলাকায় আম কিনতে আসা কলেজ শিক্ষার্থী আমজাদ হোসেন জানান, মেসে থাকি তাই দুই কেজি কাঁচা আম কিনলাম ১০০ টাকা দিয়ে। তবে মৌসুমের শুরুতে ৫০ টাকা কেজি দরে আম একটু চড়া হয়েছে বলেও অভিমত তার।
মনিরুজ্জামান নামের অপর এক ক্রেতা বলেন, ভাই আজ প্রথম আম কিনতে এসেছি। ৫ কেজি পাকা আম কিনলাম ৪০ টাকা করে। পরিবারের সদস্যরা কয়েকদিন থেকে আম খাবে বলে বায়না ধরেছে। আমের সাইজ বেশ ভালো তাই দেখে কিনলাম।
একই বাজরের আম ব্যবসায়ী জিয়াউর রহমান বলেন, আমের বাজার এখনও পরিপূর্ণভাবে জমজমাট হয়নি। তবে হতে শুরু করেছে। প্রতিদিন ভোরে আমরা পদাগঞ্জ এলাকায় গিয়ে বাগনিদের বাগান থেকে আম ছিড়ে এনে এখানে বিক্রি করছি। পাইকারি দরে কাচা আম ৪৫-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। আর খুচরা পর্যায়ে পাকা আম ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি করছি।
আমের দাম মৌসুমের শুরুতে চড়া থাকার বিষয়ে এই ব্যবসায়ী বলেন, গত ১০ তারিখ থেকে বাজারে আসতে শুরু করেছে এই আমটি। কিন্তু অনাবৃষ্টির পর গত দুই দিন থেকে বৃষ্টি হওয়ার কারণে বাগানিরা এখন আম ছিঁড়তে গড়ি-মশি করছেন। ফলে শুরুতে প্রতি কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা দাম বাড়তি থাকছে।
তিনি আরও বলেন, আবহাওয়া গরম থাকলে এবার আমের দাম বড় ব্যবধানে বাড়বে না কারণ হিসেবে এই ব্যবসায়ীর অভিমত- লাগাতার গরম আবহাওয়া থাকলে বাগানে আমগুলো দ্রুত পেকে যাবে। ফলে দ্রুত বিক্রি করার প্রবণতা বাড়বে আম চাষি ও বাগানিদের। আর বৃষ্টির আবহাওয়া থাকলে বাগানিরা গাছ থেকে আম নামাতে চান না। ফলে চড়া দামেও আম ছিড়তে চান না বাগানিরা।
এদিকে, হাড়িভাঙ্গা আমের গোড়াপত্তনকারী নফল উদ্দিন পাইকারের ছেলে আমজাদ উদ্দিন পাইকার জানান, আমারও কয়েকটি আমবাগান আছে। এবার আমের ফলন বেশ ভালো হয়েছে। তবে অনাবৃষ্টির কারণে আমের সাইজ একটু ছোট। গত ৩-৪ দিন থেকে বাজারে উঠতে শুরু করেছে এই হাঁড়িভাঙ্গা আম। দেশের দূরদূরান্ত থেকে আসা পাইকাররা আমাদের বাগান থেকে আম কিনে নিয়ে যাচ্ছেন ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে। আশা করছি আমের দাম বাড়বে। মিঠাপুকুরের বাগানগুলো থেকে সবে মাত্র ১০ থেকে ১৫ শতাংশ আম পাড়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
‘ভাবি আপনাকে দিয়ে ঘরের কাজ করান’, প্রশ্নের জবাবে যা বললেন শাহরুখ
রংপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল জানান, অনাবৃষ্টি হলেও এবার হাড়িভাঙ্গা আমের ফলন বেশ ভালো হয়েছে। ইতোমধ্যেই এ জেলার আম বাজারে উঠতে শুরু করেছে। প্রতিবছর জেলায় হাড়িভাঙ্গা আম চাষির সংখ্যা বাড়ছে। এর সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হচ্ছে বাড়ি-৪ আমের চাষও। আবহাওয়া ভালো থাকলে এবারও হাঁড়িভাঙ্গা আম বিক্রি করে প্রায় ২৫০-৩০০ কোটি টাকা আয় সম্ভাবনা আছে বাগান মালিকদের।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।